মগবাজারে বিস্ফোরণ। সারাদেশের নজর এক জায়গায়। বিস্ফোরণের ঘটনায় প্রত্যক্ষদর্শী কয়েকজনের হৃদয় বিদারক বর্ণনা শুনলাম। কিছু মানুষ গাড়ির মধ্যে গন্তব্যের উদ্দেশ্যে যাওয়ার জন্য যানজটে অপেক্ষায় ছিলেন। কিছু মানুষ রাস্তার পাশে বিভিন্ন প্রয়োজনে কাজ করছিলেন। কেউবা হেঁটে চলে যাচ্ছিলেন।

সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে শেয়ার হওয়া সিসিটিভির ফুটেজে দেখলাম, মানুষ স্বাভাবিকভাবেই চলাফেরা করছেন। কেউ কেনাকাটায় ব্যস্ত। কেউ পায়চারি করছেন। এ যেন ব্যস্ত শহরের চিরচেনা দৃশ্য।

সবকিছুই ঠিকঠাক চলছিল। কিছু বুঝে ওঠার আগেই, হঠাৎ বিকট বিস্ফোরণের শব্দ। সুন্দর স্বাভাবিকভাবে চলা জীবনের মাঝে অসহনীয় স্থবিরতা।

গণমাধ্যমে প্রকাশিত তথ্যমতে, ইতিমধ্যে সাত জন মারা গেছেন। চোখের পলকেই সুস্থ স্বাভাবিক কয়েকজন মানুষ মারা গেলেন। এই হচ্ছে জীবনের মেয়াদকাল! যে পরিবারগুলো তাদের প্রিয় মানুষদের হারালেন, তাদের ক্ষত অন্যদের বোঝার কথা নয়। যে কারণেই হোক, সাতটা জীবন ইতিমধ্যে চলে গেছে।

আহত হয়েছেন শতাধিক মানুষ। আহতদের মধ্যে কয়েকজনের আশি-নব্বই শতাংশ পুড়ে গেছে। আহতদের মধ্যে কারো পা কেটে ফেলা হয়েছে, কারো হাত-পা ভেঙে গেছে। কয়েকজনের অবস্থা সংকটাপন্ন।

আহতদের সবাই হয়তো স্বাভাবিক জীবনে ফিরে আসতে পারবেন না। এছাড়াও, এই বিস্ফোরণের কারণে বেশ কিছু বাণিজ্যিক ভবন, আবাসিক ভবন, যাত্রীবাহী বাসের ক্ষতি হয়েছে।

করোনার কারণে এমনিতেই মৃত্যু ঝুঁকি বেড়ে গেছে। এখন প্রায় সকলেই অত্যন্ত সচেতন এবং সাবধানতার সাথে চলাচল করেন। তারপরেও মগবাজারের ঘটনা আবার মনে করিয়ে দিয়েছে, আপনি যতই সচেতন থাকুন, মৃত্যু অনেক সহজ একটা বিষয়।

স্বাভাবিক, অস্বাভাবিক, অবহেলাজনিত যেকোনো কারণেই মৃত্যু সামনে এসে হাজির হতে পারে।

কখনো সময় দেয়, কখনো দেয় না।

রিয়াজুল হক ।। যুগ্ম পরিচালক, বাংলাদেশ ব্যাংক