শিশু সামিউল হত্যা রায়

মায়ের অনৈতিক সম্পর্ক দেখে ফেলে এবং বাবাকে বলে দেবে, এই আশঙ্কা থেকে পরিকল্পিতভাবে হত্যা করা হয়েছে শিশু সামিউলকে। প্রেমের সম্পর্কের সূত্র ধরে শামসুজ্জামান আরিফ ওরফে বাক্কুর সঙ্গে বিয়ে-বহির্ভূত শারীরিক সম্পর্কে জড়ান মা আয়েশা হুমায়রা এশা। 

তার প্ররোচনায় প্রেমিক শামসুজ্জামান আরিফ শিশু সামিউলকে অপহরণের পর হত্যা করে বলে বিচারক তার রায়ের পর্যবেক্ষণে বলেছেন।

রোববার (২০ ডিসেম্বর) ঢাকার বিশেষ জজ আদালত-৪ এর বিচারক শেখ নাজমুল আলম শিশু সামিউল হত্যা মামলার রায়ের পর্যবেক্ষণে এ কথা বলেন। এর আগে সামিউলের মা আয়েশা হুমায়রা এশা ও তার প্রেমিক শামসুজ্জামান আরিফ ওরফে বাক্কুকে মৃত্যুদণ্ড দিয়েছেন আদালত। পাশাপাশি তাদের ৫ হাজার টাকা অর্থদণ্ডের আদেশ দেওয়া হয়।

রায়ের পর্যবেক্ষণে বিচারক আরও বলেন, সাক্ষ্য প্রমাণে এসেছে, সামিউলকে অপহরণের পর থেকেই প্রেমিক আরিফের সঙ্গে বারবার যোগাযোগ করেছেন এশা। শেষ পর্যন্ত শিশুটিকে হত্যা করে বস্তায় ভরে রাস্তায় ফেলে দেয় সে। এ ঘটনায় আসামিরা স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দিয়েছেন।

তিনি আরও বলেন, মায়ের বিয়ে-বহির্ভূত অনৈতিক সম্পর্কের শিকার হলো নিষ্পাপ শিশু সামিউল। তাই এ হত্যায় সরাসরি অংশ না নিলেও একমাত্র সন্তানকে হত্যায় মায়ের যে প্ররোচনা ও সহায়তা রয়েছে, তাতে সে সমবেদনা বা সহানুভূতি পেতে পারে না। মৃত্যুদণ্ডই তার একমাত্র উপযুক্ত শাস্তি বলে আদালত মনে করেন।

মায়ের সঙ্গে আরেকজনের শারীরিক সম্পর্ক দেখে ফেলায় ২০১০ সালের ২৩ জুন সামিউলকে অপহরণ করে হত্যা করা হয়। এ ঘটনায় সামিউলের বাবা কে আর আজম বাদী হয়ে আদাবর থানায় একটি হত্যা মামলা করেন। মামলাটি তদন্ত করে পরের বছরের ২৫ অক্টোবর হুমায়রা ও শামসুজ্জামানের বিরুদ্ধে আদালতে অভিযোগপত্র দেওয়া হয়। ২০১২ সালের ১ ফেব্রুয়ারি দুই আসামির বিরুদ্ধে অভিযোগ গঠন করা হয়। এ মামলায় রাষ্ট্রপক্ষ ২২ জন সাক্ষীকে আদালতে হাজির করে।

গত ২৩ নভেম্বর মামলার যুক্তিতর্ক শুনানি শেষে রাষ্ট্রপক্ষ থেকে দুই আসামির সর্বোচ্চ সাজা মৃত্যুদণ্ড চাওয়া হয়েছে। রাষ্ট্রপক্ষে মামলাটি পরিচালনা করেন সরকারি কৌঁসুলি (পিপি) ফারুকুজ্জামান ভূঁইয়া।

টিএইচ/এমএইচএস