করোনা পরিস্থিতির ক্রমাগত অবনতি হওয়ায় সোমবার (৫ এপ্রিল) থেকে এক সপ্তাহের জন্য সারাদেশে লকডাউন ঘোষণা করছে সরকার। শনিবার (৩ এপ্রিল) এ তথ্য জানিয়েছেন আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক এবং সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের। 

গণমাধ্যমে লকডাউনের খবর প্রকাশের পর রাজধানীর কমলাপুর রেলস্টেশনে যাত্রীদের মাঝে শঙ্কা তৈরি হয়েছে। যারা অগ্রিম টিকিট কাটতে এসেছিলেন স্টেশনেই অনেকে চিন্তিত হয়ে পড়েন।

অগ্রিম টিকিট কাটতে আসা কালনী এক্সপ্রেসের যাত্রী রবিউল ইসলাম জানান, সোমবারের (৫ এপ্রিল) অগ্রিম টিকিট কাটতে এসেছি। কমলাপুর এসেই লকডাউনের খবর শুনলাম। এখন আজই বাড়ি যাওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছি।

সিল্ক সিটির যাত্রী আব্দুল কাদের জানান, সোমবারের অগ্রিম টিকিট সংগ্রহ করেছিলাম। তবে লকডাউনের সংবাদ শুনে দ্রুতই স্টেশনে চলে এসেছি। এই টিকিট দিয়ে আজই চলে যেতে চাই। তবে ৫ এপ্রিলের টিকিট দিয়ে আজ না যেতে পারলে সড়ক পথেই  চলে যাব। 

পঞ্চগড়ের বাসিন্দা মেহেদী হাসান লকডাউনের খবরে কমলাপুরে ছুটে আসেন। ঢাকা পোস্টকে মেহেদী হাসান বলেন, আমার অসুস্থ ভাইকে নিয়ে গত তিন দিন আগে স্যার সলিমুল্লা মেডিকেল কলেজে এসেছি। ৫ তারিখে (সোমবার) আমার ভাইকে নিয়ে পঞ্চগড় ফিরে যাওয়ার কথা। কিন্তু লকডাউনের সংবাদ শুনে স্টেশনে এসেছি দুটি টিকিটের খোঁজে। তবে কাউন্টার থেকে আজকের কোন টিকিট নেই বলে জানাল। এখন অসুস্থ ভাইকে নিয়ে কীভাবে বাড়ি ফিরব?  বাসেও যাওয়া সম্ভব নয়। উপকূল এক্সপ্রেসের যাত্রী তারেক জানান, ৫ এপ্রিলের টিকিট নিয়ে শঙ্কায় আছি। লকডাউনের জন্য বাসা থেকে বের হতে পারব কি না তাও জানি না। তাই টিকিট ফেরত দিতে এসেছি।

লকডাউনের মাঝে বাড়ি ফেরা নিয়ে শঙ্কা থাকায় তাৎক্ষণিক অনেক যাত্রী কমলাপুর স্টেশন ম্যানেজারের কক্ষে ভিড় করেন। সার্বিক বিষয় নিয়ে কমলাপুর স্টেশন ম্যানেজার মো. মাসুদ সারওয়ার বলেন, লকডাউনের সংবাদ শুনে অনেক যাত্রী আমাকে ফোন করেছে। আবার অনেকেই স্টেশনে ছুটে এসেছেন। আমি কোনো সমাধান দিতে পারছি না।

তিনি বলেন, সবার মতো আমিও গণমাধ্যমে লকডাউনের খবর শুনেছি। তবে এর মধ্যে ট্রেন চলাচল স্বাভাবিক থাকবে কি না এই ব্যাপারে কোনো সিদ্ধান্ত এখন পর্যন্ত কমলাপুর স্টেশনে আসেনি। তাই যারা ৫ তারিখের টিকিট ফেরত দিতে আসছেন আমরা ফেরত নিচ্ছি। তবে তাৎক্ষণিক যারা যেতে চাচ্ছেন তাদের জন্য আমরা কোনো ব্যবস্থা করতে পারছি না। 

করোনা সংক্রমণ বেড়ে যাওয়ায় এর আগে গত বছরের ২৫ মার্চ সব রুটের ট্রেন বন্ধের পর ৩১ মে থেকে আট জোড়া ট্রেন চালু করে রেলওয়ে। এরপর থেকে পর্যায়ক্রমে ২৮০টি ট্রেন চালু করা হয়। এরমধ্যে ৮৮টি লোকাল ও মেইল ট্রেন এখনো চালু করা সম্ভব হয়নি। ১৬ সেপ্টেম্বর থেকে ট্রেনের শতভাগ টিকিট বিক্রি শুরু হওয়ার পর থেকে স্টেশনগুলোতে স্বাস্থ্যবিধি মানা ও সামাজিক দূরত্ব পুরোপুরি উপেক্ষিত হয়ে পড়ে।

এসআর/ওএফ