বঙ্গবন্ধুর স্বদেশ প্রত্যাবর্তন দিবসের আলোচনা সভায় বক্তব্য রাখছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা

করোনার সংক্রমণ আগামী মার্চ মাসে ‘একটা ধাক্কা’ দিতে পারে বলে আশঙ্কা প্রকাশ করেছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। তিনি বলেন, ‘আপনারা জানেন, মার্চ মাসে করোনাভাইরাস আমাদের সবচেয়ে বেশি ক্ষতি করেছিল। সেই সময় কিন্তু সামনে, আবারও একটা ধাক্কা দিতে পারে।’ 

রোববার (১০ জানুয়ারি) জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের স্বদেশ প্রত্যাবর্তন দিবস উপলক্ষে আওয়ামী লীগ আয়োজিত আলোচনা সভায় তিনি এ আশঙ্কার কথা জানান।

প্রধানমন্ত্রী বলেন, করোনাভাইরাস আমাদের অগ্রযাত্রা কিছুটা ব্যাহত করেছে, তাতে সন্দেহ নেই। ইতোমধ্যে ভ্যাকসিন ক্রয়ের সমস্ত ব্যবস্থা আমরা করে ফেলেছি, ইনশাল্লাহ এসে যাবে।

স্বাধীনতাকে যারা ব্যর্থ করতে চেয়েছিল, আজ তারাই ব্যর্থ। আজ স্বাধীন দেশ হিসেবে সারাবিশ্বে আমরা যে মর্যাদা পাচ্ছি, এ মর্যাদা ধরে রেখে আমরা বাংলাদেশকে আরও সামনে এগিয়ে নিয়ে যাব। জাতির পিতার স্বপ্নের সমৃদ্ধ ও উন্নত সোনার বাংলা আমরা গড়ে তুলব— এই প্রতিজ্ঞা রইল

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা

‘তারপরও বলব সবাইকে, স্বাস্থ্য সুরক্ষা মেনে চলতে হবে। এটি মেনে নিজেকে রক্ষা করতে হবে, অন্যকে রক্ষা করতে হবে। এটাই হচ্ছে সবচেয়ে বড় ভ্যাকসিন। সবাইকে মাস্ক পরা, হাত ধোয়া, পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন থাকা, ভিটামিন সি ও ডি, এ ধরনের খাবার খাওয়া; এগুলো আমাদের সবাইকে মানতে হবে।’ 

বঙ্গবন্ধুর স্বদেশ প্রত্যাবর্তন দিবস উপলক্ষে আওয়ামী লীগের আলোচনা সভা

তিনি বলেন, এগুলো মেনেই কিন্তু করোনাভাইরাসকে আমরা কিছুটা নিয়ন্ত্রণে রাখতে পেরেছি। আপনারা জানেন, মার্চ মাসে করোনাভাইরাস আমাদের সবচেয়ে বেশি ক্ষতি করেছিল। সেই সময় কিন্তু সামনে, আবারও একটা ধাক্কা দিতে পারে।

রাজধানীর বঙ্গবন্ধু অ্যাভিনিউয়ে অবস্থিত আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে আয়োজিত আলোচনা সভায় গণভবন থেকে ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে যোগ দেন প্রধানমন্ত্রী।

প্রধানমন্ত্রী বলেন, বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান যে জাতীয় ঐক্যের ডাক দিয়ে দ্বিতীয় বিপ্লবের কর্মসূচি দিয়েছিলেন এবং সেই ব্রিটিশ আমল থেকে তৈরি করা যে শাসনব্যবস্থা, তার আমূল পরিবর্তন করে গণমুখী ব্যবস্থা তিনি করার পদক্ষেপ নিয়েছিলেন। সেটা যদি করে যেতে পারতেন তাহলে পরবর্তী পাঁচ বছরের মধ্যে বাংলাদেশ ক্ষুধা ও দারিদ্র্যমুক্ত সোনার বাংলা হিসেবে গড়ে উঠতে পারত; এটা নিয়ে কোনো সন্দেহ নেই।

করোনাভাইরাস আমাদের অগ্রযাত্রা কিছুটা ব্যাহত করেছে, তাতে সন্দেহ নেই। ইতোমধ্যে ভ্যাকসিন ক্রয়ের সমস্ত ব্যবস্থা আমরা করে ফেলেছি, ইনশাল্লাহ এসে যাবে

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা

শেখ হাসিনা বলেন, ‘আজ রাষ্ট্রপরিচালনা করতে গিয়ে যখন দেখি, প্রতিটা ক্ষেত্রে তিনি ভীত তৈরি করে গেছেন। আমার অবাক লাগে, এত অল্প সময়ের মধ্যে এত আইন, এত নীতিমালা, এত কাজ তিনি কীভাবে করেছেন, এটা একটা বিস্ময়। এটা যদি গবেষণা করেন তাহলে আপনারা দেখতে পাবেন।’

তিনি বলেন, বাংলাদেশের মানুষ মাথা উঁচু করে চলুক, সম্মান নিয়ে চলুক— এটা আমাদের স্বাধীনতাবিরোধী পরাজিত শক্তি কখনও চাইনি। এ কারণে তারা জাতির পিতাকে শুধু হত্যা করেনি, আমাদের মুক্তিযুদ্ধের সমস্ত আদর্শ বিচ্যুত করেছিল, ইতিহাসকে বিকৃত করেছিল।

বঙ্গবন্ধুর স্বদেশ প্রত্যাবর্তন দিবস উপলক্ষে আওয়ামী লীগের আলোচনা সভা

আওয়ামী লীগ সভাপতি বলেন, আজ আমাদের যে নতুন প্রজন্ম, তাদের একটা আগ্রহ জন্মেছে জানার জন্য। একমাত্র আওয়ামী লীগ দেশের মানুষকে কিছু দিয়েছে, কারণ জাতির পিতার আদর্শ নিয়ে আমরা পথ চলি, তার আদর্শকে সামনে রেখেই আমরা দেশকে এগিয়ে নিয়ে যাই।

তিনি বলেন, অসাম্প্রদায়িক চেতনায় উন্নত ও সমৃদ্ধ সোনার বাংলাদেশ আমরা গড়ে তুলব। স্বাধীনতাকে যারা ব্যর্থ করতে চেয়েছিল, আজ তারাই ব্যর্থ। আজ স্বাধীন দেশ হিসেবে সারাবিশ্বে আমরা যে মর্যাদা পাচ্ছি, এ মর্যাদা ধরে রেখে আমরা বাংলাদেশকে আরও সামনে এগিয়ে নিয়ে যাব। জাতির পিতার স্বপ্নের সমৃদ্ধ ও উন্নত সোনার বাংলা আমরা গড়ে তুলব— এই প্রতিজ্ঞা রইল।

এইউএ/এমএআর