দুর্নীতি দমন কমিশন

দুর্নীতি দমন কমিশনের (দুদক) হটলাইনে অভিযোগ আসে একটি চক্র দুদকের পরিচালক পরিচয়ে আর্থিক সুবিধা দাবি করছে। আর্থিক সুবিধার বিনিময়ে দুদকের মামলা থেকে অব্যাহতি পাইয়ে দেওয়া হবে বলে আশ্বস্ত করে চক্রটি। শুধু তাই নয়, চক্রটি নিজেদের বিশ্বাসযোগ্য করতে ইমোতে মামলার এজাহারের ভুয়া কপিও পাঠিয়ে দেয়।

ওই তথ্যের ভিত্তিতে অভিযান চালিয়ে কেরানীগঞ্জ থেকে নিপা বেগম এবং মো. দ্বীন ইসলামকে আটক কর করা হয়। অভিযানকালে তাদের কাছ থেকে একটি সংবাদ মাধ্যম ও স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের কর্মচারীর ভুয়া পরিচয়পত্র আটক করে দুদক টিম।

২০১৯ সালের ১৫ ফেব্রুয়ারি রাজু মিয়া নামের এক প্রতারককে গ্রেপ্তার করে র‌্যাব। রাজুর নেতৃত্বে একটি চক্র দীর্ঘদিন দুদকের কর্মকর্তা পরিচয়ে বিভিন্ন সরকারি দপ্তরের ফোন দিয়ে মামলার ভয় দেখিয়ে অর্থ আদায় করতো। টেলিফোন ডিরেক্টরি থেকে সরকারি কর্মকর্তাদের নাম-ঠিকানা সংগ্রহ করে কল দিতো তারা। তাদের অন্যতম টার্গেট ছিল স্থানীয় সরকারের চেয়ারম্যানরা। মামলার ফাইল বন্ধ করতে বিকাশের মাধ্যমে টাকা আদায় করতো চক্রটি। এরকম অপকৌশলে এভাবে তারা প্রায় ১৪ লাখ টাকা হাতিয়েছে।

একাধিক সংঘবদ্ধ প্রতারক চক্র বিভিন্ন পেশায় নিয়োজিত ব্যক্তিদের নামে কল্পিত বা ভুয়া অভিযোগ দেখিয়ে অর্থ হাতিয়ে নিচ্ছে। এরূপ জালিয়াতির সত্যতা আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বিভিন্ন বাহিনী ও দুদকের অভিযানে বেরিয়ে আসছে হর হামেশাই। কখনো দুদকের উপপরিচালক, মহাপরিচালক কিংবা কখনো সচিব পরিচয় দিয়ে বিভিন্ন চক্র সরকারি বড় কর্মকর্তাদের বিরুদ্ধে দুর্নীতির অনুসন্ধান শুরু করে আবার অর্থের বিনিময়ে অভিযোগ থেকে অব‌্যাহতি দিচ্ছে। অনেক ক্ষেত্রে ভুয়া অনুসন্ধানের আদেশ কপি বানিয়ে হাতিয়ে নিচ্ছে লাখ লাখ টাকা। এ যেন দুর্নীতি দমন কমিশনের (দুদক) বাইরে আরও একটি কমিশন। 

এ বিষয়ে দুদক পরিচালক ( জনসংযোগ কর্মকর্তা) প্রনব কুমার ভট্টাচার্য্য ঢাকা পোস্টকে বলেন, দুদকের ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের নাম ব্যবহার করে একাধিক প্রতারক বা প্রতারকচক্র কমিশনের মামলা অথবা কাল্পনিক মামলা অথবা কাল্পনিক অভিযোগ থেকে অব্যাহতি অথবা অভিযুক্ত করা হচ্ছে জানিয়ে টেলিফোনের মাধ্যমে অনৈতিক অর্থ দাবি করছে। আবার এমনও অনেক প্রতারক রয়েছে যারা একইভাবে কমিশনের কর্মকর্তা-কর্মচারী এমনকি কমিশনের ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের নাম ব্যবহার করে বিভিন্ন দপ্তর বা সংস্থায় বিভিন্ন অনৈতিক তদবিরের মাধ্যমেও অর্থ হাতিয়ে নেওয়ার চেষ্টা করছে। কমিশন এ জাতীয় কর্মকাণ্ড বন্ধে বহুমাত্রিক ব্যবস্থা গ্রহণ করছে। অনেকের বিরুদ্ধে আদালতে মামলা চলছে। 

তিনি আরও বলেন, এর আগে কমপক্ষে ১০ বার প্রেস বিজ্ঞপ্তির মাধ্যমে সর্বসাধারণকে সচেতন করা হয়েছে। এ বিষয়ে সংশ্লিষ্টদের সচেতনতার কোনো বিকল্প নেই। যদি কোনো ব্যক্তি কমিশনের কর্মকর্তা কিংবা কমিশনের ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের নাম ব্যবহার করে টেলিফোন করে বা ব্যক্তিগতভাবে নিজেকে কমিশনের কর্মকর্তা বা ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের স্বজন পরিচয় দিয়ে অনৈতিক কোনো বিষয়ে তদবির করে, তবে টেলিফোনের সত্যতার নিশ্চয়তা এবং প্রতিকার পাওয়ার জন্য তাৎক্ষণিকভাবে দুদকের পরিচালক (গোয়েন্দা) মীর মো. জয়নুল আবেদীন শিবলী (মোবাইল নম্বর- ০১৭১১-৬৪৪৬৭৫) অথবা পরিচালক (জনসংযোগ) প্রনব কুমার ভট্টাচার্য্যের (মোবাইল নম্বর ০১৭১৬-৪৬৩২৭৬) সঙ্গে যোগাযোগ করার অনুরোধ করা হচ্ছে।

আরএম/আরএইচ