মুজিববর্ষ উপলক্ষ্যে ‘স্বাধীনতা ও বঙ্গবন্ধুর স্বপ্নের সোনার বাংলা’ ওয়েবিনার

বাংলাদেশের উন্নয়ন বিশ্বের উন্নয়নশীল দেশগুলোর জন্য একটি অনুকরণীয় দৃষ্টান্ত বলে মন্তব্য করেছেন ফিলিস্তিনের পররাষ্ট্রমন্ত্রী রিয়াদ আল মালিকী।

মঙ্গলবার (২৯ ডিসেম্বর) মুজিববর্ষ উপলক্ষ্যে ‘স্বাধীনতা ও বঙ্গবন্ধুর স্বপ্নের সোনার বাংলা’ শীর্ষক এক ওয়েবিনারের অংশ নিয়ে তিনি এ মন্তব্য করেন।

ফিলিস্তিনের সঙ্গে বঙ্গবন্ধুর সম্পর্ক টেনে দেশটির পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, ‘দখল ও বৈষম্যের বিরুদ্ধে বহু বছরের সংগ্রামের কারণে বঙ্গবন্ধু আমাদের ফিলিস্তিনি ভাইদের বেদনা দৃঢ়ভাবে অনুধাবন করেছিলেন। ১৯৭৪ সালে যখন বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান প্রথমবারের মতো জাতিসংঘের সাধারণ অধিবেশনে বক্তব্য রাখেন, সেখানেও তিনি ফিলিস্তিনের প্রতি সমর্থন ব্যক্ত করেন।’

‘ফিলিস্তিনের প্রতি বঙ্গবন্ধুর সেই সমর্থনের ঘোষণায় আজও বাংলাদেশ অবিচল রয়েছে। শেখ মুজিবুর রহমানের স্বপ্নের সোনার বাংলার বাস্তবায়ন দৃশ্যমান হওয়া ফিলিস্তিনের জনগণের জন্য উৎসাহের বিষয়।’ 

বাংলাদেশ একটি মানবিক রাষ্ট্র হিসেবে সব সময়ই বিশ্বের নির্যাতিত মানুষের পাশে থেকেছে বলে মন্তব্য করেন ফিলিস্তিনের পররাষ্ট্রমন্ত্রী মালিকী।

ফিলিস্তিনের জনগণের অধিকারের প্রতি প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ভ্রাতৃত্ববোধের প্রশংসা করেন তিনি।

বাংলাদেশের পররাষ্ট্র সচিব মাসুদ বিন মোমেনের সঞ্চলনায় ভার্চুয়াল অনুষ্ঠানে পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. এ কে আব্দুল মোমেন, রাষ্ট্রদূত নাহিদা সোবহান, প্রধানমন্ত্রীর বিশেষ সহকারী শাহ আলি ফরহাদ ও মুক্তিযুদ্ধ জাদুঘরের ট্রাস্টি মফিদুল হক ওয়েবিনারে বক্তব্য রাখেন।

পররাষ্ট্রমন্ত্রী তার বক্তব্যে বলেন, ‘প্রধানমন্ত্রীর হাত ধরে বাংলাদেশ আজ শিক্ষা, স্বাস্থ্য, কৃষি, তথ্য, প্রযুক্তি, নারীর ক্ষমতায়ন ইত্যাদিসহ বিভিন্ন ক্ষেত্রে উন্নয়নের রোল মডেল হিসেবে বিবেচিত হচ্ছে। বাংলাদেশের পোশাক রপ্তানি খাত বিশ্ব অর্থনীতিতে দ্বিতীয় অবস্থানে রয়েছে। আমরা এখন খাদ্য ও মাছ উৎপাদনে স্বয়ংসম্পূর্ণ। ক্ষুধার কারণে এখানে কেউ মারা যায় না। বাংলাদেশ ইতোমধ্যে সফলভাবে এমডিজির লক্ষ্যসমূহ অর্জন করেছে এবং বর্তমানে টেকসই উন্নয়ন লক্ষ্য (এসডিজি) অর্জনে প্রতিশ্রুতিবদ্ধ।’

রাষ্ট্রদূত নাহিদা সোবহান স্বাগত বক্তব্যে জানান, বঙ্গবন্ধুর চেতনা ও আদর্শকে বিশ্বে ছড়িয়ে দিতে আম্মান দূতাবাস বছর জুড়ে একাধিক সেমিনারের পরিকল্পনা করেছে। তারই অংশ হিসেবে আয়োজিত প্রথম সিমানারটি নিঃসন্দেহে বিশেষ গুরত্ব বহন করে।

রাষ্ট্রদূত বলেন, ‘বাংলাদেশ সব সময়ই তার সাফল্য ও সমৃদ্ধি লাভের ক্ষেত্রে ভ্রাতৃপ্রতিম দেশগুলোকে সঙ্গে পেয়েছে। তাই বঙ্গবন্ধুর জন্মশতবর্ষে আজকের সোনার বাংলার সাফল্য গাঁথার আনন্দঘন উদযাপনে জর্ডান ও ফিলিস্তিনের জনগণকে উন্নয়নের অংশীদার হিসেবে বিবেচনা করা হচ্ছে।’

প্রধানমন্ত্রীর বিশেষ সহকারী শাহ আলী ফরহাদ বলেন, ‘বাংলাদেশের উন্নয়নের অবিসংবাদিত নেতা প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। তিনি বঙ্গবন্ধুর স্বপ্নের সোনার বাংলা বাস্তবায়নের সফল কারিগর। যে স্বপ্ন একদিন বঙ্গবন্ধু দেখেছিলেন তারই সুযোগ্য কন্যা আজ তার বাস্তবায়নে নিরলসভাবে কাজ করে যাচ্ছেন।’

মুক্তিযুদ্ধ জাদুঘরের ট্রাস্টি মফিদুল হক মুক্তিযুদ্ধে বঙ্গবন্ধুর অবিস্মরণীয় নেতৃত্বের কথা তুলে ধরেন এবং একটি স্বাধীন সার্বভৌম রাষ্ট্রের জন্য বঙ্গবন্ধুর যে আকাঙ্ক্ষা, যে স্বপ্নের বাংলাদেশ বঙ্গবন্ধু দেখতে চেয়েছিলেন তা বাস্তবায়নে দলমত নির্বিশেষে একই জাতীয়তা বোধ ও চেতনায় উদ্বুদ্ধ হওয়ার আহ্বান জানান। 

পররাষ্ট্র সচিব মাসুদ বিন মোমেন সমাপনী বক্তব্য রাখেন। তিনি বলেন, ‘বঙ্গবন্ধু একটি স্বপ্নের নাম। বাংলাদেশকে বিশ্বের মানচিত্রে স্থান করে দিয়েছেন তিনি। স্বাধীন রাষ্ট্রের শুরুতেই বঙ্গবন্ধু বাংলাদেশের কূটনীতিক আদর্শ নির্ধারণ করে দিয়েছিলেন। একজন সফল স্বপ্নদ্রষ্টার কারণেই পৃথিবীর বিভিন্ন প্রান্তে আত্মপ্রত্যয় ও আপন মহিমায় আজ উড়ে চলেছে লাল সবুজের পতাকা।’

এনআই/এইচকে