অবৈধ দোকান বরাদ্দ: কোটি টাকা হাতিয়ে নেয় সাঈদ খোকন সিন্ডিকেট
সাবেক মেয়র সাঈদ খোকন ও রাজধানীর ফুলবাড়িয়া সুপার মার্কেটের সভাপতি দেলোয়ার হোসেন
রাজধানীর ফুলবাড়িয়া সুপার মার্কেটে (ব্লক ২) নকশা বহির্ভূত অবৈধ দোকান বরাদ্দ দিয়ে সাঈদ খোকনের সিন্ডিকেট কোটি টাকা হাতিয়ে নেন বলে আদালতে জবানবন্দি দিয়েছেন মামলার বাদী ও মার্কেটের সভাপতি দেলোয়ার হোসেন। এসময় তিনি আদালতকে বলেন, গত ২০১৭ সালে সাবেক প্রধান রাজস্ব কর্মকর্তা ইউসুফ আলী সরকার দোকান বরাদ্দ নেওয়ার জন্য তাকে অপহরণের উদ্দেশ্যে বনানী সুপার মার্কেট নিয়ে যায়।
মঙ্গলবার (২৯ ডিসেম্বর) ঢাকার অতিরিক্ত চিফ মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট আশেক ইমামের আদালতে বাদী দেওয়া জবানবন্দি থেকে এসব তথ্য জানা গেছে।
বিজ্ঞাপন
জবানবন্দিতে বাদী বলেন, গত ২০১৭ সালে মামলার বাদী ও মার্কেটের সভাপতি দেলোয়ার হোসেনকে সাবেক প্রধান রাজস্ব কর্মকর্তা ইউসুফ আলী সরকার দোকান বরাদ্দ নেওয়ার জন্য কিডন্যাপের উদ্দেশ্যে বনানী সুপার মার্কেট নিয়ে যায়। ওইখানে নিয়ে ইউসুফ আলী বাদীকে বলেন, ‘আমি মেয়র সাহেবকে বলে দোকান বরাদ্দের একটি ব্যবস্থা করে দেব। তখন আমি বললাম, বিষয়টি আমি সভাপতি হিসেবে একা সিদ্ধান্ত নিতে পারব না। সিদ্ধান্ত নিতে হলে অন্যান্য মালিকদের সঙ্গে কথা বলতে হবে। ওইখানে আমাকে দোকান বরাদ্দ দেওয়ার জন্য অনেক হুমকি-ধমকি দেওয়া হয়। এ ঘটনায় আমি একটি জিডিও করতে পারি নাই। পরে জানতে পারি অন্যান্য ক্ষুদ্র দোকান মালিকদের সঙ্গে মেয়র সাঈদ খোকনের লোকজন যোগাযোগ করে কিছু টাকা পয়সা নিয়ে গেছে। এরপর আমি তাদের বললাম, তোমরা এভাবে টাকা দিচ্ছ যে এটার তো কোনো ডকুমেন্ট নেই। টাকা দেওয়ার একটা ডকুমেন্ট রাখ। পরে আমরা সব দোকান মালিক বসে একটি সিদ্ধান্ত নেই, সব দোকান মালিক একটি অ্যাকাউন্টে টাকা দেবে। তা পরে আমরা মেয়র সাঈদ খোকনসহ অন্যদের অ্যাকাউন্টে দেব। আমরা এ শর্তে সর্বমোট ৩৪ কোটি ৯৪ লাখ টাকা নামে-বেনামে সাঈদ খোকনের লোকদের দোকান বরাদ্দের জন্য দেই।’
মামলায় বাদী জবানবন্দিতে আরও বলেন, সাঈদ খোকন, প্রধান রাজস্ব কর্মকর্তা ইউসুফ আলী সরকার এবং উপ-সহকারী প্রকৌশলী মাজেদ যোগসাজশে ও অন্যান্য আসামি মিলে দোকান বরাদ্দের নাম করে নকশা বহির্ভূত অবৈধ বরাদ্দ দেন। কিন্তু বর্তমান মেয়র ক্ষমতায় এসে নকশা বহির্ভূত অবৈধ অংশ ভেঙে ফেলে। অনেক দোকানের মালিক গ্রাম থেকে জমিজমা বিক্রি করে এ দোকান বরাদ্দ নেন। এতে অসহায় অনেক দোকান মালিক ক্ষতিগ্রস্ত হয়।
বিজ্ঞাপন
মামলায় সাঈদ খোকন ছাড়া অপর আসামিরা হলেন, সাবেক প্রধান রাজস্ব কর্মকর্তা ইউসুফ আলী সরকার, উপ-সহকারী প্রকৌশলী মাজেদ, কামরুল হাসান, হেলেনা আক্তার, আতিকুর রহমান স্বপন ও ওয়ালিদ।
এদিন ঢাকার অতিরিক্ত চিফ মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট আশেক ইমামের আদালত বাদীর জবানবন্দি গ্রহণ করেন। এছাড়া নথী পর্যালোচনায় আদেশ পরে দেবেন বলেন জানান তিনি।
টিএইচ/এমএইচএস