সরকারি জায়গায় অবৈধ স্থাপনা উচ্ছেদ অভিযানে উপস্থিত ছিলেন মেয়র আতিকুল ইসলাম

ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশনের (ডিএনসিসি) মেয়র আতিকুল ইসলাম বলেছেন, ‘অবৈধভাবে ডিএনসিসির বিভিন্ন স্থাপনা দখল করে রাখা কাউকে ছাড় দেওয়া হবে না। যেকোনো সময় এসব অবৈধ স্থাপনা উচ্ছেদ করা হতে পারে। সরকারের বৈধ জায়গা অবৈধভাবে দখল করে রাখলে নোটিশ ছাড়াই উচ্ছেদ করা হবে’

বৃহস্পতিবার (২১ জানুয়ারি) মিরপুর সেকশন ১১ এর অ্যাভিনিউ ৩ এর ৪ নম্বর রোডে অবৈধ স্থাপনা উচ্ছেদ কার্যক্রম প্রসঙ্গে তিনি এ কথা বলেন।

ডিএনসিসির আঞ্চলিক নির্বাহী কর্মকর্তা (অঞ্চল ২) ও নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট এ এস এম সফিউল আজম ও নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট তাজওয়ার আকরাম সাকাপি ইবনে সাজ্জাদ মিরপুরের এই উচ্ছেদ অভিযান পরিচালনা করেন।

অভিযানে ৪ নম্বর সড়কের দুই পাশে প্রায় চার শতাধিক স্থায়ী, অস্থায়ী ও ভাসমান স্থাপনা উচ্ছেদ করা হয়। এর মধ্যে কোনোটি টিনের আবার কোনোটি ইট-সিমেন্টের তৈরি পাকা ঘর, দোকান-পাট, তোরণ, শেড ইত্যাদিও ছিল।

ডিএনসিসি মেয়র আতিকুল ইসলাম সকাল থেকে সন্ধ্যা পর্যন্ত অভিযানস্থলে উপস্থিত থেকে অভিযানে দিকনির্দেশনা দেন।

সাংবাদিকদের ব্রিফিংকালে মেয়র বলেন, ‘এটি দীর্ঘদিনের প্রতীক্ষিত রাস্তা, কিন্তু আমরা এতদিন প্রশস্ত করতে পারিনি। আমরা কালশীর রাস্তা বেশ প্রশস্ত করে নির্মাণ করেছি। আজকে যে রাস্তাটিতে অবৈধ স্থাপনা উচ্ছেদ অভিযান চলেছে, এটি একটি সংযোগ সড়ক। অনেক আগেই এই সড়কটি প্রশস্ত করার কথা থাকলেও আমরা করতে পারিনি। আজকে এই এলাকার জনগণের সহায়তায় এই রাস্তাটি অবৈধ দখলদারদের হাত থেকে উদ্ধার করেছি। এই রাস্তার প্রশস্ততা ৬৫ থেকে ৭৫ ফুট। অবৈধ দখল থেকে উদ্ধার করে এটি আমরা প্রশস্ত করব। এর ফলে মিরপুর থেকে এই রাস্তা দিয়ে খুব সহজে এয়ারপোর্টের দিকে যাওয়া যাবে। এটি হবে একটি কানেকটিং (সংযোগ) রোড।’

মিরপুর সেকশন ১১ এর অ্যাভিনিউ ৩ এর ৪ নম্বর রোডে অবৈধ স্থাপনা উচ্ছেদ

তিনি বলেন, ‘আপনারা দেখেছেন, আমরা কিছুদিন আগে ভাষানটেক বাজার থেকে পকেট গেটের দিকে রাস্তার দুই পাশে বেশ কিছু বাড়িঘর ভেঙে রাস্তাটি প্রশস্ত করেছি। সেখানে এমনকি স্থানীয় ওয়ার্ড কাউন্সিলরের বাড়িও রেহাই পায়নি। পকেট গেটে থাকা যে বাড়িটির কারণে দীর্ঘ যানজট হতো তা কিনে নিয়ে ভেঙে দিয়েছি। এর ফলে সেখানে যে দীর্ঘ যানজট থাকত, এখন তা আর হচ্ছে না। আমাদের আজকের ম্যাসেজ হচ্ছে, অবৈধ দখলদার যে-ই হোক না কেন কাউকে ছাড় দেওয়া হবে না। জনগণের জন্যই এই রাস্তার অবৈধ স্থাপনা উচ্ছেদ করে চওড়া করা হচ্ছে, কারও ব্যক্তি স্বার্থে নয়।’

দখলদারদের নোটিশ দেওয়ার বিষয়ে মেয়র বলেন, ‘সরকারের বৈধ জায়গা অবৈধভাবে দখল করে রাখলে নোটিশ ছাড়াই উচ্ছেদ করা হবে। নোটিশ দিতে গেলে ঢাকা শহরে কোনো কাজ করা যাবে না। অবৈধভাবে দখল করে রাখলে সে জন্য আমি কিংবা সিটি করপোরেশন দায়ী না, বরং যে দখল করে রেখেছে সে-ই দায়ী।’

আতিকুল ইসলাম আরও বলেন, ‘এই সড়কের পূর্ব ও পশ্চিমে দুই দিকেই রাস্তা প্রশস্ত করা হয়েছে, মাঝখানের এই অংশটুকু বাকি ছিল। এই সড়কটি একটি বাইপাস। এটি ওপেন করা হলে খুব সহজেই মিরপুর থেকে উত্তরার দিকে যাওয়া যাবে। এই সড়কের শেষ প্রান্তে থাকা ট্রাক স্ট্যান্ডও সরানো হবে ট্রাক স্ট্যান্ডের জন্য স্থায়ী ব্যবস্থা করা হবে।’

এই উচ্ছেদের পরপরই এই রাস্তা প্রশস্ত করার কাজ শুরু হবে এবং কালশীর প্যারালাল (সমান্তরাল) রোড হিসেবে এটি ব্যবহৃত হবে। এর ফলে বিমানবন্দরের দিকে খুব সহজেই যাওয়া যাবে বলে মেয়র জানান।

উচ্ছেদ অভিযানে অন্যান্যের মধ্যে ডিএনসিসির প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা মো. সেলিম রেজা, প্রধান প্রকৌশলী ব্রিগেডিয়ার জেনারেল আমিরুল ইসলাম, প্রধান সম্পত্তি কর্মকর্তা মো. মোজাম্মেল হক, ৫ নম্বর ওয়ার্ড কাউন্সিলর আব্দুর রউফ নান্নু প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।

এএসএস/এফআর