ভোমরা, হিলি, বুড়িমারী, বাংলাবান্ধা, শেওলা, সোনা মসজিদসহ যেসব স্থলবন্দর দিয়ে দেশে আমদানি করা চাল প্রবেশ করছে; সেসব বন্দরে শত শত চালের ট্রাক অপেক্ষমান রয়েছে। এসব চালের ট্রাকের অগ্রাধিকার প্রবেশে প্রয়োজনীয় সব ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

বৃহস্পতিবার (১১ ফেব্রুয়ারি) জুম অ্যাপের মাধ্যমে অনুষ্ঠিত খাদ্য পরিকল্পনা ও পরিধারণ কমিটির সভায় এ সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। সভায় যুক্ত ছিলেন- অর্থমন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামাল, কৃষিমন্ত্রী ড. আব্দুর রাজ্জাক, দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণ প্রতিমন্ত্রী ডা. ম. এনামুর রহমান,  মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ মন্ত্রী শ ম রেজাউল করিম, মন্ত্রিপরিষদ সচিব খন্দকার আনোয়ারুল ইসলামসহ সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয়ের সচিব এবং খাদ্য পরিকল্পনা ও পরিধারণ ইউনিটের মহাপরিচালক। সভায় সভাপতিত্ব করেন খাদ্যমন্ত্রী সাধন চন্দ্র মজুমদার এবং সঞ্চালনা করেন খাদ্য সচিব মোছাম্মৎ নাজমানারা খানুম।

বন্দরে অপেক্ষমান চালের ট্রাক যাতে অগ্রাধিকার ভিত্তিতে সীমান্ত দিয়ে দেশে প্রবেশ করতে পারে এজন্য প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়ার জন্য সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয়ের মন্ত্রীদের অনুরোধ করেন খাদ্যমন্ত্রী সাধন চন্দ্র মজুমদার। 

সিলেট ও চট্টগ্রাম বিভাগে আতপ চালের প্রচুর চাহিদা রয়েছে জানিয়ে খাদ্যমন্ত্রী বলেন, জাতীয় রাজস্ব বোর্ড থেকে বেসরকারি পর্যায়ে আতপ চাল আমদানির ওপর নিষেধাজ্ঞা রয়েছে। নিষেধাজ্ঞা শিথিল করে নন-বাসমতি মোটা আতপ চাল আমদানির অনুমতি দেওয়া যায় কিনা তা বিবেচনা করা যেতে পারে।

নন-বাসমতি মোটা আতপ চাল আমদানির অনুমতিসহ অন্যান্য প্রয়োজনীয় সব বিষয়ে একত্রে প্রস্তাব পাঠাতে বলেন অর্থমন্ত্রী। এছাড়াও বর্তমান চালের মজুদ পরিস্থিতি, অভ্যন্তরীণ পর্যায়ে সংগ্রহের প্রবণতা, চালের আমদানির পরিমাণ, চালের বাজার মূল্য, ওএমএস খাতে বরাদ্দের বিষয় নিয়ে সভায় বিস্তারিত আলোচনা হয়।

খাদ্যমন্ত্রী বলেন, ইতোমধ্যে আমরা পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সঙ্গে যোগাযোগ করেছি। ১৩ জেলার (খুলনা, রাজশাহী, রংপুর, বগুড়া, যশোর, জয়পুরহাট, সাতক্ষীরা, সিলেট, দিনাজপুর, চাঁপাইনবাবগঞ্জ, নওগাঁ, চট্টগ্রাম ও ঢাকা) জেলা প্রশাসক ও আমদানিকারকদের নিয়ে একটি মিটিং করেছি। এলসি খোলার সর্বশেষ সময়সীমা ১৫ ফেব্রুয়ারি। এরপরে আর কেউ এলসি খুলতে পারবে না বলেও সভায় আমদানিকারকদের জানিয়ে দেওয়া হয়েছে।

মন্ত্রী বলেন, তাদের অনুরোধ করা হয়েছে। যারা ১৫ তারিখের মধ্যে এলসি খুলতে পারবেন না তারা তাদের বরাদ্দ প্রত্যাহার করুন। যারা ১৫ তারিখের মধ্যে এলসি খুলতে পারবে না তাদের বরাদ্দ বাতিল করে আমরা নতুন করে অন্যান্য প্রতিষ্ঠানকে আমদানির অনুমতি দেবো।

সর্বপ্রথম বরাদ্দপত্র ইস্যুর সাতদিনের মধ্যে এলসি খুলে এ সংক্রান্ত তথ্য খাদ্য মন্ত্রণালয়কে জানাতে বলা হয়েছিল। ৫ হাজার মেট্রিক টন বরাদ্দ পাওয়া ব্যবসায়ীদের এলসি খোলার ১০ দিনের মধ্যে ৫০ শতাংশ এবং সর্বমোট ২০ দিনের মধ্যে সমুদয় চাল বাজারজাত করার শর্ত দেওয়া হয়।

এছাড়া ১০-১৫ হাজার মেট্রিক টন বরাদ্দ পাওয়া ব্যবসায়ীদের এলসি খোলার ১৫ দিনের মধ্যে ৫০ শতাংশ এবং সর্বমোট ৩০ দিনের মধ্যে সমুদয় চাল দেশে বাজারজাত করতে হবে বলে খাদ্য মন্ত্রণালয় থেকে জারি করা অফিস আদেশে উল্লেখ করা হয়েছিল।

সর্বশেষ এলসি খোলার সময়সীমা ১৫ ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত বাড়ানো হয়। এ পর্যন্ত ৩২০ প্রতিষ্ঠানের অনুকূলে মোট ১০ লাখ ১৪ হাজার ৫০০ মেট্রিক টন চাল বেসরকারি পর্যায়ে আমদানির জন্য অনুমতি দেওয়া হয়েছে। ইতোমধ্যে আমদানি করা চাল দেশে আসতে শুরু করেছে।

এসএইচআর/আরএইচ/এসএম