মিয়ানমারে সেনা অভ্যুত্থানের প্রতিবাদে জাপানে হাজারো বার্মিজ বিক্ষোভ করছেন। বুধবার টোকিওতে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সামনে বিক্ষোভকারীরা জড়ো হন। তাদের দাবি, মিয়ানমারের অভ্যুত্থানের বিরুদ্ধে টোকিও যেন তাদের মিত্র দেশগুলোর মতো কঠোর অবস্থান নেয়। 

রয়টার্স লিখেছে, লাল কাপড় পরিহিত এসব বিক্ষোভকারীর হাতে ওই সময় মিয়ানমারের ক্ষমতাচ্যুত ও গৃহবন্দি নেত্রী অং সান সু চির ছবি দেখা যায়। টোকিওতে সরকারি ভবন ঘিরে এসব বিক্ষোভকারী দীর্ঘ লাইন দিয়ে অবস্থান নেন। সাধারণ টোকিওর ওই এলাকায় এমন বিক্ষোভ প্রদর্শনের ঘটনা বিরল।

উপস্থিত জনতা ঐক্যবদ্ধভাবে ‘অং সান সু চিকে মুক্ত করে দাও, মিয়ানমারকে মুক্ত করে দাও’ এমন স্লোগান দিতে থাকেন। বিক্ষোভকারীদের পক্ষ থেকে এ সময় জাপানের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের কর্মকর্তাদের একটি বিবৃতি দেওয়া হয়; যেখানে মিয়ানমারে নির্বাচিত সরকারকে আবারও ক্ষমতায় ফেরানোর টোকিওর প্রতি ‘রাজনৈতিক, কূটনৈতিক এবং অর্থনৈতিক শক্তি’ সহ সব ধরনের শক্তি চাপ প্রয়োগের আহ্বান জানানো হয়। 

এই বিক্ষোভ কর্মসূচির আয়োজন করেছে ‘ইউনিয়ন অব মিয়ানমার সিটিজেন অ্যাসোসিয়েশন’ নামের একটি নাগরিক সংগঠন। তারা বলছে, অভ্যুত্থানে ক্ষমতা দখলে নেওয়া সামরিক জান্তা সরকারকে জাপানের সমর্থন দেওয়া উচিত হবে না। আয়োজকরা বলছেন, বুধবারের বিক্ষোভে আনুমানিক ৩ হাজার মানুষ অংশ নেন। 

টোকিওতে একটি রেস্তোরাঁয় কাজ করেন ৫০ বছর বয়সী মাথিদা। তিনি রয়টার্সকে বলেন, মিয়ানমারে গণতন্ত্র ফিরিয়ে আনার জন্য জাপান সরকারকে আরও বেশি কিছু করার চাপ দিতে তিনি বিক্ষোভে অংশ নিয়েছেন।

পুরো নাম না জানিয়ে এই বার্মিজ নাগরিক বলেন, ‘আমরা আমাদের নেতা ও আমাদের মা অং সান সু চি’কে মুক্ত দেখতে চাই। সামরিক বাহিনী কোনোভাবেই সরকার নয়। আমরা এর প্রতিবাদ জানাতে জড়ো হয়েছি।’

জাপান-মিয়ানমার দীর্ঘদিনের মিত্র। মিয়ানমারের অন্যতম দাতা টোকিও। সাম্প্রতিক বছরগুলোতে জাপানের বড় বড় কোম্পানিগুলো মিয়ানমারে নিজেদের ব্যবসা প্রসারিত করার জন্য মরিয়া। দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ার দেশগুলোর মধ্যে মিয়ানমারকে সর্বশেষ একটি উদীয়মান বাজার হিসেবে বিবেচনা করছে তারা।   

সোমবার ভোরে মিয়ানমার সেনাবাহিনী দেশটির ক্ষমতা দখলে নিয়েছে। গত নভেম্বরে মিয়ানমারের সাধারণ নির্বাচনে অং সান সু চি’র দল এনএলডি বিপুল সংখ্যাগরিষ্ঠতা নিয়ে জয় পায়। কোন প্রমাণ ছাড়াই নির্বাচনে কারচুপির অভিযোগ তুলে এই অভ্যুত্থান। এতে আবারও দেশটিতে গণতান্ত্রিক প্রক্রিয়া বাধাগ্রস্ত হয়েছে।  

এএস