চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশন নির্বাচনের দিন জাতীয় পরিচয়পত্র ছাড়া ঘোরাঘুরি না করার আহ্বান জানিয়েছেন চট্টগ্রাম মেট্রোপলিটন পুলিশ (সিএমপি) কমিশনার সালেহ্ মোহাম্মদ তানভীর।

তিনি বলেছেন, জাতীয় পরিচয়পত্র হচ্ছে একজন নাগরিকের পরিচয়। যার কাছে পরিচয়পত্র থাকবে, মনে করবো তিনি এখানকার ভোটার এবং তাদের জন্য নির্বাচনের পরিবেশটা আনন্দমুখর হবে। যদি পরিচয়পত্র না থাকে তাদের জন্য চট্টগ্রামের দরজা বন্ধ।

মঙ্গলবার (২৬ জানুয়ারি) বিকেল তিনটায় দামপাড়া পুলিশ লাইন্সে আয়োজিত ব্রিফিংয়ে এসব কথা বলেন সিএমপি কমিশনার সালেহ্ মোহাম্মদ তানভীর। সিটি করপোরেশন নির্বাচনের সার্বিক পরিস্থিতি উপলক্ষে সংবাদ সম্মেলনটি আয়োজন করা হয়।

সালেহ্ মোহাম্মদ তানভীর বলেন, চট্টগ্রামে কয়েকটি বিচ্ছিন্ন ঘটনা ঘটেছে। কিন্তু আমরা যেরকম আশঙ্কা করেছিলাম তা রুখতে পেরেছি। নির্বাচনের দিন কোনো বহিরাগত এসে নির্বাচনে প্রভাব বিস্তার করতে পারবে না।

সিএমপি কমিশনার বলেন, নির্বাচনের দিন সরকারি কর্মদিবস রয়েছে। অনেকে কর্মস্থলে যাবেন। তাদেরও সঙ্গে জাতীয় পরিচয়পত্র রাখার জন্য বলা হচ্ছে। ভোট কেন্দ্রে যারা আসবেন তারাও জাতীয় পরিচয়পত্র সঙ্গে নিয়ে আসবেন। আমরা বহিরাগত ঠেকাতে চাই।

নির্বাচনের দিন সমাবেশ বা বিজয় মিছিল করা যাবে না জানিয়ে সিএমপি কমিশনার সালেহ্ মোহাম্মদ তানভীর বলেন, নির্বাচনকে কেন্দ্র করে একাধিক মিটিং করেছি। বিভিন্ন সংস্থার সঙ্গে সমন্বয় সভা হয়েছে। নির্বাচন বিধিমালা অনুযায়ী, নির্বাচনের দিন থেকে পরবর্তী ৪৮ ঘণ্টা কোনো মিছিল, সমাবেশ বা বিজয় মিছিলের সুযোগ নেই। কোনো প্রকার বিজয় মিছিল করা যাবে না।

‘আমরা ডানেও তাকাবো না, বামেও তাকাবো না। যেই আইনশৃঙ্খলার জন্য থ্রেট হয়ে দাঁড়াবে তাকে কঠোরভাবে দমন করবো’ বলেন সিএমপি কমিশনার।

বিএনপির অভিযোগের বিষয়ে সাংবাদিকের প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, বিএনপি তাদের নেতাকর্মীদের আটকের বিষয়ে যে অভিযোগ করছেন তা মোটেও ঠিক নয়। আমরা নিয়মিত পুলিশি কার্যক্রম পরিচালনা করছি। যারা আটক হয়েছেন বলে জানতে পেরেছি, তারা কোনো না কোনো মামলা বা ওয়ারেন্টের আসামি।

নির্বাচনে মোট ১৮ হাজার আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্য কাজ করবেন। তার মধ্যে প্রায় ৯ হাজার পুলিশ সদস্য। এছাড়া বিজিবিও কাজ করছে বলে জানান সিএমপি কমিশনার।

উপস্থিত ছিলেন সিএমপির অতিরিক্ত কমিশনার (অপরাধ ও অভিযান) এসএম মোস্তাক আহমদ খান, উপ-কমিশনার (সদর) আমির জাফর, চট্টগ্রাম জেলা পুলিশ সুপার এসএম রশিদুল হক।

বুধবার (২৭ জানুয়ারি) সিটি করপোরেশন নির্বাচনে মেয়র পদে সাতজন এবং ৩৯টি সাধারণ ও ১৪টি সংরক্ষিত আসনের বিপরীতে ২২৫ জন প্রার্থীর মধ্যে ভোটের লড়াই হবে।

করোনাভাইরাস সংক্রমণের কারণে প্রায় ১০ মাস পিছিয়ে অনুষ্ঠিতব্য এ নির্বাচনে ইতোমধ্যে সংঘাতে প্রাণ গেছে তিনজনের। কাউন্সিলর প্রার্থীদের নির্বাচনী ক্যাম্প ভাঙচুর, প্রচারণায় হামলাসহ বেশকিছু ঘটনা ঘটেছে। ৭৩৫ কেন্দ্রের মধ্যে ৪১৯টিকে গুরুত্বপূর্ণ কেন্দ্র বলে জানিয়েছেন রিটার্নিং কর্মকর্তা, যা মোট কেন্দ্রের ৫৬ শতাংশ।

এর আগে সবশেষ ২০১৫ সালের ২৮ এপ্রিল অনুষ্ঠিত চট্টগ্রাম সিটির ভোটে সরকার সমর্থক মেয়র ও কাউন্সিলর প্রার্থীদের অনুসারীদের কেন্দ্র দখল ও ব্যালট ছিনতাইয়ের অভিযোগ উঠেছিল।

চট্টগ্রাম/এসএম