হাসপাতালে মারা যাওয়া করোনা রোগী: সংগৃহীত ছবি

কোভিড-১৯ রোগে আক্রান্ত হয়ে যুক্তরাষ্ট্রে গত ২৪ ঘণ্টায় ৩ হাজার ৭০০ জনের মৃত্যু হয়েছে, যা এখন পর্যন্ত একদিনে সর্বোচ্চ। এ নিয়ে দেশটিতে মোট মৃতের সংখ্যা দাঁড়ালো ৩ লাখ ৭ হাজার ২৯১ জনে। 

একই সময়ে নতুন করে করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হয়েছেন আড়াই লাখেরও বেশি মানুষ। মোট আক্রান্তের সংখ্যা ১ কোটি ৬৯ লাখ ৫৯ হাজার ২৬৭, যা দেশটির মোট জনসংখ্যার ৫ শতাংশ।

বৃহস্পতিবার (১৭ ডিসেম্বর) কাতারভিত্তিক সংবাদ মাধ্যম আল-জাজিরার এক প্রতিবেদন থেকে এ তথ্য জানা গেছে।

মার্কিন স্বাস্থ্য ও মানবসেবা অধিদফতরের তথ্য অনুযায়ী, দেশটিতে গত এক মাসের বেশি সময় ধরে কোভিড সংক্রমণের সংখ্যা ফের বাড়ছে। বর্তমানে ১ লাখ ১৩ হাজারেরও বেশি মানুষ ভাইরাসে আক্রান্ত হয়ে হাসপাতালে ভর্তি।

এদিকে মহামারি করোনা থেকে রক্ষা পেতে শুক্রবার (১৮ ডিসেম্বর) টিকা নেওয়ার ঘোষণা দিয়েছেন মার্কিন ভাইস প্রেসিডেন্ট মাইক পেন্স। জনগণকে উদ্ধুদ্ধ করতে জনসম্মুখে এ টিকা নেওয়ার কথা জানিয়েছেন তিনি। 

আগামী সপ্তাহে এ টিকা নেওয়ার কথা জানিয়েছে নবনির্বাচিত মার্কিন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন।

ভাইরাস মোকাবিলায় যুক্তরাষ্ট্রে এরইমধ্যে ভ্যাকসিনের প্রয়োগ শুরু হয়েছে। গত সোমবার দেশটির প্রথম ব্যক্তি হিসেবে ফাইজার-বায়োএনটেকের উদ্ভাবিত করোনার টিকা নিয়েছেন নিউইয়র্কের এক নার্স। 

আবার বুধবার (১৬ ডিসেম্বর) মডার্নার উদ্ভাবিত করোনাভাইরাসের টিকা কার্যকর বলে জানিয়েছে যুক্তরাষ্ট্রের খাদ্য ও ওষুধ প্রশাসন (এফডিএ)। শিগগিরই এই টিকার ব্যবহারের জন্য অনুমোদন দেওয়া হবে বলে জানিয়েছে এফডিএ।

আগামী মার্চের মধ্যে দেশটির ১০ কোটি মানুষকে কোভিড-১৯ টিকা দেওয়া হবে বলে জানিয়েছেন যুক্তরাষ্ট্রের কোভিড-১৯ টিকাদান কর্মসূচির প্রধান উপদেষ্টা ডা. মোনচেপ স্লাউই। তবে মার্কিন রোগ নিয়ন্ত্রণ ও প্রতিরোধ কেন্দ্রের (সিডিসি) পরিচালক ডা. রবার্ট রেডফিল্ড এর আগেই এক সতর্কবার্তায় বলেছিলেন, ভ্যাকসিন হাতে আসার আগেই দেশের স্বাস্থ্যসেবা ব্যবস্থায় ধস নামতে পারে।

করোনাভাইরাসের নতুন প্রজাতি নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করে রেডফিল্ড আরও উল্লেখ করেন, সংক্রমণের হার, মৃত্যু, হাসপাতালে ভর্তির চিত্র দেখলে বোঝা যায়, নতুন প্রজাতিটি আগের তুলনার আরও বেশি মারাত্মক হতে পারে।

চলতি মাসের শুরুতে, ইউনিভার্সিটি অব ওয়াশিংটনের ইনস্টিটিউট ফর হেলথ মেট্রিকস অ্যান্ড ইভাল্যুয়েশন তাদের এক পরিসংখ্যানে জানিয়েছিল, সামাজিক দূরত্ব নিশ্চিত ও সঠিকভাবে মাস্ক পরিধানের মাধ্যমে স্বাস্থ্য সুরক্ষা না মানলে আগামী মার্চের মধ্যে আমেরিকায় সাড়ে ৪ লাখ মানুষের মৃত্যু হতে পারে।

গত বছরের ডিসেম্বরে চীনের উহানে প্রথম করোনাভাইরাস শনাক্ত হয়। চীনে করোনায় প্রথম কোনো রোগীর মৃত্যু হয় চলতি বছরের ৯ জানুয়ারি। তবে সে ঘোষণা আসে ১১ জানুয়ারি। চলতি বছরের ১৩ জানুয়ারি চীনের বাইরে প্রথম করোনা রোগী শনাক্ত হয় থাইল্যান্ডে। পরে ভাইরাসটি বিশ্বের ২২০টি দেশ ও অঞ্চলে ছড়িয়ে পড়ে।


এমএইচএস/জেডএস