১০ হাজার মানুষের থাকার জায়গা নয় সেন্ট মার্টিন
আন্তর্জাতিক বন দিবস উপলক্ষে বক্তব্য রাখেন মন্ত্রী মো. শাহাব উদ্দিন
পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তন মন্ত্রণালয়ের মন্ত্রী মো. শাহাব উদ্দিন বলেছেন, ১০ হাজার লোকের থাকার জায়গা সেন্ট মার্টিন দ্বীপ নয়। এমনিতেই ছোট এ দ্বীপে ৮ হাজার লোক বসবাস করে। তার ওপর প্রতিদিন ১০ হাজার লোক সেখানে যায়।
তিনি বলেন, আমরা সেখানে গিয়ে তিন ঘণ্টা থাকতে পারিনি। চারদিকে দুর্গন্ধ ছড়াচ্ছে। মন্ত্রণালয়ের পক্ষ থেকে সেখানে কাজ করা হচ্ছে। তারপরও হাজার হাজার মানুষ সেখানে যাবে, পরিবেশ দূষণ করবে। তাহলে দূষণমুক্ত পরিবেশ আসবে কীভাবে?
বিজ্ঞাপন
রোববার (২১ মার্চ) আগারগাঁওয়ের বন ভবনের হৈমন্তী মিলনায়তনে 'আন্তর্জাতিক বন দিবস ২০২১' উপলক্ষে আয়োজিত এক আলোচনা সভায় তিনি এ কথা বলেন। আলোচনা সভার আয়োজন করে পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তন মন্ত্রণালয়।
তিনি আরও বলেন, ছেঁড়া দ্বীপে তো যাওয়াই যাবে না। আমাদের জীববৈচিত্র্য সেখানে ধ্বংস হয়ে গেছে। আর যদি সেন্ট মার্টিনে যেতেই হয়, তাহলে সেখানে পরিকল্পিতভাবে ৫০০ থেকে ১০০০ মানুষ যেতে পারবে। আমরা বিভিন্ন সংস্থার সঙ্গে কথা বলেছি। আমি ডিজি মহোদয়কে বলবো, সেখানে দিনে কি পরিমাণ লোক যেতে পারে তার একটা তালিকা করে মন্ত্রণালয়ে পাঠাতে। এরপরে সেখানে যেন তার চেয়ে বেশি লোক যেতে না পারে সে বিষয়ে আমরা সিদ্ধান্ত নেব।
বিজ্ঞাপন
শাহাব উদ্দিন বলেন, পত্রিকায় দেখেছি বন রক্ষা করার জন্য বন বিভাগের অনেক কর্মকর্তা কর্মচারী জীবন দিয়েছেন। আবার বন উজাড়কারীদের সঙ্গেও কিছু কর্মকর্তা সম্পর্ক রাখছেন। মনে রাখতে হবে, বন না থাকলে বন বিভাগ থাকবে না, বন অধিদফতর থাকবে না, আপনাদের চাকরিও থাকবে না। আজ বনবিভাগ হুমকির মুখে। আপনাদের দায়িত্ব বন বিভাগকে রক্ষা করা। বনকে রক্ষা করতে পারলে আপনাদের চাকরি থাকবে। যাদের কারণে বনের জায়গা কমে গেছে তাদের খুঁজে বের করে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তন মন্ত্রণালয় সম্পর্কিত সংসদীয় স্থায়ী কমিটির সভাপতি সাবের হোসেন চৌধুরী বলেন, প্রতিবছর কী পরিমাণ বন হারালাম এবং কী পরিমাণ নতুন বনায়ন করলাম সেই হিসাবটা যদি না মিলাতে পারি তবে আমি আমার দায়িত্বে অবহেলা করছি। আমরা চাই না বন অধিদফতরের কোনো কর্মকর্তা এ রকম দায়িত্বে অবহেলা করুক। আমরা লক্ষ্য নির্ধারণ করেছিলাম এক ইঞ্চি বনের জমি বেহাত হওয়া বা জবরদখল অবস্থায় রাখবো না। বন বিভাগে নিয়োগ দেওয়া আইনজীবীদেরও আমরা পর্যবেক্ষণ করছি। কয়টা মামলায় আমাদের পক্ষে রায় এসেছে আর আসেনি সেগুলো পর্যন্ত পর্যবেক্ষণ করছি। কেন ২০২১ সালে দাঁড়িয়ে ২০১৫ সালের বনের হিসাব নিয়ে কথা বলতে হচ্ছে? এর মধ্যে যে ৬টি বছর পার হয়ে গেল তার হিসেব কোথায়? বনকে ছাড়া বাংলাদেশের উন্নয়ন হবে সেটা আমরা বিশ্বাস করি না।
অনুষ্ঠানে সামাজিক বনায়নে পাঁচজন উপকারভোগীদের মধ্যে ১৫ লাখ টাকার চেক বিতরণ করেন মন্ত্রী। বন অধিদফতরের প্রধান বনসংরক্ষক মো. আমীর হোসাইন চৌধুরীর সভাপতিত্বে আলোচনা সভায় আরও উপস্থিত ছিলেন পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তন মন্ত্রণালয়ের উপমন্ত্রী বেগম হাবিবুন নাহার, মন্ত্রণালয়ের অতিরিক্ত সচিব আহমদ শামীম আল রাজী প্রমুখ।
এমএইচএন/এসকেডি