স্থানীয় সরকার, পল্লী উন্নয়ন ও সমবায় মন্ত্রী মো. তাজুল ইসলাম বলেছেন, প্রকল্পে অযথা কালক্ষেপণের সুযোগ নেই। নির্দিষ্ট সময়ের মধ্যে কাজ শেষ করতে টাইম লাইন ঠিক করে দেওয়া হচ্ছে এবং সে টাইমলাইন অনুযায়ী শেষ করার নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে।

শনিবার (৬ ফেব্রুয়ারি) রূপগঞ্জে ঢাকা ওয়াসার ‘গন্ধবপুর পানি শোধনাগার’ পরিদর্শন শেষে তিনি এ কথা বলেন।

মন্ত্রী বলেন, সব প্রকল্পের কাজ দ্রুত শেষ করা এবং যৌক্তিক কারণ ছাড়া প্রকল্পের ব্যয় না বাড়ানোর জন্য প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশনা রয়েছে। তবে টেকসই এবং মানসম্মত কাজ করতে গিয়ে কিছু কিছু ক্ষেত্রে প্রকল্পের ব্যয় বাড়ছে। পাঁচ-ছয় বছর আগে নেওয়া প্রকল্প এখন শুরু করতে গিয়ে স্বাভাবিকভাবেই প্রকল্পের খরচ বেড়ে যায়। কারণ ওই সময়ে পণ্যের দাম এবং বর্তমান দামের মধ্যে পার্থক্য থাকে।

রাজধানীতে অবকাঠামো নির্মাণ, ভবনের উচ্চতা, রাজস্ব এবং পানি, বিদ্যুৎসহ অন্যান্য ইউটিলিটি সার্ভিসের মূল্য এলাকা-জোনভিত্তিক নির্ধারিত হওয়া উচিত বলে মন্তব্য করেন স্থানীয় সরকার মন্ত্রী।

মন্ত্রী বলেন, উচ্চবিত্ত এলাকায় বসবাসরত মানুষ এবং কম আয়ের মানুষ সমান সুযোগ-সুবিধা নিয়ে কেন একই মূল্য পরিশোধ করবে। সব জায়গায় সমান মূল্য নির্ধারিত হওয়ায় এক ধরনের বৈষম্য তৈরি হচ্ছে। এজন্য উচ্চবিত্ত এলাকার মানুষের রাজস্বের হার এবং ইউটিলিটি সার্ভিসের মূল্য বাড়ানো উচিত। একই ধরনের রাজস্ব এবং হোল্ডিং ট্যাক্সসহ অন্যান্য ইউটিলিটি সার্ভিসের মূল্য নির্ধারণ যৌক্তিক নয়।

কোভিডকালীন সময়েও প্রকল্পের কাজ শেষ করতে কর্মকর্তা-কর্মচারীরা জীবনের ঝুঁকি নিয়ে কাজ চালিয়ে যাচ্ছেন উল্লেখ করে, ঢাকা নগরীতে পানি সরবরাহ করতে ওয়াসার এই প্রকল্পের কাজ নির্দিষ্ট সময়ের মধ্যে শেষ হবে বলে আশাবাদ ব্যক্ত করেন তিনি।

তাজুল ইসলাম বলেন, পানির ভবিষ্যৎ চাহিদা বিবেচনায় নিয়ে সারাদেশে টেকসই উন্নয়নের পাশাপাশি টেকসই পানি সরবরাহ নিশ্চিত করতে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সরকার নিরলসভাবে কাজ করে যাচ্ছে। চট্টগ্রাম এবং ঢাকায় যে পানির সমস্যা ছিল তা এখন সমাধান হয়েছে। দেশে পানির কোনো সমস্যা থাকবে না।

মন্ত্রী আরও বলেন, পানির স্তর নিচে নামার কারণে সারা পৃথিবীর মতো বাংলাদেশও সার্ফেস ওয়াটারের ওপর বিশেষ গুরুত্ব দিচ্ছে। গন্ধবপুর পানি শোধানাগার থেকে রাজধানীতে পানি নিতে প্রকল্প এবং ডিস্ট্রিবিউশন লাইনের কাজ একইসঙ্গে চলছে। কাজ শেষ হলেই পানি সরবরাহ শুরু হবে।

এলজিইডি’র রাস্তা, ব্রিজ-কালভার্ট নির্মাণ নিয়ে সমালোচনা হয় সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের উত্তরে স্থানীয় সরকার মন্ত্রী বলেন, এলজিইডি যেসব কাজ করে তা লো-কস্টে করে। যে কারণে টেকসই হয় না। তার মন্ত্রণালয়ের অধীন সব প্রতিষ্ঠানের কাজ মানসম্মত এবং টেকসই করতে প্রয়োজনীয় উদ্যোগ নিতে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষকে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।

দুর্নীতি বা অনিয়ম করে নিম্নমানের কাজ করলে কাউকে ছাড় দেওয়া হবে না জানিয়ে মন্ত্রী বলেন, নিম্নমানের কাজের সঙ্গে জড়িত থাকায় এরইমধ্যে অনেক প্রকৌশলীকে সাময়িক বরখাস্ত করা হয়েছে এবং অনেকের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে। ভালো কাজ করতে গেলে চ্যালেঞ্জ আসবে। তবে সেই চ্যালেঞ্জকে উপেক্ষা করে লক্ষ্যপূরণে এগিয়ে যেতে হবে।

পরিদর্শনের সময় ঢাকা ওয়াসার ব্যবস্থাপনা পরিচালক প্রকৌশলী তাকসিম এ খান, স্থানীয় সরকার বিভাগের অতিরিক্ত সচিব মোহাম্মদ ইবরাহীমসহ সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।

এএসএস/এমএইচএন/জেডএস