ঈদুল আজহায় ঈদে ঘরমুখি মানুষের ভিড় বেড়েছে বাস কাউন্টারগুলোতে। কিন্তু ভয়ঙ্কর শিডিউল বিপর্যয়ে ভোগান্তিতে পড়েছেন মানুষ। 

বৃহস্পতিবার রাত ১১টার বাস ছেড়েছে ভোর ৪টায়, সকাল ৬টার বাসের দেখা মেলেনি সকাল ৯টা পর্যন্ত। সকাল ৮টার বাসের যাত্রীদের কোনো কোনো পরিবহন ফোন করে বিকেলে আসতে বলেছেন।

রাজধানীর কল্যাণপুর বাস টার্মিনালে ভোগান্তিতে পড়া যাত্রী ও  কাউন্টার সূত্রে ঈদযাত্রার এ চিত্র পাওয়া গেছে। 

আরও পড়ুন : শঙ্কা উড়িয়ে যাত্রীতে ঠাসা ১৪ লঞ্চ পৌঁছাল বরিশালে

শুক্রবার সকালে রাজধানীর কল্যাণপুর বাস টার্মিনালে গিয়ে দেখা যায়, মূল সড়কে দীর্ঘ যানজট। ২০ মিনিট থেকে আধা ঘণ্টা পর পর নড়ছে গাড়ির চাকা। ঢাকায় ঢুকতে ও বের হতে দু’পথেই রয়েছে তীব্র যানজট।  

পটুয়াখালী বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের জিওমেটিক বিভাগের সহকারি অধ্যাপক আশিকুর রহমান ন্যাশনাল ট্রাভেলসে যাবেন চাঁপাইনবাবগঞ্জে। সেজন্য গতরাত ১১টায় টিকিটও কেটেছেন। কিন্তু সারারাত বসে থেকেও বাসের দেখা পাননি তিনি। বেশিরভাগ যাত্রীই একই অবস্থায় পড়েছেন। গতকাল রাত থেকে কোনো বাসই যথাসময়ে ছেড়ে যায়নি।  

আরও পড়ুন : ‘৮ মিনিটের পথ ১০ ঘণ্টায় পাড়ি, কখন যাব বাড়ি’

কল্যাণপুর হানিফ কাউন্টারের টিকিট বিক্রেতা মো. আলম বলছেন, ভয়ঙ্কর অবস্থা। গতকাল রাত ১২টার বাস গেছে ভোরে। আমি সকালে আসছি। সকাল ৭টার বাস ঢাকাতেই ছিল। সেটা ছেড়েছি, কিন্তু খবর নিলাম, আড়াই ঘণ্টাতেও সে বাস গাবতলী পার হতে পারেনি। এরপর থেকে কোনো বাস যথাসময়ে আমরা ছাড়তে পারিনি। 

এসআর পরিবহনের কল্যাণপুরের টিকিট বিক্রেতা মো. জিয়া বলেন, চন্দ্রা থেকে ঢাকায় পৌঁছতে সময় লাগছে ১২ ঘণ্টা। তাহলে যথাসময়ে বাস ছাড়বো কী করে। ভোগান্তি যাত্রীদের, ভোগান্তি আমাদেরও। কিন্তু কোনো উপায় নেই। এই যে দেখেন সড়কে গাড়ির চাকা ঘুরছে না। শ্যামলী থেকে কল্যাণপুর আড়াই ঘণ্টা। 

আরও পড়ুন : মহাসড়কে মোটরসাইকেল বন্ধ : বাসমালিকদের ‘ষড়যন্ত্র’ দেখছেন বাইকাররা

কল্যাণপুর বাস টার্মিনালে খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, অধিকাংশ পরিবহনের বাসে সিডিউল বিপর্যয়ের একই দৃশ্য। ঈদের আগে এই সিডিউল ঠিক হওয়া সম্ভব নয়। সকালের অনেক বাস ঢাকায় পৌঁছায়নি। ঢাকা পৌঁছতেই লাগবে ৪/৫ ঘণ্টা। এরপর ঈদযাত্রা। 

কল্যাণপুর দেশ ট্রাভেলসের কাউন্টার মাস্টার নজরুল ইসলাম ঢাকা পোস্টকে বলেন, সোয়া ৬টার বাসটা ছাড়তে পেরেছি। সেটা এখনও আমিনবাজার ব্রিজে। এরপর সাতটা, পৌনে আটটা, আটটা, পৌনে ৯টার চাঁপাইনবাবগঞ্জ রুটের একটি বাসও ছেড়ে যায়নি। এলেঙ্গা-চন্দ্রায় ভয়াবহ যানজট। সেটির প্রভাবে গাড়ি ঢাকা পৌঁছাতেই সময় লাগছে। যে কারণে শিডিউল বিপর্যয়। 

চার ঘণ্টা ধরে কাউন্টারে অপেক্ষা করে বাস না পাওয়া ক্ষুব্ধ যাত্রী আলতাফ হোসেন বলেন, কখনও যানজটে, তো কখনও বাস সংকটে চিড়েচ্যাপ্টা যাত্রীরা। কনেয়ালে কয়ে যায়, বকনেওয়ালা বকে যায়, দেখনেওয়ালা দেখে যাও, সয়ে যাও।

জেইউ/এনএফ