শতবসন্তের জীবন শেষ হলো করোনায়
মহামারিকালে নিজের শততম জন্মদিনের আগে বাড়ির সামনের বাগানে হেঁটে ব্রিটেনের জাতীয় স্বাস্থ্য সেবা বিভাগের (এনএইচএস) জন্য কোটি কোটি ডলার চাঁদা তুলে বিশ্বজুড়ে প্রশংসা কুড়ানো ক্যাপ্টেন স্যার টম মুর মারা গেছেন।
গত সপ্তাহে করোনাভাইরাস পজিটিভ হিসেবে শনাক্ত হন তিনি। এরপর শ্বাস নিতে কষ্ট শুরু হয় তার। রোববার শতবর্ষী টম মুরকে ভর্তি করা হয়েছিল বেডফোর্ড হাসপাতালে। মঙ্গলবার সেখানেই শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করেন তিনি।
বিজ্ঞাপন
ক্যাপ্টেন মুরের কন্যা হান্নাহ ইনগ্রাম-মুর জানিয়েছেন, বিগত কয়েক সপ্তাহ ধরে তার বাবার নিউমোনিয়ার চিকিৎসা চলছিল। এরমধ্যে গত সপ্তাহে তার দেহে মহামারি করোনার সংক্রমণ শনাক্ত হয়েছিল।
যৌথ বিবৃতিতে ক্যাপ্টেনের দুই কন্যা ইনগ্রাম মুর এবং লুসি টেইক্সেরিয়া লিখেছেন, ‘গভীর দুঃখের সঙ্গে আমরা জানাচ্ছি যে, আমাদের বাবা ক্যাপ্টেন স্যার টম মুর মারা গেছেন।
বিজ্ঞাপন
‘আমরা খুবই ভাগ্যবান যে তার জীবনের শেষ মুহূর্তে আমরা তার পাশে ছিলাম। ঘণ্টার পর ঘণ্টা আমরা আড্ডা দিয়েছি, কথা বলেছি। আলোচনা করেছি আমাদের অসাধারণ মা ও আমাদের শৈশব নিয়ে। আমরা একসঙ্গে যেমন হেঁসেছি, তেমনি একসঙ্গে কেঁদেছিও।’
বিবিসি ক্যাপ্টেন মুরের মৃত্যুর খবর জানিয়ে লিখেছে, মহামারি লকডাউন চলাকালে হেঁটে হেঁটে ব্রিটিশ সেনাবাহিনীর সাবেক এই কর্মকর্তা এনএইচএস-এর জন্য প্রায় তিন কোটি ৩০ লাখ পাউন্ড অর্থ সংগ্রহ করেন।
প্রাথমিকভাবে তিনি হাজার পাউন্ড অর্থ সংগ্রহের লক্ষ্য নিলেও অল্প কয়েকদিনের মাথায় লাখ, তারপর লাখ থেকে কোটি পাউন্ড জমা হয় তার তহবিলে। মুহূর্তেই তিনি আন্তর্জাতিক গণমাধ্যমগুলোতে হিরো হিসেবে আবির্ভূত হন।
লাখ লাখ মানুষ সোশ্যাল মিডিয়ায় শতবর্ষী এই মানুষটির ভূয়সী প্রশংসা করেন। আন্তর্জাতিক গণমাধ্যমগুলোতে সাক্ষাৎকার দেওয়ার হিড়িক পড়ে যায় তার। তাকে ‘নাইট’ উপাধি দেওয়ার দাবি উঠতে শুরু করলে পরে তিনি সেই উপাধি পেয়েও যান।
ব্রিটিশ যুবরাজ উইলিয়াম তার প্রশংসা করতে গিয়ে তাকে ‘ওয়ান-ম্যান ফান্ডরেইজিং মেশিন’ বলে খেতাব দিয়েছিলেন। যুবরাজ ও তার স্ত্রী কেট ক্যাপ্টেন মূরের তহবিলে চাঁদাও দিয়েছিলেন।
ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রী বরিস জনসন তখন বলেন, সাবেক এই সৈনিককে কীভাবে সম্মানিত করা যায়, তার উপায় খুঁজছেন তিনি।
এএস