করোনার কারণে অসময়ে অনুষ্ঠিত হওয়া এবারের একুশে বইমেলা এখনও জমে উঠেনি। ক্রেতা না থাকায় হতাশ প্রকাশকরা। বিক্রি কম থাকায় বিক্রয়কর্মী ছাঁটাইয়ের ঘটনা ঘটেছে বিভিন্ন স্টলে। সোমবার (২৯ মার্চ) বিকেলে মেলা প্রাঙ্গণে কয়েকটি স্টলের কর্মী ও প্রকাশকদের সঙ্গে কথা বলে এমনটি জানা গেছে।

মেলা প্রাঙ্গণে দেখা যায়, দি ইউনিভার্সাল একাডেমির প্যাভিলিয়নে ৪-৫ জন বিক্রয়কর্মী থাকলেও আজ আছেন শুধু একজন। কর্তৃপক্ষ বলছে বিক্রয় না থাকায় তাদের আপাতত আসতে নিষেধ করা হয়েছে। এছাড়া বিক্রি কম থাকায় শোভা প্রকাশের প্যাভিলিয়ন থেকেও পাঁচজন বিক্রয়কর্মী ছাঁটাই করা হয়েছে।

প্রকাশকরা জানিয়েছেন, এবারের মেলা শুরু হয়েছে অসময়ে, করোনার সংক্রমণও বেড়েছে। অন্যদিকে তীব্র রোদ। সবমিলিয়ে এবারের মেলায় প্রকাশকরা বিপাকে পড়েছেন। মেলায় ক্রেতা না থাকায় প্রত্যাশা অনুযায়ী বিক্রিও হচ্ছে না।

শোভা প্রকাশের প্রকাশক মিজানুর রহমান বলেন, এবারের মেলায় আমাদের অবস্থা খারাপ। দুজনকে বেতন দিতেও আমাদের কষ্ট হয়ে যাবে, একদমই বিক্রি নেই। করোনার কারণে হয়ত মেলাও বন্ধ হয়ে যেতে পারে। ছাঁটাই করা ছাড়া কোনো উপায় ছিল না।

ছাঁটাই করার অন্য কোনো কারণ আছে কি না এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, না অন্য কোনো কারণ নেই। বিক্রি না থাকার কারণে তাদের ছাঁটাই করতে বাধ্য হয়েছি। তবে যে কয়দিন কাজ করেছে তাদের বেতন দিয়েছি।

এ দিকে ছাঁটাই হওয়া কর্মীরা হতাশা প্রকাশ করেছেন। কয়েকজন বলছেন, শুধুমাত্র এ কাজটার জন্য গ্রাম থেকে ঢাকায় এসেছেন। এখানে মেসে অবস্থান করছেন। চাকরি হারিয়ে এখন বিপদে আছেন বলে জানান তারা। মেলায় যে কয় দিন কাজ করেছে, সে কয়দিনের টাকাও যথাযথভাবে পায়নি বলে দাবি তাদের।

মেলার সময় পরিবর্তন
মঙ্গলবার মেলার ১৩তম দিন। এ দিন মেলার দ্বার খুলবে বিকেল ৩টায়। চলবে রাত ৮টা পর্যন্ত। তবে মেলায় আগত দর্শনার্থীরা সাড়ে ৭টার পর আর প্রবেশ করতে পারবেন না।  যা আগে রাত ৯টায় পর্যন্ত চলতো।

হাজারের ওপরে নতুন বই মেলায়
সোমবার (২৯ মার্চ) পর্যন্ত বাংলা একাডেমির জনসংযোগ বিভাগের তথ্যানুযায়ী, প্রকাশিত নতুন বইয়ের সংখ্যা এক হাজার ৪৯১টি। ১২ দিনে হাজারের বেশি বই বের হলেও গুণগত বিবেচনায় সব বই টানে না পাঠককে। তবে ইতোমধ্যে মেলায় এসে গেছে বেশ মানসম্মত গ্রন্থ। সেগুলো হলো- সিরাজুল ইসলাম চৌধুরী রচিত ‘বর্তমানে দাঁড়িয়ে ভবিষ্যতের মুখোমুখি’ শিরোনামের প্রবন্ধ গ্রন্থ প্রকাশ করেছে কথা প্রকাশ। এখান থেকে বেরিয়েছে আহমদ রফিকের প্রবন্ধের বই ‘নবজাগরণের ব্যতিক্রমী ব্যক্তিত্ব’, রামেন্দু মজুমদারের প্রবন্ধ গ্রন্থ ‘শতবর্ষে বঙ্গবন্ধু ও বিবিধ ভাবনা’, হাসান আজিজুল হকের কাব্যগ্রন্থ ‘সুগন্ধি সমুদ্র পার হয়ে’ এবং ওয়াসি আহমেদের উপন্যাস ‘বরফকল’। আগামী থেকে প্রকাশিত হয়েছে বঙ্গবন্ধু ও মুক্তিযুদ্ধবিষয়ক আনিসুজ্জামান, হাসনাত আবদুল হাই, শামসুর রাহমান, আনোয়ারা সৈয়দ হক, সৈয়দ শামসুল হক ও বেলাল চৌধুরীর সিরিজ গ্রন্থ। এখানে মিলছে মঞ্জু সরকারের উপন্যাস ‘দাম্পত্য বিলাস’।

এইচআর/ওএফ