আঞ্চলিক যোগাযোগ বাড়াতে চায় সরকার: প্রধানমন্ত্রী
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা/ ফাইল ছবি
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, দেশের ভৌগলিক অবস্থান বিবেচনা করে আঞ্চলিক যোগাযোগ বাড়াতে চায় সরকার, যা অর্থনৈতিক অগ্রগতিতে অবদান রাখবে।
রোববার (২৭ ডিসেম্বর) বেলা পৌনে ১২টায় ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইন্সের বহরে সদ্য যুক্ত হওয়া ধ্রুবতারার (ড্যাশ ৮-৪০০) আনুষ্ঠানিক উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে তিনি এ কথা বলেন।
বিজ্ঞাপন
ধ্রুবতারার উদ্বোধন উপলক্ষে হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরের ভিভিআইপি টার্মিনালে অনুষ্ঠিত উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে গণভবন থেকে ভিডিও কনফারেন্সে যুক্ত হন প্রধানমন্ত্রী।
একই অনুষ্ঠানে কেরানীগঞ্জে মহিলা কেন্দ্রীয় কারাগার, দেশের বিভিন্ন স্থানে নবনির্মিত ২০টি ফায়ার স্টেশন, জেলা সদরে নবনির্মিত ৬টি আঞ্চলিক পাসপোর্ট অফিস এবং একটি এলপিজি স্টেশন উদ্বোধন করেছেন প্রধানমন্ত্রী।
বিজ্ঞাপন
বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইন্সের বহরে আরও দুইটি এয়ারক্রাফট যুক্ত হবে জানিয়ে শেখ হাসিনা বলেন, আমরা আজ ধ্রুবতারার উদ্বোধন করলাম। বিমানের বহরে আরও দুইটি ড্যাশ ৮ এয়ারক্র্যাফট যুক্ত হবে। বাংলাদেশের ভৌগলিক অবস্থানকে কাজে লাগিয়ে বিমানগুলোর মাধ্যমে ব্যবসা-বাণিজ্যে এগিয়ে যাবে দেশ।
ধ্রুবতারার নামকরণ নিয়ে প্রধানমন্ত্রী বলেন, আমরা বিমানের নামগুলো দেশ ও সংস্কৃতির বিষয় মাথায় রেখে দিয়েছি। যেমন পালকি, রাঙ্গাপ্রভাত, ময়ূরপঙ্খী, গাংচিল, রাজহংস, অচিন পাখি। আজকেরটার নাম দিয়েছি ধ্রুবতারা। ধ্রুবতারা আমাদের দিক নির্দেশনা দেয়। এ নামটি দিতে আমাকে সহযোগিতা করেছে আমার ছোট বোন রেহানা।
দেশের বিমানবন্দরগুলোর উন্নয়ন প্রসঙ্গে প্রধানমন্ত্রী বলেন, আমি প্রথমবার ক্ষমতায় এসে সিলেট ও চট্টগ্রামকে আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর করি। ঢাকার বিমানবন্দরকে আরও উন্নত করি। আপনারা যদি ঢাকা বিমানবন্দরের ১৯৯৬ সালের ছবি দেখেন তাহলে বুঝবেন যে তখন কি অবস্থা ছিল। আমাদের বোর্ডিং ব্রিজ বা উন্নত কিছুই ছিল না। আমরা এ চিত্র পরিবর্তন করে দিয়েছি।
আওয়ামী লীগ সরকার বিমানবন্দরের জন্য সবকিছুই উন্নত করে দিয়েছে উল্লেখ করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ঢাকায় আমাদের থার্ড টার্মিনাল তৈরি হচ্ছে, কক্সবাজারে আন্তর্জাতিক মানের এয়ারপোর্ট হিসেবে উন্নত করে দিচ্ছি, সৈয়দপুর, সিলেট, রাজশাহীকেও উন্নত করে দিচ্ছি। বরিশালের এয়ারপোর্টও আস্তে আস্তে করবো সেই পরিকল্পনাও আমাদের রয়েছে।
‘দুর্ভাগ্য আমাদের একটাই আমরা যখন এতগুলো বিমান কিনে আন্তর্জাতিক পরিমণ্ডল ও আশপাশের দেশগুলোর সঙ্গে যোগাযোগ স্থাপন করতে চেয়েছিলাম তখনই করোনাভাইরাস এসে আমাদের সবকিছু ওলটপালট করে দিয়ে গেল। আমরা এত চমৎকার এয়ারলাইন্স কিনলাম কিন্তু কোভিড-১৯ এর কারণে সারা বিশ্বের সঙ্গে সম্পর্ক ছিন্ন করতে হয়েছে। অবশ্য এটা শুধু বাংলাদেশ না সমগ্র বিশ্বেই এ সমস্যাটা হচ্ছে। এ অবস্থার মধ্যেও ধ্রুবতারা উদ্বোধনের এমন একটি অনুষ্ঠানের আয়োজন করা অত্যন্ত সাহসী পদক্ষেপ নেওয়ায় সংশ্লিষ্ট সবাইকে অত্যন্ত ধন্যবাদ জানাচ্ছি,’ যোগ করেন প্রধানমন্ত্রী।
এর আগে গত ২৪ নভেম্বর বাংলাদেশে আসে ধ্রুবতারা।
বাংলাদেশ ও কানাডা সরকারের মধ্যে জি-টু-জি ভিত্তিতে ক্রয়করা ৩টি ড্যাশ ৮-৪০০ উড়োজাহাজের মধ্যে প্রথমটি হচ্ছে ‘ধ্রুবতারা’। কানাডার উড়োজাহাজ নির্মাতা প্রতিষ্ঠান ডি হ্যাভিল্যান্ড নির্মিত, ৭৪ আসন বিশিষ্ট ড্যাশ ৮-৪০০ উড়োজাহাজটি পরিবেশবান্ধব এবং অত্যাধুনিক সুযোগ-সুবিধা সমৃদ্ধ।
বিমান জানায়, কানাডার বিখ্যাত এয়ারক্রাফট নির্মাতা প্রতিষ্ঠান ডি হ্যাভিল্যান্ড নির্মিত অত্যাধুনিক নতুন ড্যাশ ৮-৪০০ প্লেনটি ৭৪ সিট সম্বলিত উড়োজাহাজ। পরিবেশবান্ধব এবং অত্যাধুনিক সুযোগ-সুবিধা সমৃদ্ধ এ উড়োজাহাজে রয়েছে হেপা (HEPA) ফিল্টার প্রযুক্তি যা মাত্র ৪ মিনিটেই ব্যাকটেরিয়া, ভাইরাসসহ অন্যান্য জীবাণু ধ্বংসের মাধ্যমে উড়োজাহাজের ভেতরে বাতাসকে সম্পূর্ণ বিশুদ্ধ করে যা যাত্রীদের যাত্রাকে করে তোলে অধিক সতেজ ও নিরাপদ।
এছাড়াও এ উড়োজাহাজে বেশি লেগ স্পেস (পা রাখার জায়গায়), এল ই ডি লাইটিং এবং প্রশস্ত জানালা থাকার কারণে ভ্রমণ হয়ে উঠবে বেশি আরামদায়ক ও আনন্দময়।
নতুন উড়োজাহাজটিসহ বিমানের বহরে বর্তমানে মোট ১৯টি প্লেন রয়েছে। তাদের মধ্যে ৪টি বোয়িং৭৭৭-৩০০ইআর, ৪টি বোয়িং ৭৮৭-৮, ২টি বোয়িং ৭৮৭-৯, ৬টি বোয়িং ৭৩৭ এবং ৩টি ড্যাশ ৮-৪০০ উড়োজাহাজ।
এআর/এসএম