কেমিক্যাল গোডাউন সরানো না হলে এমন ঘটনার পুনরাবৃত্তি ঘটবে
আরমানিটোলায় অগ্নিকাণ্ড প্রসঙ্গে ঢাকা জেলা প্রশাসক ও জেলা ম্যাজিস্ট্রেট মো. শহিদুল ইসলাম বলেছেন, যতদিন পর্যন্ত কেমিক্যাল গোডাউন স্থানান্তর করা না হবে ততদিন এ ধরনের ঘটনার পুনরাবৃত্তি হবে।
শুক্রবার (২৩ এপ্রিল) বেলা ২টায় শেখ হাসিনা জাতীয় বার্ন ও প্লাস্টিক সার্জারি ইনস্টিটিউটে অগ্নিকাণ্ডে আহতদের দেখতে এসে ঢাকা পোস্টকে এ কথা বলেন তিনি।
বিজ্ঞাপন
শহিদুল ইসলাম বলেন, যে ঘটনাটি ঘটেছে এটি খুবই দুঃখজনক। এই অনাকাঙ্ক্ষিত ঘটনা কাম্য নয়। আমরা আহত ও নিহতদের পরিবারের প্রতি সমবেদনা জানাচ্ছি। এখানে ২১ জন চিকিৎসা নিচ্ছেন। এর মধ্যে একজন চিকিৎসা নিয়ে চলে গেছেন। চারজন আইসিইউতে এবং ১৬ জন বিভিন্ন ওয়ার্ডে চিকিৎসাধীন।
বিজ্ঞাপন
তিনি বলেন, সরকারের পক্ষ থেকে তাৎক্ষণিকভাবে তাদের দাফন-কাফন ও চিকিৎসার জন্য আর্থিক সহায়তা দেওয়া হয়েছে। এর মধ্যে নিহতদের পরিবারকে ২৫ হাজার এবং আহতদের ১৫ হাজার টাকা করে দিয়েছি। ফায়ার সার্ভিসের চারজন সদস্য আহত হয়েছেন। তাদের মধ্যে একজন পঙ্গু হাসপাতালে চিকিৎসা নিচ্ছেন। আপনারা জানেন ঘটনার সময় সবাই ঘুমের মধ্যে ছিল। বিষাক্ত কেমিক্যালের ধোঁয়ায় মূলত তাদের শ্বাসনালী পুড়ে গেছে।
যারা এই কেমিক্যাল গোডাউন করেছে তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হবে কি না এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, আমরা তার লাইসেন্স বাতিল করব। তার কোনো গাফিলতি ছিল কি না সে বিষয়ে খতিয়ে দেখা হচ্ছে। এ ধরনের কেমিক্যাল গোডাউন যাদের আছে তাদের বিরুদ্ধে ভ্রাম্যমাণ আদালত পরিচালনা করে জেল-জরিমানার ব্যবস্থা করব। এখনো কী পরিমাণ কেমিক্যাল সেখানে মজুদ রয়েছে এ বিষয়ে বিস্ফোরক অধিদফতর খতিয়ে দেখছে।
তিনি বলেন, কেমিক্যাল বিষাক্ত জিনিস। তাই যতদিন এ ধরনের গোডাউন আবাসিক এলাকা থেকে সরানো না হবে ততদিন এ ধরনের ঘটনার পুনরাবৃত্তি ঘটবে।
উল্লেখ্য, বৃহস্পতিবার (২২ এপ্রিল) দিবাগত রাত ৩টা ১৮ মিনিটে আরমানিয়ান স্ট্রিটের হাজী মুসা ম্যানসনে আগুনের সূত্রপাত ঘটে। শুক্রবার (২৩ এপ্রিল) সকাল সাড়ে ৬টার দিকে ফায়ার সার্ভিসের ১৯টি ইউনিটের চেষ্টায় আগুন নিয়ন্ত্রণে আসে। ওই ভবনের দোতলা থেকে পাঁচতলা পর্যন্ত লোকজন বসবাস করে। আগুন লাগার পর ভবনের ছাদে কিছু লোক আটকা পড়েন। আগুনের ঘটনায় এখন পর্যন্ত চারজন মারা গেছেন। এ ঘটনায় আহত হন আরও ২১ জন।
আহতরা হলেন : আশিকুজ্জামান (৩৩), তার স্ত্রী ইসরাত জাহান মুনা (৩০), শ্বশুর ইব্রাহিম সরকার (৬০), শাশুড়ি সুফিয়া বেগম (৫০), শ্যালক জুনায়েদ (২০), মোস্তফা (৪০), ইউনুস মোল্লা (৬০), সাকিব হোসেন (৩০), সাখাওয়াত হোসেন (২৭), সাফায়েত হোসেন (৩৫), চাষমেরা বেগম (৩৩), দেলোয়ার হোসেন (৫৮), আয়সাপা (২), খোরশেদ আলম (৫০), লায়লা বেগম (৫৫), মোহাম্মদ ফারুক (৫৫), মেহেরুন্নেসা (৫০), মিলি (২২), পাবিহা (২৬),আকাশ (২২) ও আসমা সিদ্দিকা (৪৫)। এদের মধ্যে চারজনকে আশঙ্কাজনক অবস্থায় আইসিইউতে ভর্তি করা হয়েছে। বাকি ১৬ জন বিভিন্ন ওয়ার্ডে ভর্তি আছেন। এছাড়া মোস্তফা নামে একজন চিকিৎসা নিয়ে চলে গেছেন।
এসএএ/এসকেডি/জেএস