চাঁদ থেকে মাটি ও পাথর নিয়ে পৃথিবীতে ফিরেছে চীনা চন্দ্রযান চ্যাং’ই-৫। বৃহস্পতিবার রাত দেড়টায় চন্দ্রপৃষ্ঠের নমুনাসহ নভোযানটির একটি ক্যাপসুল চীনের উত্তরাঞ্চলের স্বায়ত্তশাসিত ইনার মঙ্গোলিয়ায় অবতরণ করে।

চীনের মহাকাশ গবেষণা সংস্থা চায়না ন্যাশনাল স্পেস অ্যাডমিনিস্ট্রেশন (সিএনএসএ) এর বরাত দিয়ে সফল অভিযানের পর নভোযানটির পৃথিবীতে ফিরে আসার এই তথ্য জানিয়েছে দেশটির সরকারি বার্তা সংস্থা সিনহুয়া।

চীনের জন্য এটা সত্যিই তাৎপর্যপূর্ণ। একদিকে বিশ্বে চীনের মর্যাদা বৃদ্ধি, অন্যদিকে সমগ্র মানবজাতির জন্য একটি বড় পদক্ষেপ হিসেবে ভূমিকা রেখেছে এই অভিযানের সাফল্য

চীনের প্রেসিডেন্ট

সিএনএসএ’এর পরিচালক ঝ্যাং কেজিয়ান তাদের এই চন্দ্রাভিযানকে সফল বলে ঘোষণা করছেন।

সফল চন্দ্রাভিযান শেষে চ্যাং’ই-৫ পৃথিবীতে ফেরার পর চীনের প্রেসিডেন্ট শি জিনপিং অভিযানের সঙ্গে সংশ্লিষ্ট সবাইকে অভিনন্দন জানিয়ে বলেছেন, ‘চীনের জন্য এটা সত্যিই তাৎপর্যপূর্ণ। একদিকে বিশ্বে চীনের মর্যাদা বৃদ্ধি, অন্যদিকে সমগ্র মানবজাতির জন্য একটি বড় পদক্ষেপ হিসেবে ভূমিকা রেখেছে এই অভিযানের সাফল্য’।

১৯৬০ এবং ’৭০ এর দশকে যুক্তরাষ্ট্রের অ্যাপোলো এবং সোভিয়েত ইউনিয়নের লুনা ২৪ অভিযানের পর বিশ্বের তৃতীয় দেশ হিসেবে চাঁদের নমুনা সংগ্রহ করল চীন।

পৃথিবীতে অবতরণের কিছুক্ষণ পরই চ্যাং’ই-৫ এর ক্যাপসুলটির কাছে পৌঁছে যায় সিএনএসএ উদ্ধারকারী দল। হেলিকপ্টারে ইনফ্রারেড ক্যামেরায় তুষারাচ্ছাদিত তৃণভূমিতে ক্যাপসুলটিকে শনাক্ত করতে সক্ষম হন তারা।

বিজ্ঞান বিষয়ক সাময়িকী ‘নেচার’ এর তথ্য অনুযায়ী মসৃন লাভায় গঠিত চাঁদের এই এলাকাটিতে এর আগে কোনো অভিযান পারিচালিত হয়নি।

গত নভেম্বরের শেষের দিকে চন্দ্র অভিযান শুরুর উদ্যোগ নেয় চীন। চ্যাং’ই-৫ পাঠানো ছিল এই অভিযানের প্রধান লক্ষ্য। এর আগে গত ১ ডিসেম্বর চীনের স্থানীয় সময় রাত ১১টা ১১ মিনিটে চন্দ্রযানটি চাঁদের নিকট প্রান্তের ‘ঝড়ের মহাসাগর’ বলে পরিচিত এলাকার উত্তরে অবতরণ করেছিল।

চান্দ্রযানটি বেশ কয়েকটি অংশ বা উপাদানের সমন্বয়ে তৈরি করা হয়েছিল। চাঁদের কক্ষপথে পৌঁছানোর পর সেগুলো আলাদা হয়ে যায় এবং মূল চন্দ্রযানের তিনটি অংশের মধ্যে একটি চাঁদে অবতরণ করে।

চন্দ্রপৃষ্ঠের উপরিতল এবং মাটি খুঁড়ে প্রায় দুই কেজি (সাড়ে চার পাউন্ড) পাথর ও মাটির নমুনা এনেছে চ্যাং’ই-৫ এর ক্যাপসুল। এই নমুনাগুলো আনা হয়েছে চাঁদের ওশোনাস প্রোসেলারাম (Oceanus Procellarum) বা ‘ঝড়ের সমুদ্র’ (Ocean of Storms) এলাকা থেকে।

বিজ্ঞান বিষয়ক সাময়িকী ‘নেচার’ এর তথ্য অনুযায়ী মসৃন লাভায় গঠিত চাঁদের এই এলাকাটিতে এর আগে কোনো অভিযান পারিচালিত হয়নি।

সূত্র: আলজাজিরা, বিবিসি 

এসএমডব্লিউ/এএস