অনলাইন পেমেন্ট গেটওয়ে ব্যবহার করে কোটি টাকা আত্মসাৎ
অনলাইন পেমেন্ট গেটওয়ে ব্যবহার করে হাজার হাজার ডলার লেনদেনের মাধ্যমে প্রতারণা করতেন জেড এম সাজ্জাদুল আলম নামে এক ব্যক্তি। বিভিন্ন তথ্য-প্রমাণের ভিত্তিতে তাকে গ্রেপ্তার করেছে অপরাধ তদন্ত বিভাগ (সিআইডি)।
রোববার (২৮ ফেব্রুয়ারি) দুপুরে সিআইডির সদর দপ্তরে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে এবিষয়ে কথা বলেন সাইবার ক্রাইম কমান্ড অ্যান্ড কন্ট্রোল সেন্টারের অতিরিক্ত ডিআইজি মো. কামরুল আহসান।
বিজ্ঞাপন
তিনি বলেন, সাজ্জাদ বিভিন্ন ভিকটিমের কাছ থেকে কয়েক কোটি টাকা আত্মসাৎ করেছে। সিআইডির সাইবার মনিটরিং টিম নওগাঁর বদলগাছী থানার মাস্টার পাড়া এলাকা থেকে তাকে গ্রেপ্তার করে। এ সময় তার কাছ থেকে দুটি মোবাইল ফোন ও তার ব্যবহৃত অনলাইন পেমেন্ট গেটওয়ের অ্যাকাউন্ট জব্দ করা হয়।
মো. কামরুল বলেন, অস্ট্রেলিয়া প্রবাসী বাংলাদেশি ডাক্তার চৌধুরী সাইফুল আলম বেগের আন্তর্জাতিক বিভিন্ন প্রয়োজনে অনলাইন পেমেন্ট গেটওয়ে পেপাল, স্ক্রিল নেটলারের মাধ্যমে তার ডলার লেনদেনের প্রয়োজন হতো। সেই সুবাদে তিনি অভিযুক্ত জেড এম সাজ্জাদুল আলমের সঙ্গে পরিচিত হন। মাঝেমধ্যেই সাজ্জাদুল আলম ডাক্তার সাইফুল আলম বেগের সঙ্গে স্বাভাবিকভাবে ডলারের লেনদেন করে আসছিলেন। এর মধ্যে গতবছর থেকে চলতি বছরের ফেব্রুয়ারি মাস পর্যন্ত অভিযুক্ত সাজ্জাদুল আলম প্রায় ১০ লাখ টাকার পরিমাণ ডলার প্রতারণার মাধ্যমে আত্মসাৎ করে নেন, যা তিনি বাংলাদেশে অবস্থানরত ডাক্তার ফাহিম আহমেদকে দিতে বলেন।
বিজ্ঞাপন
ডাক্তার সাইফুল আলম বেগ অভিযুক্ত জেড এম সাজ্জাদুল আলমকে টাকা দিয়ে তা পরিশোধ করতে বলেন। এক পর্যায়ে অভিযুক্ত সাজ্জাদুল ডাক্তার সাইফুলের সঙ্গে যোগাযোগ বন্ধ করে দেন। ডাক্তার সাইফুল কোনো উপায় না পেয়ে সাইবার পুলিশ সিআইডির কাছে অভিযোগ করেন।
সিআইডি কর্মকর্তা আরও বলেন, সাইবার পুলিশ তদন্ত করতে গিয়ে দেখেন অভিযুক্ত জেড এম সাজ্জাদুল আলম আগে একজন আইটি ব্যবসায়ী ছিলেন। রাতারাতি বিত্তবান হওয়ার আশায় অনলাইন পেমেন্ট গেটওয়ের ডলার ব্যবসা শুরু করেন সাজ্জাদুল। প্রবাসী ভিকটিম এর আগে অল্প অল্প করে কিছু টাকা পাঠান। ফলে বিশ্বস্ততা তৈরি হয়। সাজ্জাদুল তাহমিদ নামে আমেরিকা প্রবাসী এক ব্যক্তির সঙ্গেও প্রতারণা করেন।
এছাড়া তিনি দেশের অনেক ফ্রিল্যান্সারের সঙ্গে পেপালের ডলার নিয়েও আত্মসাৎ করেছেন। অভিযুক্ত সাজ্জাদুল আলম প্রতারণার মাধ্যমে পাওয়া ডলার দিয়ে ইন্টারন্যাশনাল অনলাইন বেটিং করতেন। অভিযোগ তদন্ত করতে গিয়ে দেখা যায় সাজ্জাদুল আলমের নামে কোর্টে তিনটি সিআর মামলা রয়েছে। প্রত্যেক মামলায় সে ফ্রিল্যান্সিং ব্যবসার সঙ্গে জড়িত বলে উল্লেখ রয়েছে।
ডিআইজি মো. কামরুল আহসান বলেন, অভিযুক্ত জেড এম সাজ্জাদুল আলম বিভিন্ন উপায়ে মানুষের অর্থ আত্মসাৎ করেছেন। দেশের ভেতরে অনেকে তার মাধ্যমে বিদেশি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের কোর্স ফি দিতে গিয়ে প্রতারণার শিকার হয়েছেন এবং অনেকে দেশের বাইরে থেকে অনলাইনে পণ্য আনার জন্য তার কাছ থেকে পেপাল অথবা ক্রিলের ডলার নিতে গিয়ে প্রতারিত হয়েছেন।
এআর/জেডএস