ইন্দোনেশিয়ায় বাঘের আক্রমণে চিড়িয়াখানাকর্মী নিহত
ইন্দোনেশিয়ার বোর্নিও দ্বীপের একটি চিড়িয়াখানা থেকে বিপন্ন প্রজাতির দুটি সুমাত্রা বাঘিনী পালিয়ে যাওয়ার ঘটনা ঘটেছে। তবে পালিয়ে যাওয়ার আগে ওই দুই বাঘের হামলায় চিড়িয়াখানার এক কর্মী নিহত হয়েছেন।
ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম বিবিসি জানিয়েছে, কয়েকদিন ধরে ভারী বৃষ্টিপাতের কারণে ভূমিধ্বস হয়। এতে ওই চিড়িয়াখানার বাঘের খাঁচাটি ব্যাপকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হয়। ভূমিধ্বসে নিরাপত্তা বেড়া ভেঙে পড়ায় শুক্রবার (৫ ফেব্রুয়ারি) ১৮ মাস বয়সী ওই বাঘ দুটি পালিয়ে যায়। এরপর শুক্রবার গভীর রাতে বাঘ দুটি পালিয়ে যাওয়ার পর চিড়িয়াখানার ৪৭ বছর বয়সী এক কর্মীকে বাঘের খাঁচার কাছে মৃত অবস্থায় পাওয়া যায়।
বিজ্ঞাপন
বার্তাসংস্থা এএফপি জানিয়েছে, নিহত ওই কর্মীর শরীরে কামড়ের ক্ষত এবং আঁচড়ের চিহ্ন পাওয়া গেছে। এছাড়া খাঁচার কাছাকাছি একটি উটপাখি এবং একটি বানরসহ বেশ কয়েকটি প্রাণীও মৃত অবস্থায় পাওয়া যায়।
তবে শনিবার ট্রাঙ্কুইলাইজার (চেতনানাশক) তীর ছুড়ে একটি বাঘকে ধরা সম্ভব হয়েছে। কিন্তু অন্য বাঘটি আক্রমণাত্মক আচরণ করায় বাধ্য হয়ে তাকে গুলি করে হত্যা করা হয়। এর আগে ওই বাঘটিকেও চেতনানাশক তীর ছুড়ে শান্ত করার চেষ্টা করা হলেও সেই চেষ্টা ব্যর্থ হয়।
বিজ্ঞাপন
এর আগে পলাতক বাঘ দুটিকে ধরতে দেশটির পশ্চিম কালিমন্টানের সিঙকাওয়াং শহরে বড় ধরনের অভিযান পরিচালনা করা হয়। একইসঙ্গে কাছাকাছি থাকা আকর্ষণীয় পর্যটন স্পটগুলো বন্ধ রাখার এবং লোকজনকে বাড়িতে থাকার নির্দেশ দেয় পুলিশ।
কর্মকর্তারা বলছেন, দুটি প্রাণীকে জীবন্ত ধরার আশা করলেও আক্রমণাত্মক আচরণ করায় একটি বাঘের ওপর তারা গুলি চালাতে বাধ্য হন। স্থানীয় সংরক্ষণ সংস্থার প্রধান সাদাতা নূর আদিরামন্ত এএফপি’কে বলেছেন, ‘আমরা প্রথমে একটি চেতনানাশক বন্দুক দিয়ে চেষ্টা করেছি কিন্তু এটি কাজ করেনি, তাই আমরা বাঘটিকে গুলি করতে বাধ্য হই। কারণ বাঘটি খুবই আক্রমণাত্মক আচরণ করেছিল।’
তিনি বলেন, ‘আমরা ভয় পেয়েছিলাম, এটি হয়তো আবারও পালিয়ে আশেপাশের এলাকায় চলে যাবে। যদিও আমরা বাঘটিকে জীবিত অবস্থায় ধরার জন্য যথাসাধ্য চেষ্টা করেছি, তবে আমাদের অগ্রাধিকার হল মানুষের নিরাপত্তা নিশ্চিত করা।’
এদিকে বেঁচে যাওয়া বাঘটিকে চিড়িয়াখানায় ফিরিয়ে নিতে একটি খাঁচা প্রস্তুত করা হয়েছে। সেটার ভেতরে এমন অনেক প্রাণী রাখা হয়েছে যেন বাঘটি সেগুলো শিকার করে খাওয়ার লোভে ভেতরে প্রবেশ করে।
চিড়িয়াখানার চারপাশে ঘন জঙ্গলে পলাতক বাঘ দুটিকে খুঁজে বের করতে ড্রোনও ব্যবহার করা হয়েছিল। স্থানীয় পুলিশ প্রধান সিএনএন ইন্দোনেশিয়াকে বলেছেন, ‘বাঘ দুটিকে খুঁজে পেতে আমাদের বেশ কষ্ট হয়েছিল।’
তবে কর্মকর্তারা চেতনানাশক তীর ছুড়ে একটি বাঘকে জীবিত অবস্থায় ধরতে সক্ষম হন। প্রাণী বিশেষজ্ঞরা এখন চিড়িয়াখানায় নজরদারি করছেন।
বিবিসি জানিয়েছে, সুমাত্রা প্রজাতির বাঘ এখন বিপন্ন হয়ে পড়েছে। বর্তমানে বনের ভেতরে এই প্রজাতির বাঘের সংখ্যা ৪০০টিরও কম করে ধারণা করা হচ্ছে।
সূত্র: বিবিসি বাংলা
টিএম