করোনার উৎস উহানের সেই বাজারে ডব্লিউএইচও বিশেষজ্ঞরা
বিশ্বের যে এলাকায় নভেল করোনাভাইরাস প্রথম শনাক্ত হয়েছিল, চীনের হুবেই প্রদেশের উহান শহরের সেই সি-ফুড মার্কেট পরিদর্শন করেছে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার (ডব্লিউএইচও) বিশেষজ্ঞ দল। এক বছরেরও বেশি সময় ধরে বন্ধ থাকা ওই মার্কেটে রোববার প্রায় এক ঘন্টা সময় ছিলেন ডব্লিউএইচওর বিশেষজ্ঞরা।
করোনাভাইরাসের প্রকৃত উৎস অনুসন্ধানে গত ১৪ জানুয়ারি চীনে পৌঁছায় বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার বিশেষজ্ঞ দল। সেখানে দু’সপ্তাহের বাধ্যতামূলক কোয়ারেন্টাইন শেষে তারা কাজ শুরু করেন। কাজের প্রথম পর্যায়ে উহানের হাসপাতাল এবং বিপণীবিতানগুলো পরিদর্শন করেছেন ডব্লিউএইচওর প্রতিনিধি দল।।
বিজ্ঞাপন
এরপর রোববার কড়া নিরাপত্তা বলয়ের মধ্যে সি-ফুড মার্কেটে যান তারা। এ সময় উপস্থিত সাংবাদিকরা তাদের বিভিন্ন প্রশ্ন করলেও প্রতিনিধি দলের কেউই তাতে সাড়া দেননি।
২০১৯ সালের ডিসেম্বরে চীনের উহান শহরে প্রথম নোভেল করোনাভাইরাসে আক্রান্ত রোগী শনাক্ত হয়। প্রথমে বলা হয়েছিল, উহান শহরের কেন্দ্রে অবস্থিত হুনান সি-ফুড মার্কেট থেকেই প্রথম করোনা সংক্রমণের ঘটনা ঘটে।
বিজ্ঞাপন
দেশটির সরকারি তথ্য অনুযায়ী, করোনায় আক্রান্ত হয়ে প্রথম যে ব্যক্তি মারা যান, তার ওই মার্কেটে নিয়মিত যাতায়াত ছিল। ৬১ বছর বয়স্ক ওই ব্যক্তি যখন মারা যান, তখনও এই রোগের নাম নির্দিষ্ট করা হয়নি। চীনের সরকারি বিবৃতিতে বলা হয়েছিল, ‘অপরিচিত ধরনের নিউমোনিয়ায়’ আক্রান্ত হয়ে মারা গেছেন তিনি।’
করোনায় সবথেকে ক্ষতিগ্রস্ত যুক্তরাষ্ট্রসহ বিভিন্ন দেশ এরপর থেকেই দাবি করে আসছে, চীন থেকে গোটা বিশ্বে প্রাণঘাতী এই ভাইরাস ছড়িয়ে পড়েছে। তবে এই অভিযোগ বরাবরই অস্বীকার করে আসছে চীন।
চীন সরকার বরাবরই এ বিষয়ে বলে আসছে, উহানেই যে করোনার উৎপত্তি এবং এখান থেকেই এর বিস্তার ঘটিয়েছে এমনটা ভাবার কারণ নেই। চীনের বাইরে থেকেই হয়তো মহামারি নভেল করোনাভাইরাসের উৎপত্তি হয়েছে। এটা হতে পারে স্পেন, ইতালি কিংবা যুক্তরাষ্ট্র।
দেশটির পক্ষ থেকে আরও দাবি করা হয়, আমদানিকৃত হিমায়িত খাবারের মাধ্যমে চীনে এই ভাইরাসের প্রাদুর্ভাব ঘটেছে। বিশেষজ্ঞরা অবশ্য বেইজিংয়ের এমন দাবি নিয়ে সন্দেহ প্রকাশ করেছেন।
করোনাভাইরাস নিয়ে এই পারস্পারিক দোষারোপের মধ্যেই সদ্যসমাপ্ত বছরের মে মাসে স্বাধীন ও নিরপেক্ষ ভাবে প্রাণঘাতী এই ভাইরাসের উত্স অনুসন্ধানের সিদ্ধান্ত নেয় বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা। সফরের গুরুত্ব তুলে ধরতে এক বার্তায় বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা জানায়, ‘চলমান মহামারি পরিস্থিতি থেকে উত্তরণে কিছু বিষয় সম্পর্কে আমাদের বিস্তারিত তথ্য প্রয়োজন। প্রথমত, কীভাবে এই মহামারি শুরু হলো এবং দ্বিতীয়ত, কোথা থেকে এবং কীভাবে সার্স-কোভ-২, অর্থাৎ করোনার জন্য দায়ী ভাইরাসটির উদ্ভব হলো।’
এই সফরের বিষয়ে বার্তায় আরো বলা হয়, ‘বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার এই প্রতিনিধি দলে রয়েছেন ১০ জন আন্তর্জাতিক খ্যাতিসম্পন্ন বিশেষজ্ঞ। উহানে বসবাসকারী মানুষ ও বিভিন্ন প্রাণীর ওপর মহামারি ও ভাইরাস সংক্রমণের প্রভাব এবং তাদের রক্তরস বা সিরাম বিষয়ে বিস্তারিত তথ্য সংগ্রহের পাশাপাশি করোনা সংক্রমণের জন্য দায়ী সার্স-কোভ-২ ভাইরাসের উদ্ভবের বিষয়ে বিস্তারিত অনুসন্ধান এই সফরের মূল উদ্দেশ্য।’
সূত্র: রয়টার্স
এমএমডব্লিউ