সেনাবাহিনী প্রধান জেনারেল আজিজ আহমেদ/ ফাইল ছবি

১৬ দিনের রাষ্ট্রীয় সফর শেষে শুক্রবার (১২ ফেব্রুয়ারি) দেশে ফিরছেন সেনাবাহিনী প্রধান জেনারেল আজিজ আহমেদ। যুক্তরাষ্ট্রের সেনাপ্রধানের আমন্ত্রণে গত ২৯ জানুয়ারি দেশটিতে যান তিনি।

বৃহস্পতিবার (১১ ফেব্রুয়ারি) আন্তঃবাহিনী জনসংযোগ পরিদপ্তর (আইএসপিআর) থেকে পাঠানো সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানানো হয়েছে। যুক্তরাষ্ট্র সফরকালে জেনারেল আজিজ আহমেদ মার্কিন সেনাপ্রধান জেনারেল ম্যাকনভিলসহ উচ্চপদস্থ সামরিক কর্মকর্তাদের সঙ্গে সাক্ষাৎ করেন এবং বিভিন্ন সামরিক স্থাপনা পরিদর্শন করেন।

সেনাপ্রধান ইউএস আর্মি সাইবার কমান্ড, ইন্টেলিজেন্স অ্যান্ড সিকিউরিটি কমান্ড, ট্রেনিং অ্যান্ড ডকট্রিন কমান্ড (TRADOC), ম্যানুভার সেন্টার অব এক্সিলেন্স, জরজিয়া এবং জয়েন্ট রেডিনেস ট্রেনিং সেন্টার (JRTC) এবং লুসিয়ানা পরিদর্শন করেন।

সফরকালে তিনি যুক্তরাষ্ট্রের ডেপুটি অ্যাসিস্ট্যান্ট সেক্রেটারি, অফিস অব দ্যা সেক্রেটারি অব ডিফেন্স ফর পলিসি- সাউথ অ্যান্ড সাউথইস্ট এশিয়া এবং ডিফেন্স সিকিউরিটি কো-অপারেশন এজেন্সির প্রতিনিধির সঙ্গে সাক্ষাৎ করেন। সাক্ষাতকালে যুক্তরাষ্ট্র এবং বাংলাদেশের মধ্যে পারস্পরিক সহযোগিতামূলক বিভিন্ন বিষয়ে ফলপ্রসূ আলোচনা হয়।

রোহিঙ্গা সংকট সমাধানে যুক্তরাষ্ট্র বরাবরের মতো বাংলাদেশের পাশে থেকে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করবে বলে বাংলাদেশ সেনাবাহিনী প্রধান আশা প্রকাশ করেন। বিশেষভাবে, বঙ্গবন্ধু হত্যার মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত পলাতক আসামি রাশেদ চৌধুরীকে দ্রুত বাংলাদেশে ফেরত পাঠানোর বিষয়ে তিনি যুক্তরাষ্ট্রের সর্বাত্মক সহযোগিতা কামনা করেন।

গত মঙ্গলবার মার্কিন সেনাপ্রধান জেনারেল ম্যাকনভিলের পক্ষ থেকে বাংলাদেশ সেনাবাহিনী প্রধানকে গার্ড অব অনার দেওয়া হয়। পরে দুই দেশের সেনা প্রধানের মধ্যে সৌজন্য সাক্ষাতে দ্বিপাক্ষিক সহযোগিতামূলক বিভিন্ন বিষয় ও ভবিষ্যৎ পরিকল্পনা নিয়ে বিস্তারিত আলোচনা হয়। আলোচনায় বাংলাদেশ সেনাবাহিনী প্রধান দুই দেশের মধ্যে মিলিটারি এক্সপার্ট এক্সচেঞ্জ, জাতিসংঘে বাংলাদেশের শান্তিরক্ষীদের মোতায়েন এবং কাউন্টার টেরোরিজম ও সাইবার ওয়ারফেয়ার বিষয়ে বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর সক্ষমতা বৃদ্ধিতে মার্কিন সেনাবাহিনীর সহযোগিতার বিষয়ে বিশেষ গুরুত্বারোপ করেন।

ভবিষ্যতে মার্কিন সেনাবাহিনীর বিভিন্ন সামরিক প্রশিক্ষণে বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর অংশগ্রহণ বৃদ্ধি পাবে বলে বাংলাদেশ সেনাবাহিনী প্রধান আশা প্রকাশ করেন। সোমবার (৯ ফেব্রুয়ারি) বিকালে জাতিসংঘের অপারেশন সাপোর্ট বিভাগের আন্ডার সেক্রেটারি জেনারেল অতুল খারে’র সঙ্গে সেনাবাহিনী প্রধানের বৈঠক করেন।

মঙ্গলবার বিকালে সেনাবাহিনী প্রধানের সঙ্গে  বৈঠকে করেন জাতিসংঘের আন্ডার সেক্রেটারি জেনারেল জ্য পিয়েরে ল্যাক্রুয়া। বৈঠকে ল্যাক্রুয়া জাতিসংঘ শান্তিরক্ষা মিশনে বাংলাদেশের মহিলা শান্তিরক্ষীদের অংশগ্রহণের বিষয়ে প্রশংসা করেন এবং ভবিষ্যতে বাংলাদেশের মহিলা শান্তিরক্ষীর সংখ্যা আরও বৃদ্ধি পাবে বলে আশাবাদ ব্যক্ত করেন। তিনি আরও বেশি বাংলাদেশি শান্তিরক্ষী মোতায়েনের বিষয়েও সহযোগিতার আশ্বাস দেন।

একই দিনে জাতিসংঘ শান্তিরক্ষা কার্যক্রমের মিলিটারি অ্যাডভাইজার লেফটেন্যান্ট জেনারেল কার্লোস হামবার্টো লয়টের সঙ্গেও স্বার্থ সংশ্লিষ্ট বিষয়ে সেনাপ্রধান দ্বিপাক্ষিক বিষয়ে আলোচনা করেন। লে. জেনারেল লয়টে বাংলাদেশি সেনাসদস্যদের শান্তি রক্ষা মিশনে প্রদর্শিত দক্ষতা এবং পেশাদারিত্বের ভূয়সী প্রশংসা করেন।

জেনারেল আজিজ বাংলাদেশ স্থায়ী মিশনে পৌঁছলে জাতিসংঘে নিযুক্ত বাংলাদেশের স্থায়ী প্রতিনিধি রাষ্ট্রদূত রাবাব ফাতিমা সেনাপ্রধানকে অভ্যর্থনা জানান এবং শান্তিরক্ষাসহ তাদের বিভিন্ন কর্মকাণ্ড সম্পর্কে সেনাপ্রধানকে অবহিত করেন। গত ২৯ জানুয়ারি যুক্তরাষ্ট্রের উদ্দেশে ঢাকা ত্যাগ করেন সেনাপ্রধান।

এনএম/এফআর