আরমানিটোলায় অগ্নিকাণ্ড
রাসায়নিকের বিষাক্ত ধোঁয়ায় মারা যান চারজন
রাজধানীর আরমানিটোলার হাজী মুসা ম্যানশনের অগ্নিকাণ্ডে বিষাক্ত ধোঁয়ায় চারজন নিহত হয়েছেন বলে মামলার এজাহারে উল্লেখ করেছেন বাদী। এ দুর্ঘটনায় আহত হয়েছেন আরও ২১ জন। এর মধ্যে চারজনের অবস্থা গুরুতর।
শুক্রবার (২৩ এপ্রিল) রাত ৯টায় বংশাল থানার উপপরিদর্শক মোহাম্মদ আলী শিকদার বাদী হয়ে মামলাটি করেন। মামলা আসামি করা হয় ভবন মালিক মোস্তফা আহম্মেদ এবং কেমিক্যাল গোডাউনের মালিকদের।
বিজ্ঞাপন
মামলার বাদী এজাহারে অভিযোগ করে বলেন, বৃহস্পতিবার দিবাগত রাত ৩টার দিকে হাজী মুসা ম্যানশনের নিচতলায় আগুন লাগে। ফায়ার সার্ভিসের ১৯টি টিম প্রায় সাড়ে ছয় ঘণ্টা চেষ্টা করে আগুন নিয়ন্ত্রণে আনে। আগুন নিয়ন্ত্রণে আনার পর ফায়ার সার্ভিসের কর্মীরা থানা পুলিশের সহায়তায় ভবনের ভেতর থেকে ২১ জনকে উদ্ধার করে চিকিৎসার জন্য দ্রুত শেখ হাসিনা জাতীয় বার্ন ও প্লাস্টিক সার্জারি ইনস্টিটিউটে প্রেরণ করে। পরবর্তীতে ভবনে তল্লাশি করে তিনজন পুরুষ ও একজন নারীর মরদেহ উদ্ধার করা হয়। নিহত রাসেল (২৮), সুমাইয়া (২২), অলিউল্লাহ (৪৫) ও কবিরের (৪০) মরদেহের সুরতহাল রিপোর্ট প্রস্তুত করে মৃত্যুর সঠিক কারণ নির্ণয়ের জন্য ফরেনসিক বিভাগে পাঠানো হয়।
বিজ্ঞাপন
এজাহারে আরও বলা হয়, ‘মুসা ম্যানশনের মালিক মোস্তফা আহম্মেদসহ অন্যান্য কেমিক্যাল ব্যবসায়ীরা ভবনের নিচতলায় দাহ্য পদার্থ এবং কেমিক্যাল সংরক্ষণের জন্য দোকান/গোডাউন হিসেবে তাচ্ছিল্যভাবে ব্যবহার করেন। কেমিক্যালের দোকান/গোডাউনের আগুন লাগার ফলে কেমিক্যালের বিষাক্ত ধোঁয়ায় শ্বাসরুদ্ধ হয়ে ও আগুনে দগ্ধ হয়ে চারজনের মৃত্যু হয়। ওই বাড়িতে বসবাসরত আবাসিক ভাড়াটিয়াদের বিভিন্ন আসবাবপত্র আগুনে পুড়ে ও ভাঙচুর হয়ে আনুমানিক ৫০ লাখ টাকার ক্ষতি হয়েছে। আসামিরা তাচ্ছিল্যভাবে মানুষের জীবন বিপন্ন হতে পারে জেনেও অবৈধভাবে লাভবান হওয়ার জন্য আবাসিক ভবনে দাহ্য পদার্থ ও কেমিক্যাল সংরক্ষণ করেন।
মামলার বিষয়ে বংশাল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) শাহীন ফকির বলেন, অবহেলাজনিত মৃত্যু এবং অবৈধভাবে রাসায়নিক দ্রব্য রাখার অভিযোগে ভবন মালিক ও গোডাউন মালিকদের বিরুদ্ধে পুলিশ বাদী হয়ে মামলাটি দায়ের করেছে। বিষয়টি নিয়ে তদন্ত চলছে। জড়িতদের গ্রেফতারের চেষ্টা করা হচ্ছে।
তিনি বলেন, আমরা প্রথমে অপেক্ষা করেছিলাম যে, অগ্নিকাণ্ডে নিহত ও আহতদের পরিবারের সদস্যরা মামলা করেন কি-না। কিন্তু স্বজনরা মামলা করার বিষয়ে সিদ্ধান্তে আসতে পারেননি। চারজন নিহত এবং ২১ জন আহত হয়ে ঘটনাটি বড় আকার ধারণ করায় পুলিশ বাদী হয়ে রাত ৯টার দিকে মামলাটি করে। মামলায় আসামিরা হলেন ভবনের মালিক মোস্তফা আহম্মেদ এবং কেমিক্যাল গোডাউনের মালিকরা।
উল্লেখ্য, বৃহস্পতিবার (২২ এপ্রিল) দিবাগত রাত ৩টা ১৮মিনিটে আরমানিয়ান স্ট্রিটের হাজী মুসা ম্যানশনে আগুনের সূত্রপাত ঘটে। ফায়ার সার্ভিসের ১৯টি ইউনিটের চেষ্টায় হাজী মুসা ম্যানশনে লাগা আগুন শুক্রবার (২৩ এপ্রিল) সকাল সাড়ে ৬টার দিকে নিয়ন্ত্রণে আসে। এ ঘটনায় চারজনের মৃত্যু হয়।
এমএসি/এসকেডি