নতুন করে করোনাভাইরাসের উত্থানের মুখে খ্রিষ্ট ধর্মাবলম্বীদের প্রধান ধর্মীয় উৎসব ক্রিসমাস ঘিরে ইউরোপের বিভিন্ন দেশ কঠোর করোনা বিধি-নিষেধ আরোপ করছে। মঙ্গলবার থেকে ইউরোপের বেশ কয়েকটি দেশে নতুন এই বিধি-নিষেধ কার্যকর হতে যাচ্ছে।

করোনার প্রকোপ বাড়তে থাকায় নেদারল্যান্ডস পাঁচ সপ্তাহের লকডাউন জারি করেছে। দেশটিতে অপ্রয়োজনীয় দোকানপাট, থিয়েটার এবং ব্যায়ামাগার এই লকডাউনের সময় বন্ধ থাকবে। 

ইউরোপের দেশগুলোর মধ্যে জার্মানি সবচেয়ে কঠোর লকডাউনের কবলে যাচ্ছে বুধবার। দেশটিতে দৈনিক করোনাভাইরাস সংক্রমণের নতুন নতুন রেকর্ড তৈরি হওয়ায় সরকার এই লকডাউনের সিদ্ধান্ত নিয়েছে।

ফ্রান্স লকডাউন প্রত্যাহার করে নিলেও সংক্রমণের হার বৃদ্ধি পাওয়ায় ব্যাপকমাত্রায় করোনা বিধি-নিষেধ বলবৎ থাকবে বলে জানিয়েছে। 

করোনা মহামারির পুরো সময়জুড়ে ইউরোপে সংক্রমণের সর্বোচ্চ রেকর্ড হয়েছে ইতালি, স্পেন, ফ্রান্স এবং যুক্তরাজ্যে। গত কয়েক সপ্তাহ ধরে এই মহাদেশের দেশগুলোর সরকার বড়দিনের ছুটির সময় বিধি-নিষেধ শিথিল করবে কিনা সেই কঠিন প্রশ্নের মুখোমুখি হয়েছে।

সম্প্রতি ইউরোপের কিছু দেশ করোনার ঢেউ বৃদ্ধি পাওয়ায় বিধি-নিষেধ শিথিল করার পরিকল্পনা বাতিলে বাধ্য হয়েছে।

করোনা মহামারি শুরু হওয়ার পর এবার প্রথম সবচেয়ে কঠোর বিধি-নিষেধ সম্বলিত পাঁচ সপ্তাহের লকডাউনে চলে গেছে নেদারল্যান্ডস। করোনার প্রকোপ ঠেকাতে জারিকৃত এই লকডাউনে অপ্রয়োজনীয় দোকান-পাট, সিনেমা হল, সেলুন, ব্যায়ামাগারের পাশাপাশি স্কুলও বন্ধ থাকবে দেশটিতে।

দেশটির নাগরিকদের আগামী বছরের মার্চের মাঝামাঝি পর্যন্ত অপ্রয়োজনীয় বিদেশ ভ্রমণ থেকে বিরত থাকতে বলা হয়েছে। তবে ক্রিসমাসের আগে মাত্র তিনদিনের জন্য করোনা বিধি-নিষেধ হালকা শিথিল করা হবে; সেই সময় ডাচ পরিবারগুলোতে তিনজনের পরিবর্তে দু’জন অতিথি আসার অনুমতি পাবেন। 

এদিকে, বুধবার থেকে স্কুল এবং অপ্রয়োজনীয় দোকান-পাট বন্ধ রাখার নির্দেশনা জারি করেছে জার্মানি। এই দেশটিতে গত নভেম্বর থেকেই রেস্টুরেন্ট, বার, অবকাশযাপন কেন্দ্র বন্ধ রয়েছে। 

জার্মানিতে নতুন করে লকডাউন শুরু হবে আগামী ১৬ ডিসেম্বর; চলবে ১০ জানুয়ারি পর্যন্ত। তবে ক্রিসমাস উদযাপনের জন্য হালকা শিথিলতা এনে পরিবারগুলোতে সর্বোচ্চ চারজন অতিথি আসার অনুমতি পাবেন। 

লকডাউন প্রত্যাহার করে নিলেও ফ্রান্সের সরকার বলেছে, করোনার বিধি-নিষেধে শিথিলতা আনার জন্য সংক্রমণ কমার হার এখনও পর্যাপ্ত নয়। যে কারণে থিয়েটার, সিনেমা হল, বার এবং রেস্টুরেন্ট বন্ধই থাকবে। এর পাশাপাশি দেশজুড়ে স্থানীয় সময় রাত ৮টা থেকে সকাল ৬টা পর্যন্ত কারফিউ বলবৎ থাকবে। তবে ক্রিসমাসের সন্ধ্যায় কারফিউ প্রত্যাহার করে নেয়া হলেও নববর্ষের সন্ধ্যায় তা কার্যকর থাকবে।
 
ইতালিতে করোনায় দৈনিক মৃত্যুর সংখ্যা প্রায় ৫০০ জনের কাছাকাছি পৌঁছেছে। ক্রিসমাস ঘিরে দেশটির সরকার কঠোর করোনা বিধি-নিষেধ আরোপের বিষয়ে ভাবছে। স্পেনে করোনা সংক্রমণ বৃদ্ধি পাওয়ায় দেশটির শীর্ষ স্বাস্থ্য কর্মকর্তা ফার্নান্দো সিমোন ক্রিসমাসে নাজুক পরিস্থিতি তৈরি হতে পারে বলে সতর্ক করে দিয়েছেন। দেশটির সরকার আগামী ২৩ ডিসেম্বর থেকে ৬ জানুয়ারি পর্যন্ত বেশ কিছু করোনা বিধি নির্ধারণ করেছে।  

সূত্র: বিবিসি।

এসএস