মিয়ানমারে সামরিক অভ্যুত্থানের মাধ্যমে ক্ষমতা দখলের নিন্দা জানিয়ে দেওয়া জাতিসংঘের একটি বিবৃতি আটকে দিয়েছে চীন। সোমবার দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ার এই দেশটিতে সেনা অভ্যুত্থানের মাধ্যমে ক্ষমতা দখল করে সেনাবাহিনী। প্রেসিডেন্ট উইন মিন্ট, অং সান সু চিসহ গ্রেপ্তার করা হয় অনেক শীর্ষ নেতাকে।

এরপর অভ্যুত্থানকারীরা একটি সুপ্রিম কাউন্সিল গঠন করে। এটা মন্ত্রিসভার থেকেও বেশি ক্ষমতা চর্চা করবে। মঙ্গলবার (২ ফেব্রুয়ারি) মিয়ানমারে সামরিক অভ্যুত্থান নিয়ে জরুরি বৈঠকে বসে জাতিসংঘ নিরাপত্তা পরিষদ। কিন্তু চীনের বিরোধীতার কারণে সংস্থাটি এই ইস্যুতে কোনো যৌথ বিবৃতি দিতে ব্যর্থ হয়।

বিবিসি জানিয়েছে, মিয়ানমারে সামরিক অভ্যুত্থানের মাধ্যমে ক্ষমতা দখলের নিন্দা জানাতে যৌথ বিবৃতি দিতে চীনের সমর্থন প্রয়োজন ছিল। কিন্তু চীন সমর্থন না দেওয়ায় তা হয়নি। কারণ জাতিসংঘের নিরাপত্তা পরিষদের স্থায়ী সদস্য হিসেবে চীনের ভেটো দেওয়ার ক্ষমতা রয়েছে।

মঙ্গলবারের ওই বৈঠকের আগে মিয়ানমারে সামরিক অভ্যুত্থানের কড়া সমালোচনা করেছেন দেশটিতে নিযুক্ত জাতিসংঘের বিশেষ দূত ক্রিস্টিন শ্রেনার। তিনি বলেন, গত নভেম্বরে অনুষ্ঠিত নির্বাচনে স্পষ্টভাবেই নিরঙ্কুশ বিজয় পেয়েছে অং সান সু চির দল ন্যাশনাল লীগ ফর ডেমোক্র্যাসি (এনএলডি)।

এদিকে সামরিক অভ্যুত্থানের প্রতিবাদে ধর্মঘটে নামার পরিকল্পনা করছেন মিয়ানমারের চিকিৎসকরা। প্রেসিডেন্ট উইন মিন্ট, স্টেট কাউন্সিলার অং সান সু চিসহ শীর্ষ নেতাদের আটক ও সেনাবাহিনীর ক্ষমতা দখলের প্রতিবাদে দেশটির চিকিৎসকরা বুধবার (৩ ফেব্রুযারি) থেকে ধর্মঘটে নামছেন বলে জানিয়েছে বিবিসি।

সংবাদমাধ্যমটি জানিয়েছে, সু চির মুক্তির দাবিতে বুধবার (৩ ফেব্রুয়ারি) থেকে কাজ বন্ধ করে দেবেন বলে জানিয়েছেন মিয়ানমারের সরকারি হাসপাতালের চিকিৎসকরা। এমনকি সেনা অভ্যুত্থানের প্রতিবাদে চাকরি থেকে পদত্যাগও করেছেন একজন চিকিৎসক।

পদত্যাগ করা ওই চিকিৎসকের নাম ড. নাইং তু অং। ৪৭ বছর বয়সী এই অ্যানেস্থেওলজিস্ট মিয়ানমারের সাগাইয়াং অঞ্চলের মংগুয়া হাসপাতালে কর্মরত ছিলেন। বিবিসিকে তিনি বলেন, ‘আমি এমন কোনো সামরিক শাসকের অধীনে চাকরি করতে পারবো না যারা দেশ ও দেশের মানুষের কথা চিন্তা করে না। এ জন্যই আমি পদত্যাগ করেছি। পদত্যাগ করা মাধ্যমেই আমার জবাবটা তাদেরকে আমি দিয়েছি।’

সূত্র: বিবিসি

টিএম