আগামী রোববার (১৪ ফেব্রুয়ারি) চতুর্থ ধাপে অনুষ্ঠিত হতে যাচ্ছে পৌরসভা নির্বাচন। এ উপলক্ষে ভোটকেন্দ্রগুলোতে ব্যালট পেপার পাঠানোর নির্দেশ দিয়েছে নির্বাচন কমিশন (ইসি)। ইসির নির্বাচন ব্যবস্থাপনা ও সমন্বয় শাখার সিনিয়র সহকারী সচিব মোহাম্মদ মোরশেদ আলম স্বাক্ষরিত এক আদেশে এ নির্দেশনা দেওয়া হয়।

আদেশে বলা হয়, চতুর্থ ধাপে অনুষ্ঠিত হতে যাওয়া ২৫টি পৌরসভায় আগামী ১৪ ফেব্রুয়ারি ব্যালট পেপারের মাধ্যমে ভোটগ্রহণ অনুষ্ঠিত হবে। নির্বাচন সুষ্ঠু ও সুন্দরভাবে পরিচালনার স্বার্থে ভোটগ্রহণের দিন সকালে ব্যালট পেপার পৌঁছানোর বিষয়ে নির্বাচন কমিশন নির্দেশনা দিয়েছে।

এ বিষয়ে ইসির যুগ্মসচিব এসএম আসাদুজ্জামান বলেন, চতুর্থ ধাপে মোট ৫৬টি পৌরসভায় ভোটগ্রহণ হবে। এর মধ্যে ২৫টি পৌরসভায় ব্যালট পেপারে আর বাকিগুলোতে ইভিএমের মাধ্যমে ভোটগ্রহণ হবে। ইভিএম ব্যবস্থাপনার জন্য জাতীয় পরিচয় নিবন্ধন অনুবিভাগের (এনআইডি) কর্মকর্তারা সরেজমিন উপস্থিত থেকে ভোটগ্রহণের সব প্রয়োজনীয় কারিগরি সহায়তা দিবেন। এছাড়া ভোটগ্রহণ প্রশিক্ষণের জন্য প্রয়োজনীয় সংখ্যক ইভিএম কাস্টমাইজেশনসহ নির্বাচন উপযোগী করে রিটার্নিং অফিসারের কাছে হস্তান্তর করা হবে।

তিনি বলেন, চতুর্থ ধাপের পৌর নির্বাচনে সংশ্লিষ্ট জেলা নির্বাচন কর্মকর্তা বা জ্যেষ্ঠ জেলা নির্বাচন কর্মকর্তা অথবা বিশেষে অতিরিক্ত আঞ্চলিক নির্বাচন কর্মকর্তা ও অতিরিক্ত জেলা নির্বাচন কর্মকর্তাকে রিটার্নিং অফিসার হিসেবে নিয়োগ করা হয়েছে। তবে কয়েকটি পৌরসভায় অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (সার্বিক) এবং উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তাকে রিটার্নিং অফিসার নিয়োগ করা হয়েছে। একই সঙ্গে সংশ্লিষ্ট উপজেলা নির্বাচন কর্মকর্তাকে সহকারী রিটার্নিং অফিসার হিসেবেও নিয়োগ দেওয়া হয়েছে। এদিন সকাল ৮টা থেকে বিকাল ৪টা পর্যন্ত একটানা ভোটগ্রহণ চলবে।

তিনি আরও বলেন, গত ৩ জানুয়ারি চতুর্থ ধাপে ৫৬টি পৌরসভার নির্বাচনের তফসিল দেয় ইসি। পরে এ ধাপে আরও দুটি পৌরসভা যুক্ত করায় মোট ৫৮টি পৌরসভায় ভোটগ্রহণ করা হবে।
তফসিল অনুযায়ী যে ২৫ পৌরসভায় ব্যালটে ভোট হবে সেগুলো হচ্ছে- ঠাকুরগাঁওয়ের রানীশংকাইল, রাজশাহীর নওহাটা, তানোর ও তাহেরপুর, লালমনিরহাটের পাটগ্রাম, নরসিংদী পৌরসভা, রাজবাড়ীর গোয়ালন্দ পৌরসভা, বরিশালের বানরীপাড়া, শেরপুরের শ্রীবরদী, নাটোরের বড়াইগ্রাম ও নাটোর, খাগড়াছড়ির মাটিরাঙ্গা, চট্টগ্রামের সাতকানিয়া ও চন্দাইশ, কিশোরগঞ্জের হোসেনপুর ও করিমগঞ্জ, টাঙ্গাইলের কালিহাতী, চুয়াডাঙ্গার জীবননগর, চাঁদপুরের ফরিদগঞ্জ, যশোরের বাঘারপাড়া, শরীয়তপুরের ডাম্যুডা, জামালপুরের মেলান্দহ, জয়পুরহাটের কালাই, ফরিদপুরের নগরকান্দা ও সিলেটের কানাইঘাট।

যে ৩১ পৌরসভায় ইভিএমে ভোট হবে সেগুলো হচ্ছে- ঠাকুরগাঁও, রাজশাহীর গোদাগাড়ী, লালমনিরহাট, নরসিংদীর মাধবদী, রাজবাড়ী, বরিশালের মুলাদী, শেরপুর, চাঁপাইনবাবগঞ্জের শিবগঞ্জ, বাগেরহাট, বান্দরবান, সাতক্ষীরা, হবিগঞ্জের চুনারুঘাট, কুমিল্লার হোমনা এবং দাউদকান্দি, চট্টগ্রামের পটিয়া, কিশোরগঞ্জের বাজিতপুর, টাঙ্গাইলের গোপালপুর, পটুয়াখালীর কলাপাড়া, চুয়াডাঙ্গার আলমডাঙ্গা, ফেনীর পরশুরাম, চাঁদপুরের কচুয়া, মাদারীপুরের কালকিনি, নেত্রকোনা, যশোরের চৌগাছা, রাঙ্গামাটি, মুন্সীগঞ্জের মিরকাদিম, ময়মনসিংহের ফুলপুর, জয়পুরহাটের আক্কেলপুর, নোয়াখালীর চাটখিল এবং ব্রাহ্মণবাড়িয়ার আখাউড়া, লক্ষ্মীপুর জেলার রামগতি।

দেশে মোট পৌরসভার সংখ্যা ৩২৯টি। প্রথম ধাপের তফসিলে ২৪টি পৌরসভায় ইভিএমে ভোট হয় ২৮ ডিসেম্বর। ১৬ জানুয়ারি দ্বিতীয় ধাপের ৬১টি পৌরসভায় ভোট হয়েছে। আর তৃতীয় ধাপে ৬৪টি পৌরসভায় ভোটগ্রহণ হয় ৩০ জানুয়ারি। চতুর্থ ধাপে ১৪ ফেব্রুয়ারি এবং পঞ্চম ধাপে ২৮ ফেব্রুয়ারি ভোটগ্রহণ হবে। আইন অনুযায়ী, মেয়াদ শেষের পূর্ববর্তী ৯০ দিনের মধ্যেই পৌরসভার ভোট করতে হয়। স্থানীয় সরকার আইন সংশোধনের পর ২০১৫ সালে প্রথম দলীয় প্রতীকে ভোট হয় পৌরসভায়। সেবার ২০টি দল ভোটে অংশ নেয়।

এসআর/এমএইচএস