কালভার্ট থেকে ময়লা তোলা হচ্ছে

বর্জ্য অপসারণ কার্যক্রমের প্রথমদিনে পান্থপথ বক্স কালভার্টের পাঁচটি ড্রেনেজ পিট থেকে ৭৪ টন বর্জ্য অপসারণ করা হয়েছে।

শনিবার (০২ জানুয়ারি) রাজধানীর পান্থকুঞ্জ পার্ক থেকে পান্থপথ বক্স কালভার্ট পর্যন্ত বর্জ্য অপসারণের মাধ্যমে পানি প্রবাহ সৃষ্টির লক্ষ্যে পরিষ্কার কার্যক্রম পরিচালিত হয়।

কার্যক্রম পরিদর্শনে যান ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের (ডিএসসিসি) প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা এ বি এম আমিন উল্লাহ নুরী এবং প্রধান বর্জ্য ব্যবস্থাপনা কর্মকর্তা এয়ার কমডোর মো. বদরুল আমিন। 

ডিএসসিসির প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা এ বি এম আমিন উল্লাহ নুরী বলেন, আপনারা জানেন গত ৩১ ডিসেম্বর ঢাকা ওয়াসা থেকে সব খাল ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশন ও উত্তর সিটি করপোরেশনের কাছে হস্তান্তর করা হয়েছে। ডিএসসিসির মেয়রের নির্দেশনা অনুযায়ী আমরা কাল-বিলম্ব না করে আজ থেকে কাজ শুরু করেছি। প্রাথমিকভাবে আমরা পান্থপথ কালভার্ট থেকে বর্জ্য অপসারণ কাজ শুরু করেছি। এরপর আমরা সেগুনবাগিচা কালভার্ট থেকে বর্জ্য অপসারণ কার্যক্রম পরিচালনা করব। পাশাপাশি আমাদের জিরানী, মান্ডা ও শ্যামপুর খালে প্রাথমিক পরিচ্ছন্নতা কাজ চলছে। তারপর সীমানা নির্ধারণ ও উচ্ছেদ কার্যক্রম পরিচালনা করব। 

শুরু হওয়া কার্যক্রমের মাধ্যমে এই কালভার্টের ভেতরে কি আছে তা দেখার পর পরবর্তী কর্মপরিকল্পনা নির্ধারণ করা হবে জানিয়ে ডিএসসিসির প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা বলেন, আমরা মার্চের মধ্যে এ দুটি বক্স কালভার্ট ও তিনটি খাল থেকে বর্জ্য অপসারণ কার্যক্রম শেষ করতে চাই। যাতে করে আমরা এপ্রিলের শুরুতে ঢাকা শহরকে জলাবদ্ধতা থেকে মুক্তি দিতে পারি। সে পরিকল্পনা নিয়েই আমরা কাজ শুরু করেছি। আশা করছি, মার্চের মধ্যে আমরা তিনটি খাল এবং দুটো কালভার্ট পরিপূর্ণভাবে পরিষ্কার করতে পারব। যদি আমরা এ সময়ের মধ্যে খাল এবং কালভার্ট পরিষ্কার করতে পারি, তাহলে আমরা বিশ্বাস করি, এ বছর আমরা জলাবদ্ধতা থেকে মুক্তি পাব।

পরিষ্কার করা হচ্ছে কালভার্ট

এ সময় সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে ডিএসসিসির প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা আমিন উল্লাহ নুরী বলেন, আমরা আজ থেকে যে কাজ শুরু করেছি, তা শুধু করপোরেশনের সক্ষমতার ওপর ভিত্তি করে। আমাদের কিছু সক্ষমতা রয়েছে, তারপরও দীর্ঘদিন ধরে যেহেতু এই কাজগুলো ওয়াসার হাতে ছিল, তাই আমরা ওয়াসার কারিগরি সহযোগিতা নেবো। ওয়াসার সঙ্গে আমাদের যে সমঝোতা স্মারক স্বাক্ষরিত হয়েছে, সে অনুযায়ী আমরা শুরুতে ওয়াসার কারিগরি সহযোগিতা, যন্ত্রপাতি ও জনবল সহযোগিতা নেবো। ওরা দু'বছর আমাদের সঙ্গে কাজ করবে, পর্যায়ক্রমে আমরা সক্ষমতা অর্জন করব। 

প্রধান বর্জ্য ব্যবস্থাপনা কর্মকর্তা এয়ার কমডোর মো. বদরুল আমিন সাংবাদিকদের এক প্রশ্নে জানান, পান্থকুঞ্জ পার্কের ভেতরে যে বক্স কার্লভার্ট রয়েছে সেটির গভীরতা দুই রকম। কোথাও ১১ ফিট আবার কোথাও ২০-২২ ফিট। আমরা কারিগরি কমিটির সহযোগিতায় সঠিক মাপটা বের করব।

কেবল মুখ (ড্রেনেজ পিট) পরিষ্কার করাটা বক্স কালভার্টের অভ্যন্তরে পানিপ্রবাহ সৃষ্টিতে কতটা ফলপ্রসূ হবে, সাংবাদিকদের এমন প্রশ্নের জবাবে বদরুল আমিন বলেন, শুধু কালভার্ট (ড্রেনেজ পিট) পরিষ্কার করলে হবে না। ভেতরে লোক প্রবেশ করাতে হবে। মেশিন প্রবেশ করাতে হবে। ক্রেন প্রবেশ করাতে হবে। প্রেসার দিয়ে পানি দিতে হবে। সাকার মেশিন ব্যবহার করতে হবে। সাকশন করে উঠাতে হবে। আমরা দেখলাম, কাল কালভার্টের ভেতরের কানেকশন মুখগুলো বন্ধ হয়ে গেছে, সে মুখগুলো ছাড়াতে হবে। আমরা ২০০ মিটার করে এগোবো। পরিষ্কার কার্যক্রম চলছে।

কালভার্টের ওপর কোনো অবৈধ স্থাপনা নেই জানিয়ে প্রধান বর্জ্য ব্যবস্থাপনা কর্মকর্তা বলেন, কালভার্টের ওপর কোনো অবৈধ স্থাপনা নেই। সীমানা নির্ধারণ করে বোঝা যাবে কালভার্টের বাইরে কোনো অবৈধ স্থাপনা আছে কিনা। কালভার্টের ভেতর কোনো স্থাপনা নেই।

পান্থপথ বক্স কালভার্টে মোট ২৪টি মুখ (ড্রেনেজ পিট) রয়েছে। এর মধ্যে প্রথম দিনে সন্ধ্যা ৬টা পর্যন্ত পাঁচটি ড্রেনেজ পিট থেকে বর্জ্য অপসারণ করা হয়েছে। এ সময় পাঁচটি ড্রেনেজ পিট থেকে ছয় ট্রিপে প্রায় ৭৪ টন বর্জ্য অপসারণ করা হয়েছে। সোমবার (০৩ ডিসেম্বর) দিনের বেলা পান্থকুঞ্জ পার্কের ভেতরে এবং রাতে কাঁঠালবাগান ঢাল থেকে পান্থপথ মোড় পর্যন্ত পিটগুলোর মধ্যবর্তী অংশে ড্রেজারের মাধ্যমে বর্জ্য অপসারণ করা হবে।

এ সময় অন্যান্যের মধ্যে ১৬ নং ওয়ার্ডের কাউন্সিলর মোহাম্মদ নজরুল ইসলাম বাবলা ও ২১ নং ওয়ার্ডের কাউন্সিলর মোহাম্মদ আসাদুজ্জামান আসাদ উপস্থিত ছিলেন।

এএসএস/জেডএস