ছবি : সংগৃহীত

বাংলাদেশ পরিসংখ্যান ব্যুরো (বিবিএস) আগস্ট ও সেপ্টেম্বর ২০২২ মাসের মূল্যস্ফীতির তথ্য একসাথে প্রকাশ করেছে। বিবিএসের তথ্য অনুযায়ী আগস্ট মাসে আমাদের মূল্যস্ফীতি ছিল ৯.৫২ শতাংশ। আর সেপ্টেম্বর মাসে মূল্যস্ফীতি তার তীব্রতা কিছুটা হ্রাস করে দাঁড়িয়েছে ৯.১০ শতাংশে।

চলতি ২০২২ সালের আগস্ট মাসের মূল্যস্ফীতি ১১ বছরের মধ্যে ছিল সর্বোচ্চ। এর আগে ২০১১ সালের মে মাসে সর্বোচ্চ মূল্যস্ফীতি হয়েছিল ১০.২০ শতাংশ। বিবিএসের তথ্য অনুযায়ী ২০১১ সালের মে মাসের পর মূল্যস্ফীতি আর কখনো ৯ শতাংশের সীমা পার করেনি। তবে দুর্ভাবনার বিষয় হলো, সেপ্টেম্বর মাসে খাদ্যের চেয়ে খাদ্য বহির্ভূত পণ্যের মূল্যস্ফীতির হার বেশি।

সেপ্টেম্বরে খাদ্য সামগ্রীতে মূল্যস্ফীতি ছিল ৯.০৮ শতাংশ। আর খাদ্য বহির্ভূত সামগ্রীতে মূল্যস্ফীতি ছিল ৯.১৩ শতাংশ। তবে বিভিন্ন বেসরকারি গবেষণা প্রতিষ্ঠানের জরিপে বাস্তব মূল্যস্ফীতি দুই অঙ্কের চেয়েও বেশি বলে ধারণা করা হচ্ছে।

২০২২-২০২৩ অর্থবছরের বাজেটে প্রাক্কলিত গড় মূল্যস্ফীতির হার হলো ৫.৬ শতাংশ। আগস্টে জ্বালানি তেলের দেড় গুণ মূল্য বৃদ্ধি এবং টাকার বিপরীতে ডলারের অস্বাভাবিক মূল্যবৃদ্ধি হওয়ায় বাজেটে প্রাক্কলিত লক্ষ্যমাত্রায় মূল্যস্ফীতির হার ধরে রাখা যে প্রায় অসম্ভব তা নিয়ে এখন কোনো সংশয় নেই।

আরও পড়ুন : বৈশ্বিক মন্দা ও বাংলাদেশের প্রস্তুতি 

১১ অক্টোবর ২০২২, অক্টোবর ২০২২ মাসের বিশ্ব অর্থনৈতিক দৃষ্টিভঙ্গি (ওয়ার্ল্ড ইকোনমিক আউটলুক) প্রতিবেদন হিসেবে প্রকাশ করেছে আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিল (আইএমএফ)।

প্রতিবেদনে বাংলাদেশ সম্পর্কে আইএমএফের পূর্বাভাস অনুযায়ী, চলতি বছর অর্থাৎ ২০২২ সালে বাংলাদেশের জিডিপির প্রবৃদ্ধি ৭.২ শতাংশ হতে পারে যা লক্ষ্যমাত্রার চেয়ে ০.৩ শতাংশ কম। আর, আগামী ২০২৩ সালে বাংলাদেশের জিডিপির প্রবৃদ্ধি নেমে যাবে ৬ শতাংশে।

অন্যদিকে, ২০২৩ সালে মূল্যস্ফীতি বেড়ে পৌঁছাতে পারে ৯.১ শতাংশে। এছাড়া ২০২১ সালের তুলনায় চলতি বছরে দেশে 'চলতি হিসাবে' এর ঘাটতি বেড়ে দাঁড়াবে জিডিপির ৪.১ শতাংশে। তবে, আগামী ২০২৩ সালে এই ঘাটতি কিছুটা কমে ৩.৮ শতাংশে দাঁড়াতে পারে বলে মনে করছে আইএমএফ।

অনেক সরকারই, মহামারির সাথে লড়াই করার পরে ইতিমধ্যেই প্রচুর ঋণে জর্জরিত। খাদ্য ঘাটতি এবং উচ্চ জ্বালানি খরচের সময়ে তাদের দুর্বলদের সাহায্য করার দিকে মনোনিবেশ করা উচিত, বিস্তৃত ব্যয়ের কর্মসূচিতে নয়।

আইএমএফের প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়েছে যে, জীবনযাত্রার ব্যয়-সংকট, বেশিরভাগ অঞ্চলে আর্থিক অবস্থার কড়াকড়ি, ইউক্রেনে রাশিয়ার আগ্রাসন এবং দীর্ঘস্থায়ী কোভিড-১৯ মহামারির কারণে বৈশ্বিক অর্থনৈতিক কর্মকাণ্ড প্রত্যাশিত-এর চেয়ে তীব্র মন্দার সম্মুখীন হচ্ছে।

মুদ্রাস্ফীতি কয়েক দশকের তুলনায় বেশি। বৈশ্বিক প্রবৃদ্ধি ২০২১ সালে ৬ শতাংশ থেকে ২০২২ সালে ৩.২ শতাংশে এবং ২০২৩ সালে ২.৭ শতাংশে নেমে যাবে। বৈশ্বিক মূল্যস্ফীতি ২০২১ সালের ৪.৭ শতাংশ থেকে ২০২২ সালে ৮.৮ শতাংশে আস্ফালনের জোরালো সম্ভাবনা রয়েছে।

আরও পড়ুন : উন্নয়ন প্রচারের চেয়ে দুর্নীতি রোধ জরুরি 

আইএমএফ মনে করে, মূল্য স্থিতিশীলতা পুনরুদ্ধার করার জন্য প্রয়োজনীয় মুদ্রানীতি অবশ্যই বহাল রাখা দরকার এবং আর্থিক নীতির লক্ষ্য হওয়া উচিত জীবনযাত্রার ব্যয়-চাপ কমানো।

কাঠামোগত সংস্কারগুলো এমন হওয়া দরকার যা উৎপাদনশীলতা বাড়াবে এবং সরবরাহের সীমাবদ্ধতা সহজ করে মূল্যস্ফীতি নিয়ন্ত্রণ করবে। পরিস্থিতির উন্নতিকল্পে আমাদের অধিকতর 'সবুজ শক্তি'-এর উপর নির্ভরতা ও বহুপাক্ষিক সহযোগিতা বাড়ানোর প্রয়োজন রয়েছে।

আইএমএফের প্রকাশিত প্রতিবেদনের দুইদিন পরে অর্থাৎ ১৩ অক্টোবর, ২০২২ আইএমএফের প্রধান ক্রিস্টালিনা জর্জিয়েভা (Kristalina Georgieva) সাংবাদিকদের সাথে কথা বলার সময় বলেন যে, করোনাভাইরাস মহামারি, ইউক্রেনে রাশিয়ার আক্রমণ এবং মুদ্রাস্ফীতির পুনরুত্থানের কারণে বিশ্ব অর্থনীতি ‘একের পর এক ধাক্কা খেয়েছে।’

তিনি আরও উল্লেখ করেন যে, ক্রমবর্ধমান দামের লাগাম টানতে আমাদের সবচেয়ে বেশি অগ্রাধিকার দেওয়া উচিত। ‘আমরা যদি মূল্যের স্থিতিশীলতা পুনরুদ্ধার না করি, তাহলে আমরা প্রবৃদ্ধির সম্ভাবনাকে ক্ষুণ্ন করব।’ তিনি বলেন, ‘আমরা সম্ভবত মূল্যস্ফীতিকে একটি পলাতক ট্রেনে পরিণত হতে দিতে পারি না—যা প্রবৃদ্ধির জন্য খারাপ, মানুষের জন্য খারাপ, বিশেষ করে দরিদ্র মানুষের জন্য অত্যন্ত খারাপ।’

আরও পড়ুন : দেশে এত দুর্নীতি কেন? 

জর্জিয়েভা স্বীকার করেছেন যে, উচ্চতর ধার নেওয়ার খরচ অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি পিছিয়ে দেবে। তবে, তিনি নীতিনির্ধারকদের ব্যথা কমাতে অর্থ ব্যয়ে সংযম দেখানোর আহ্বান জানান। তিনি আরও যুক্ত করেন যে, মূল্যস্ফীতি নিয়ন্ত্রণে ‘যখন মুদ্রানীতি ব্রেকের উপর পা রাখে, তখন আর্থিক নীতির এক্সিলারেশন অর্থাৎ ত্বরণকারীর উপর পা রাখা উচিত নয়।’

তিনি পরামর্শ দেন যে, অনেক সরকারই, মহামারির সাথে লড়াই করার পরে ইতিমধ্যেই প্রচুর ঋণে জর্জরিত। খাদ্য ঘাটতি এবং উচ্চ জ্বালানি খরচের সময়ে তাদের দুর্বলদের সাহায্য করার দিকে মনোনিবেশ করা উচিত, বিস্তৃত ব্যয়ের কর্মসূচিতে নয়। ‘নীতির ব্যবস্থাগুলো ভালোভাবে লক্ষ্যয়িত করা দরকার এবং সেগুলো অস্থায়ী হওয়া দরকার।’

বাংলাদেশসহ এখন বিশ্ব অর্থনীতির প্রধান সমস্যার নাম ‘মূল্যস্ফীতি’। অনেক বৈশ্বিক আর্থিক বিশ্লেষকেরা সতর্ক করছেন যে, বিশ্বে মূল্যস্ফীতি নিয়ন্ত্রণ করা না হলে দেশে দেশে বিক্ষুব্ধ মানুষ রাস্তায় নেমে আসবে।

জর্জিয়েভা আরও সতর্ক করে দিয়েছেন যে, বিশ্ব অর্থনীতিকে প্রতিযোগী রাজনৈতিক ব্লকে ‘খণ্ডিত’ করার ফলে মূল্যস্ফীতি দীর্ঘস্থায়ী হতে পারে। ‘যদি আমরা আরও সমন্বিত বৈশ্বিক অর্থনীতির সুবিধা হারাতে থাকি, আমরা সবাই দরিদ্র হবো।’

বাংলাদেশসহ এখন বিশ্ব অর্থনীতির প্রধান সমস্যার নাম ‘মূল্যস্ফীতি’। অনেক বৈশ্বিক আর্থিক বিশ্লেষকেরা সতর্ক করছেন যে, বিশ্বে মূল্যস্ফীতি নিয়ন্ত্রণ করা না হলে দেশে দেশে বিক্ষুব্ধ মানুষ রাস্তায় নেমে আসবে।

আরও পড়ুন : স্ট্যাগফ্লেশন : বাংলাদেশের অর্থনীতি কোন পথে? 

ইউরোপের একাধিক দেশে ডানপন্থীদের উত্থান অর্থনৈতিক সংকটের কারণেই ঘটছে বলে অনেকে মনে করেন। মূল্যস্ফীতি সবচেয়ে বেশি কষ্টে রাখে সাধারণ ও প্রান্তিক মানুষকে। মূল্যস্ফীতির আগ্রাসনে জনজীবন এখন দুর্বিষহ।

২০ অক্টোবর ২০২২, সিপিডি কার্যালয়ে ‘বিশ্ব অর্থনীতিতে মন্দার আভাস ও বাংলাদেশের চ্যালেঞ্জ: উত্তরণ কোন পথে’ শীর্ষক ‘সিপিডি’-এর মিডিয়া বিফ্রিংয়ে উল্লেখ করা হয়েছে যে, বাজারে দৈনন্দিন অনেক পণ্যের মূল্য ২০ থেকে ৫০ শতাংশ পর্যন্ত বেড়েছে। সরকারি হিসাবে তা অনেক কম হলেও এটা সত্য যে জীবন নির্বাহ খরচ বাড়ছে লাগামহীনভাবে।

অনেকেই সঞ্চয় ভেঙে জীবিকা নির্বাহ খরচ চালাচ্ছেন। যাদের সঞ্চয় নেই তারা ধার কিংবা বাকিতে কোনোভাবে ব্যবস্থা করছেন। যাদের সঞ্চয় নেই বা ধার নেওয়ার ক্ষমতাও নেই তাদের অবস্থা আরও শোচনীয়।

শুধুমাত্র পারিবারিক খরচ নির্বাহের জন্য ব্যাংকে গচ্ছিত সঞ্চয় কমে গেলে এবং একইসাথে ব্যাংক থেকে ধারের পরিমাণ বেড়ে গেলে ভবিষ্যতে উৎপাদনশীল খাতে বিনিয়োগের জন্য পর্যাপ্ত অর্থ পাওয়া কষ্টকর হবে। আর, ভবিষ্যতে উৎপাদন ব্যাহত হলে বাজারে দ্রব্য সামগ্রী সরবরাহ কমে যাবে যা মুদ্রাস্ফীতি আরও ভয়াবহ করে তুলবে। তাই, অতি শিগগির এর লাগাম টানা জরুরি।

আরও পড়ুন : আইএমএফের ঋণ : জ্বলছে কি জ্বালানি বাজার? 

বিশ্লেষকেরাও বলেন, মূল্যস্ফীতির রাজনৈতিক মূল্য অনেক বেশি। ইতিহাস বলছে, একটি জনপ্রিয় রাজনৈতিক সরকারকে অজনপ্রিয় করে তোলার জন্য অর্থনীতির এই সূচকের ঊর্ধ্বগতিই যথেষ্ট। এটা খুবই স্পর্শকাতর। এই কারণে মূল্যস্ফীতি নিয়ে বিশ্বজুড়ে এত আলোচনা, এত সমালোচনা, এত উদ্যোগ।

মূল্যস্ফীতির লাগাম টানতে বিশ্বের ৭০টির বেশি কেন্দ্রীয় ব্যাংক সুদহার বাড়িয়েছে। যদিও, কেন্দ্রীয় ব্যাংকের হার বৃদ্ধি এটি সম্পর্কে এখন পর্যন্ত খুব বেশি কিছু করতে পারেনি। মূল্যস্ফীতি নিয়ন্ত্রণে হাতেগোনা কয়েকটি দেশ এখনো সুদহার বাড়ায়নি যার মধ্যে বাংলাদেশও রয়েছে। এর মধ্যে জাপান ও সুইজারল্যান্ডের শূন্য সুদহার নীতি। এছাড়া চীন এখনো ‘জিরো কোভিড পলিসি’ বজায় রেখেছে।

বাংলাদেশ কেন সুদহার বাড়াচ্ছে না? এমন প্রশ্নের উত্তরে কেন্দ্রীয় ব্যাংকের নীতিনির্ধারকেরা বলছেন যে, আমাদের দেশে এবারের মূল্যস্ফীতির প্রধান কারণ হচ্ছে সরবরাহ সংকট। ইউক্রেনে রাশিয়ার আগ্রাসন, আন্তর্জাতিক বাজারে জ্বালানি তেল ও ডলারের মূল্য বৃদ্ধি ইত্যাদির কারণে আমাদের দেশে সরবরাহ সংকট সৃষ্টি হয়েছে। তাই, সুদহার বাড়িয়ে লাভ হবে না। বরং বিপদের এই সময়ে বিনিয়োগ দরকার। বিনিয়োগে উৎপাদন বাড়বে যা সরবরাহ সংকটে হ্রাস করে মূল্যস্ফীতি নিয়ন্ত্রণে সাহায্য করবে।

সরকারি ও বেসরকারি উভয় খাতেই ঋণ সরবরাহ কমাতে হবে। আমদানি কমিয়ে রপ্তানি বাড়ানোর উপর জোর দিতে হবে। বিদেশে অর্থ প্রচার রোধ করতে হবে। রেমিটেন্স ও কৃষিসহ উৎপাদন খাতে প্রণোদনা বহাল রাখতে হবে।

তবে, আমাদের অনেক আর্থিক বিশ্লেষকেরা কেন্দ্রীয় ব্যাংকের এই চিন্তাভাবনার সাথে দ্বিমত পোষণ করেন। তারা মনে করেন যে, সুদহার কম মানেই সস্তায় ঋণ। সস্তা ঋণ দেশকে ভালো বিনিয়োগ নয়; বরং উচ্চ খেলাপি ঋণই উপহার দিচ্ছে।

সস্তা ঋণ অর্থনীতিতে মুদ্রা সরবরাহ বাড়াচ্ছে। এতে বাড়তি চাহিদা সৃষ্টি হচ্ছে, যা মূল্যস্ফীতিকে আরও উসকে দেবে। আবার, এর একটি অংশ বিদেশে পাচারও হয়ে যাচ্ছে।

আরও পড়ুন : সন্নিকটে সংকট, শঙ্কিত কি অর্থনীতি! 

৬ অক্টোবর ২০২২, বিকেল ৪টায় যুক্তরাজ্য ও যুক্তরাষ্ট্র সফরের ফলাফল নিয়ে আমাদের মাননীয় প্রধানমন্ত্রী সরকারি বাসভবন গণভবনে এক সংবাদ সম্মেলন বৈশ্বিক আর্থিক মন্দা নিয়েও আলোকপাত করেন। প্রসঙ্গক্রমে তিনি বলেন, ২০২৩ সালে বিশ্বব্যাপী অর্থনৈতিক মন্দা আশঙ্কা তৈরি হয়েছে এবং সেই কারণে সরকার ইতিমধ্যেই আগাম প্রস্তুতি নিতে শুরু করেছে। পরিস্থিতি মোকাবিলায় দেশের মানুষকে প্রতি ইঞ্চি জমিতে শস্য আবাদের পরামর্শ দিয়েছেন যাতে করে উৎপাদন বাড়িয়ে মানুষ সঞ্চয় করতে পারে। আর আমরাতো সকলেই জানি, সময়ের সঞ্চয়; দুঃসময়ে কাজে লাগে।

সংবাদ সম্মেলনে মাননীয় প্রধানমন্ত্রী আরও উল্লেখ করেন যে, ‘কিন্তু বিশ্ব যদি সমস্যায় থাকে সেক্ষেত্রে আমরা কি ভালো থাকব? এজন্য মানুষের কষ্ট লাঘবে যা করা দরকার তার সব উদ্যোগ নেওয়া হচ্ছে। আগামী বাজেট নিয়েও এখনই চিন্তা করা হচ্ছে।’ তিনি আশ্বস্ত করে বলেছেন যে, বাংলাদেশের এই মুহূর্তে উদ্বিগ্ন হওয়ার কিছু নেই। বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভও ভালো যা দিয়ে পাঁচ মাসের আমদানি ব্যয় মেটানো যাবে।

সম্ভাব্য পরিস্থিতি মোকাবিলায় বাংলাদেশ ইতিমধ্যেই বিলাসদ্রব্য আমদানি সীমিত করেছে ও জরুরি প্রয়োজন ছাড়া কর্মকর্তাদের বিদেশ সফরে নিষেধাজ্ঞার পাশাপাশি আমদানি ব্যয় কমিয়ে এনেছে। তবে মূল্যস্ফীতি ও মন্দা নিয়ন্ত্রণে আরও ভালো ও কার্যকর ফল পেতে অনেক আর্থিক বিশ্লেষকেরা পরামর্শ দিচ্ছেন যে, অপ্রয়োজনীয় ও বড় প্রজেক্টে ব্যয় সংকোচন করতে হবে।

আরও পড়ুন : বৈশ্বিক অর্থনৈতিক সঙ্কট এবং বাংলাদেশ

সরকারি ও বেসরকারি উভয় খাতেই ঋণ সরবরাহ কমাতে হবে। আমদানি কমিয়ে রপ্তানি বাড়ানোর উপর জোর দিতে হবে। বিদেশে অর্থ প্রচার রোধ করতে হবে। রেমিটেন্স ও কৃষিসহ উৎপাদন খাতে প্রণোদনা বহাল রাখতে হবে।

উৎপাদন বাড়াতে শিল্প ও কৃষি খাতে বিদ্যুৎ সরবরাহ সচল রাখতে হবে। সর্বোপরি, সিন্ডিকেটের দৌরাত্মক কমাতে কার্যকরী বাজার তদারকি ও সর্বক্ষেত্রে সুশাসন সহ জবাবদিহিতা নিশ্চিত করতে হবে।

নীলাঞ্জন কুমার সাহা ।। ডিন, ফ্যাকাল্টি অব বিজনেস স্টাডিজ ও সহযোগী অধ্যাপক, ফিন্যান্স অ্যান্ড ব্যাংকিং বিভাগ, জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়