নারায়ণগঞ্জের রূপগঞ্জে সজীব গ্রুপের অঙ্গপ্রতিষ্ঠান হাসেম ফুড অ্যান্ড বেভারেজের ফুডস ফ্যাক্টরিতে (সেজান জুসের কারখানা) লাগা আগুনে ৫২ জন শ্রমিক নিহতের ঘটনায় দোষীদের গ্রেফতার দাবি জানিয়েছে গ্রিন বাংলা গার্মেন্টস ওয়ার্কার ফেডারেশন।

শুক্রবার (৯ জুলাই) সংগঠনটির সভাপতি সুলতানা বেগম ও সাধারণ সম্পাদক মো. ইলিয়াস সই করা বিবৃতিতে এ দাবি জানিয়েছে।

সংগঠনটি হাসেম ফুড অ্যান্ড বেভারেজের মালিকানাধীন সেজান জুস কারখানার অগ্নিকাণ্ডে ৫২ জন শ্রমিক নিহতের ঘটনায় দোষীদের দ্রুত গ্রেফতার, নিহত শ্রমিকের প্রকৃত সংখ্যা প্রকাশ করা, নিহত ও নিখোঁজ শ্রমিকদের আইএলও কনভেনশন ১২১ অনুযায়ী ক্ষতিপূরণ এবং আহত, ক্ষতিগ্রস্ত শ্রমিকদের জন্য জরুরি সহায়তা, বিনামূল্যে চিকিৎসা এবং যথাযথ ক্ষতিপূরণ দাবি করেছে।

সংগঠনটির নেতারা বলেন, নারায়ণগঞ্জের রূপগঞ্জ উপজেলার কর্ণগোপ এলাকায় অবস্থিত হাসেম ফুড অ্যান্ড বেভারেজের ৬তলা কারখানা ভবনে উৎপাদন কার্যক্রম চালু থাকা অবস্থায় বৃহস্পতিবার (৮ জুলাই) বিকেলে অগ্নিকাণ্ডের সূত্রপাত হয়। অগ্নিকাণ্ডের সময় ছয় হাজারের অধিক শ্রমিক কর্মরত ছিল। বিভিন্ন সংবাদ মাধ্যম থেকে জানা যায়, প্রাণ বাঁচাতে ভবনটি থেকে লাফিয়ে পড়েন শ্রমিক স্বপ্না রানী, মিনা আক্তার, মোরসালিন নামের তিন জন। তারা ওই ভবনের তৃতীয় তলা থেকে লাফ দিয়ে নিহত হন। পরবর্তীতে অর্ধশতাধিক লাশ উদ্ধার হয়েছে। যার দায় কলকারখানা পরিদর্শন অধিদফতর কোনোভাবেই এড়াতে পারে না।

এই অগ্নিকাণ্ডকে অব্যবস্থাপনার ফল হিসেবে উল্লেখ করে সংগঠনটির নেতারা বলেছেন, শ্রম আইন বাস্তবায়ন এবং শ্রমিকের সুরক্ষা নিশ্চিত করার দায়িত্বপ্রাপ্ত সরকারি প্রতিষ্ঠানসমূহ মালিকদের স্বার্থরক্ষাকারী প্রতিষ্ঠানে পরিণত হয়েছে। যার ফলে স্পেকট্রাম, তাজরিন, রানাপ্লাজার মতো ঘটনা ঘটার পরও আজও শ্রমিকদের কর্মক্ষেত্র, চাকরি বা জীবনের ন্যূনতম নিরাপত্তা নিশ্চিত করা হয়নি। বৃহস্পতিবার বিকেল সাড়ে পাঁচটার দিকে কারখানার ছয়তলা ভবনের নিচতলা থেকে আগুনের সূত্রপাত ঘটে। অগ্নিকাণ্ডের সময় ওই ছয়তলা ভবনের চারতলার শ্রমিকরা কেউ বের হতে পারেননি। প্রতিদিন চারতলায় ৭০-৮০ জন শ্রমিক কাজ করতেন। চতুর্থ তলার শ্রমিকদের ইনচার্জ মাহবুব, সুফিয়া, তাকিয়া, আমেনা, রাহিমা, রিপন, নাজমুল, মাহমুদ, ওমরিতা, তাছলিমাসহ অসংখ্য শ্রমিক নিখোঁজ। নিখোঁজ স্বজনদের আহাজারিতে চারপাশ ভারি হয়ে ওঠে। ভবনের পঞ্চম তলায় ছিল কেমিক্যালের গোডাউন। শুক্রবার সকালে আগুন নিয়ন্ত্রণের পাশাপাশি উদ্ধার কাজও চালায় ফায়ার সার্ভিস। ছয়তলা ভবনের চারতলা পর্যন্ত অভিযান চালিয়ে ৫২টি লাশ উদ্ধার করা হয়েছে। তবে পুরো ভবনের উদ্ধার কাজ শেষে লাশের সংখ্যা আরও বাড়ার আশঙ্কা রয়েছে।

আরএম/এসএসএইচ