করোনার দ্বিতীয় ঢেউ মোকাবিলা ও সংক্রমণ রোধে সরকারি নির্দেশনা মেনে গাজীপুরের সাফারি পার্ক, বাগেরহাটের ষাটগম্বুজ মসজিদ ও সুন্দরবনসহ দেশের বিভিন্ন স্থানে পর্যটন ও বিনোদনকেন্দ্র বন্ধ ঘোষণা করা হয়েছে। এর আগে তিন পার্বত্য জেলা ও কক্সবাজারে পর্যটনকেন্দ্র বন্ধ করা হয়। এছাড়া বন্ধ করা হয়েছে ঢাকার চিড়িয়াখানাও।

সুন্দরবনে পর্যটক প্রবেশে নিষেধাজ্ঞার বিষয়টি শুক্রবার (২ এপ্রিল) নিশ্চিত করেছেন খুলনা সার্কেলের বন সংরক্ষক মো. মঈনুদ্দিন খান। তিনি বলেন, ‘করোনার সংক্রমণ বৃদ্ধি পাওয়ায় একে একে সবগুলো পর্যটনকেন্দ্র বন্ধ করা হচ্ছে। মন্ত্রণালয়ের সিদ্ধান্ত অনুযায়ী আগামী ১৫ এপ্রিল পর্যন্ত সুন্দরবনের পর্যটন স্পটগুলো বন্ধ থাকবে। সুন্দরবনে পূর্ব ও পশ্চিম জোন মিলিয়ে সাতটি পর্যটন স্পট রয়েছে। যার মধ্যে পশ্চিমে দুটি এবং পূর্বে পাঁচটি। সবগুলোই আজ থেকে বন্ধ থাকবে।’

মিরপুরের জাতীয় চিড়িয়াখানা ও রংপুর চিড়িয়াখানা অনির্দিষ্টকালের জন্য বন্ধের ঘোষণা দিয়েছে মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ মন্ত্রণালয়। এ বিষয়ে মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ মন্ত্রী বলেন, ‘চিড়িয়াখানায় দর্শনার্থীদের উপস্থিতির মাধ্যমে যাতে করোনাভাইরাসের সংক্রমণ বাড়তে না পারে সেজন্য ২ এপ্রিল থেকে পরবর্তী নির্দেশ না দেওয়া পর্যন্ত জাতীয় চিড়িয়াখানা ও রংপুর চিড়িয়াখানা বন্ধ রাখতে আমরা সিদ্ধান্ত গ্রহণ করেছি। ভাইরাসের বিস্তার রোধে সরকার সবধরনের পদক্ষেপ নিচ্ছে।’

জাতীয় চিড়িয়াখানার কিউরেটর ডা. আব্দুল লতীফ ঢাকা পোস্টকে বলেন, ‘ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের মাধ্যমে প্রাথমিকভাবে সরকারের নির্দেশনা পেয়েছি। ইতিমধ্যে গেটের সামনে একটি সাইনবোর্ড টানিয়ে দেওয়া হয়েছে। আপাতত চিড়িয়াখানায বন্ধ রাখা হচ্ছে। এটি আজ থেকে কার্যকর করা হয়েছে।’

করোনা সংক্রমণের উদ্বেগজনক পরিস্থিতিতে গাজীপুরের বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব সাফারি পার্ক দুই সপ্তাহের জন্য বন্ধ ঘোষণা করা হয়েছে। বিষয়টি নিশ্চিত করে সাফারি পার্কের প্রকল্প পরিচালক মো. জাহিদুল কবির ঢাকা পোস্টকে বলেন, করোনা পরিস্থিতি বিবেচনায় শনিবার (৩ এপ্রিল) থেকে আগামী ১৪ দিন সাফারি পার্ক বন্ধ রাখার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। করোনার সংক্রমণ রোধে এ সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। পরিস্থিতির উন্নতি না হলে বন্ধের সময়সীমা বাড়ানো হতে পারে।

বাগেরহাটের বিশ্ব ঐতিহ্য ষাট গম্বুজ মসজিদে দর্শনার্থীদের প্রবেশে নিষেধাজ্ঞা জারি করেছে প্রশাসন। বিষয়টি নিশ্চিত করে শুক্রবার (২ এপ্রিল) রাতে জেলা প্রশাসক আ ন ম ফয়জুল হক জানান, করোনাভাইরাসের প্রাদুর্ভাব বেড়ে যাওয়ায় ৩ এপ্রিল শনিবার থেকে ১৫ এপ্রিল বৃহস্পতিবার পর্যন্ত এ নিষেধাজ্ঞা জারি থাকবে। তবে ষাট গম্বুজ মসজিদে স্থানীয় মুসল্লিরা নামাজ আদায় করতে পারবেন। 

কক্সবাজারে পর্যটনকেন্দ্র বন্ধের বিষয়ে বৃহস্পতিবার (১ এপ্রিল) অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (রাজস্ব) আমিন আল পারভেজ বলেন, করোনাভাইরাসের সংক্রমণ বেড়ে যাওয়ায় সরকারের নির্দেশনা অনুযায়ী কক্সবাজার জেলার সব পর্যটনকেন্দ্র বন্ধ ঘোষণা করা হয়েছে। আজ রাত ৮টা থেকে আগামী ১৪ এপ্রিল পর্যন্ত এ নিষেধাজ্ঞা জারি থাকবে।

এদিকে সাতক্ষীরায়ও জেলা প্রশাসনের এক আদেশে স্থানীয় পর্যটনকেন্দ্রগুলোতে জনসাধারণের প্রবেশ নিষিদ্ধ করা হয়েছে।

এর আগে গত ৩১ মার্চ তিন পার্বত্য জেলা রাঙামাটি, বান্দরবান ও খাগড়াছড়ির সব পর্যটনকেন্দ্র বন্ধের ঘোষণা দেয়া হয়।

আরএইচ/জেএস