দেশের পররাষ্ট্র মন্ত্রণলয়ের দায়িত্ব নেওয়ার প্রায় ১০ দিন পর প্রথমবার সৌদি পররাষ্ট্রমন্ত্রী ফয়সার বিন ফারহান আল সৌদকে টেলিফোন করে সৌজন্য বিনিময় করেছেন যুক্তরাষ্ট্রের নতুন পররাষ্ট্রমন্ত্রী অ্যান্থনি ব্লিনকেন। শনিবার সকালে তিনি ফোন করেন বলে নিশ্চিত করেছে সৌদি আরবের রাষ্ট্র নিয়ন্ত্রিত বার্তা সংস্থা এসপিএ।

এসপিএ জানিয়েছে, ফোনে অ্যান্থনি ব্লিনকেন এবং ফয়সাল বিন ফারহান আল সৌদের মধ্যে সৌজন্য বিনিময়মূলক কথাবার্তা হয়েছে। মার্কিন পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের নতুন মন্ত্রীকে অভিনন্দন জানিয়ে সৌদি পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেছেন, মধ্যপ্রাচ্য ও উপসাগরীয় অঞ্চলের সংকটগুলো মোকাবিলা এবং এই দু’অঞ্চলে শান্তি প্রতিষ্ঠায় বাইডেন প্রশাসনের সঙ্গে কাজ করতে আগ্রহী সৌদি আরব।

প্রথম মধ্যপ্রাচ্যের যে দেশটিকে টেলিফোন করে শুভেচ্ছা বিনিময় করেছিলেন ব্লিনকেন সেটি হলো উপসাগরীয় দেশ সংযুক্ত আরব আমিরাত। গত বৃহস্পতিবার আমিরাতের পররাষ্ট্রমন্ত্রীকে ফোন করেছিলেন তিনি।

সাবেক মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের সময় তৎকালীন মার্কিন প্রশাসনের সঙ্গে বেশ দহরম মহরম সম্পর্ক গড়ে উঠেছিল সৌদি আরবের। মধ্যপ্রাচ্য বিষয়ক বিভিন্ন নীতি গ্রহণের বিষয়ে ইসরায়েলের পাশাপাশি সৌদি আরবকেও গুরুত্ব দিতেন ডোনাল্ড ট্রাম্প।

তবে ট্রাম্প প্রশাসন সময়কার কয়েকটি ঘটনা মধ্যপ্রাচ্যের স্থিতিশীলতার জন্য হুমকি রূপে দেখা দেয়। এগুলোর মধ্যে উল্লেখযোগ্য হল- ২০১৮ সালে ইরানের সঙ্গে জাতিসংঘের ছয় স্থায়ী সদস্যরাষ্ট্রের পরমাণু চুক্তি জ্যাকোপা থেকে কোনও যৌক্তিক কারণ ছাড়াই যুক্তরাষ্ট্রের বেরিয়ে যাওয়া, ২০১৭ সালে উপসাগরীয় দেশ কাতারের ওপর সৌদি আরবসহ মধ্যপ্রাচ্যের কয়েকটি দেশের কূটনৈতিক ও বাণিজ্যিক নিষেধাজ্ঞা দেওয়া এবং ২০১৪ সালে ইয়েমেনে ইরান সমর্থিত হুথি বিদ্রোহীদের দমন ও ইয়েমেন সরকারকে সহযোগিতার নামে দেশটিতে সৌদি আরব ও সংযুক্ত আরব আমিরাতের সেনা অভিযান চালানো।

আন্তর্জাতিক রাজনীতি বিশ্লেষকদের অনেকেই মনে করেন, মধ্যপ্রাচ্যের আপাত ভারসাম্যপূর্ণ পরিস্থিতিকে বিপর্যয়ের মুখে ফেলার জন্য ট্রাম্প প্রশাসনের খামখেয়ালীপূর্ণ সিদ্ধান্ত বহুলাংশে দায়ী।

এদিকে আন্তর্জাতিক রাজনীতির অনেক হিসেব ওলটপালট করে দিয়েছে যুক্তরাষ্ট্রের সর্বশেষ প্রেসিডেন্ট নির্বাচন। গত ২০ জানুয়ারি দেশের প্রেসিডেন্টের দায়িত্ব নেওয়া জো বাইডেন ইতোমধ্যে স্পষ্ট করেছেন যে তার পূর্বসূরী ডোনাল্ড ট্রাম্পের পথে হাঁটবেন না তিনি।

চলতি সপ্তাহে ইয়েমেনে চলা গৃহযুদ্ধ ও সংঘাত বন্ধ করতে সৌদি আরব ও সংযুক্ত আরব আমিরাতের কাছে অস্ত্র বিক্রি স্থগিতের নির্দেশ দিয়েছেন বাইডেন। কূটনৈতিক তৎপরতা ও আলাপ আলোচনার মাধ্যমে ইয়েমেন সংকটের সমাধান করতে ইতোমধ্যে এ বিষয়ক একজন দূতও নিয়োগ দিয়েছেন তিনি। পাশাপাশি মানবাধিকার রক্ষায় সৌদি আরবকে আরো যত্নশীল হওয়ার আহ্বান জানিয়েছেন যুক্তরাষ্ট্রের নতুন প্রেসিডেন্ট।

সূত্র: জেরুজালেম পোস্ট

এসএমডব্লিউ