আমাদের জীবনে এখন তিনটি গুরুত্বপূর্ণ ‘মাইলস্টোন’ একই সঙ্গে অতিবাহিত হচ্ছে। বাঙালি জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের জন্মশতবার্ষিকী, স্বাধীনতার সুবর্ণজয়ন্তী এবং ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের জন্মশতবার্ষিকী উদযাপনের বছর এই ২০২১।

আজকের এই দিনেই শতবর্ষ আগে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় আনুষ্ঠানিক যাত্রা শুরু করেছিল। করোনা সংক্রমণ না হলে কত ধুমধামের সাথেই না এই তিনটি অনুষ্ঠান উদযাপন করতাম।

লকডাউনের মধ্যে অনলাইনেই এই শতবর্ষী অনুষ্ঠানের আয়োজন করতে হচ্ছে। তবুও পুরো বছর জুড়ে কোনো না কোনো ভার্চুয়াল অনুষ্ঠান নিশ্চয় আয়োজন করা হবে। বেশ কয়েকটি কমিটি বিশ্ববিদ্যালয়ের শতবর্ষ উদযাপনকে সামনে রেখে গুরুত্বপূর্ণ প্রকাশনার কাজ করছে। আশা করছি এসব প্রকাশনাই শতবর্ষ উদযাপনের বড় স্মারকচিহ্ন হিসেবে ইতিহাসে স্থান করে নেবে।

একেবারে শুরুর দিকে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অর্থনীতি বিভাগের ছাত্র ছিলেন এবং শিক্ষা শেষ করেই শিক্ষক হয়েছিলেন অমিয় কুমার দাশগুপ্ত। খুবই নাম করা এই শিক্ষকের সুনাম ছিল দুনিয়া জোড়া।

বঙ্গভঙ্গ রদ হওয়ার পর এ অঞ্চলের মানুষের মনের ক্ষোভ মেটানোর জন্য অক্সফোর্ড বিশ্ববিদ্যালয়ের আদলেই আবাসিক এই ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিষ্ঠা করা হয়েছিল। পূর্ববাংলার বিকাশমান মধ্যবিত্তের সন্তানেরাই এই বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়াশোনা করতে আসে। হিন্দু ছাত্র ও শিক্ষকদের আধিক্য থাকলেও অনেক মুসলমান শিক্ষার্থী ও শিক্ষক এই বিশ্ববিদ্যালয়ে যোগ দেন।

দারুণ সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতির পরিবেশে শিক্ষার্থীরা ক্লাসের বাইরেও শিল্প-সংস্কৃতির চর্চায় মগ্ন থাকতো। গ্রাম থেকে আসা ছাত্র-ছাত্রীরা শহরের শিক্ষার্থীদের সংস্পর্শে এসে আধুনিক দৃষ্টিভঙ্গি ও ব্যক্তিত্ব গড়ে তোলার সুযোগ পেত। আমরা যারা গ্রাম থেকে এই বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়তে এসেছিলাম নিঃসন্দেহে এই সামাজিক সংশ্লেষের সুফল পেয়েছি। সেই অর্থে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় একটি সামাজিক ‘মেল্টিং পট’। এখনো তার সেই ভূমিকা অক্ষুণ্ণই রয়েছে।

একেবারে শুরুর দিকে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অর্থনীতি বিভাগের ছাত্র ছিলেন এবং শিক্ষা শেষ করেই শিক্ষক হয়েছিলেন অমিয় কুমার দাশগুপ্ত। খুবই নাম করা এই শিক্ষকের সুনাম ছিল দুনিয়া জোড়া। তার কন্যা অলোকানন্দা প্যাটেল বেঙ্গল পাবলিকেশন্স (২০১৭) থেকে প্রকাশিত ‘পৃথিবীর পথে হেঁটে’ গ্রন্থে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের এক মনোগ্রাহী বর্ণনা দিয়েছেন। তার ভাষায়, ‘বিশ্ববিদ্যালয় নতুন তখন, সবেমাত্র ১৯২১-এ শুরু হয়েছে। ... পূর্ববঙ্গে এই প্রথম ইউনিভার্সিটি, সবার পক্ষে কলকাতা গিয়ে পড়াশোনা করা সম্ভব হতো না, আর্থিক সংকট ছিল প্রধান বাধা, তাঁদের কাছে এই নতুন শিক্ষাকেন্দ্র এনে দিলো উচ্চশিক্ষার বিরাট সুযোগ।’

রাজনীতির চর্চাও ছিল প্রবল। কিন্তু গণতান্ত্রিক পরিবেশেই তার চর্চা হতো। দিনে বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের যে ছাত্রনেতাদের তর্ক করতে বা পাল্টাপাল্টি মিছিল করতে দেখেছি, রাতে আবার তারাই সহাস্যে পাশাপাশি বসে ডাইনিং হলে খেতেন।

লেখক জানিয়েছেন যে, এই বিশ্ববিদ্যালয়ে শিক্ষার্থীরা নিজের মতো চিন্তা করে লক্ষ্য সামনে রেখে চলার শিক্ষা পেতেন। আরও লিখেছেন, সংগীত, নাটক, ছবি আঁকা, রাজনীতি; সর্বোপরি আড্ডা ছিল শিক্ষার বা জীবনযাপনের অঙ্গ। বাবার বন্ধু পরিমল রায়কে উদ্ধৃত করে প্যাটেল লিখেছেন, ‘প্রতি সন্ধ্যায় বিশ্ববিদ্যালয়ের কোথাও না কোথাও কিছু একটা হইতেছে, কোনো হলে ডিবেট, কোনো হলে ড্রামা, কোথাও সেমিনার, কোথাওবা বক্তৃতা। ...ভাবিতাম আমাদের পড়াইবার জন্য কী বিরাট আয়োজন! উনি কে? সত্যেন বসু । ইনিই সত্যেন বসু? উনি? ডা. জ্ঞান ঘোষ। ইনি? ডা. রমেশ মজুমদার। আর উনি? ডা. সুশীল দে, ইংরেজি ও সংস্কৃতির প্রতিভা। বিদ্যার বিপণিতে যেন হালখাতার উৎসব।’

এই আমন্ত্রণ আমরাও পেয়েছিলাম। আমরাও জ্ঞানতাপস অধ্যাপক আব্দুর রাজ্জাক, গোবিন্দ চন্দ্র দেব, সরদার ফজলুল করিম, এম এন হুদা, আনিসুর রহমান, আবু মাহমুদ, মোজাফফর আহমেদ চৌধুরী, খান সারওয়ার মুরশিদ, রেহমান সোবহান, অজয় রায়দের মতো শিক্ষকদের দেখা পেয়েছি। অনেকের সরাসরি পাঠদানের সুফলও ভোগ করেছি। সেই শুরুর দিনের মতোই হলে হলে, বিভাগে বিভাগে বিতর্ক, সাহিত্য সভা, সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান, টেনিস, বাস্কেটবল, ক্রিকেট, ফুটবল প্রতিযোগিতা হতো।

রাজনীতির চর্চাও ছিল প্রবল। কিন্তু গণতান্ত্রিক পরিবেশেই তার চর্চা হতো। দিনে বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের যে ছাত্রনেতাদের তর্ক করতে বা পাল্টাপাল্টি মিছিল করতে দেখেছি, রাতে আবার তারাই সহাস্যে পাশাপাশি বসে ডাইনিং হলে খেতেন। গত শতাব্দীর আশির দশকে এরশাদ-বিরোধী আন্দোলন এবং বর্তমান শতকের প্রথম দশকে সেনা সমর্থিত সরকারের আমলে গণতন্ত্র পুনরুদ্ধারের সংগ্রামেও ঢাকা বিশ্বদ্যিালয়ের শিক্ষার্থী ও শিক্ষকদের ভূমিকা ছিল উজ্জ্বল।

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সবচেয়ে বড় সম্পদ তার মেধাবী শিক্ষককূল। শুরু থেকেই বেশি মাইনে ও সুযোগ দিয়ে শ্রেষ্ঠ শিক্ষকদের ধরে রাখার চেষ্টা বরাবরই করে এসেছে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়। আর তাই এই বিশ্ববিদ্যালয়ের ডিলিট উপাধিতে ভূষিত হয়েছেন রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর, শরৎচন্দ্র চট্টোপাধ্যায়, স্যার জগদীশ চন্দ্র বসু, অধ্যাপক রমেশচন্দ্র মজুমদারসহ আরও অনেকেই।

১৯৪৭ সালে দেশ ভাগের একটু আগে ও পরে অনেক নাম করা শিক্ষক ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ছেড়ে ওপারে চলে যান। সেই শূন্যতা পূরণে বেশ বেগ পেতে হয়েছে। তবে দ্রুতই অনেক মেধাবী শিক্ষক নিয়োগ পেয়েছিলেন। এখনো মেধাবী শিক্ষকদের নিয়োগের চেষ্টা কর্তৃপক্ষের মাঝে দেখতে পাই। তবে ছাত্র রাজনীতির সেই সহঅবস্থানে অনেকটাই ভাটা পড়েছে। তবে নানা মতের শিক্ষকদের সহঅবস্থান এখনো বেশ চোখে পড়ে। হলের পরিবেশ আর আগের মতো নেই। তবে করোনা শুরুর আগ পর্যন্ত টিএসসি ও বিশ্ববিদ্যালয়ের নানা চত্বরে আড্ডা, সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান, বিভিন্ন বিভাগে সেমিনার, বক্তৃতার আয়োজন দেখতে পেতাম। উৎসাহী ছেলেমেয়েদের নানা আয়োজনে প্রায়ই যোগ দিতাম।

এমন একটি বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী-শিক্ষকরা যে ঔপনিবেশিক শাসনব্যবস্থার বিরুদ্ধে আন্দোলন করবে তা তো স্বাভাবিক। তাই এই বিশ্ববিদ্যালয়ের অনেক শিক্ষার্থী ও শিক্ষক ব্রিটিশ আমলে অনিল রায়ের ‘শ্রী-সংঘ’ ও লীলা রায়ের ‘দীপালী’ নামের সংগঠনের সাথে যুক্ত থেকে স্বদেশের মুক্তির জন্য বিপ্লবী কর্মকাণ্ড চালিয়ে গেছেন। একই সঙ্গে ‘বুদ্ধির মুক্তি আন্দোলন’ তথা ‘শিখা গোষ্ঠী’র মুক্তচিন্তা ও সার্বিক মুক্তির পক্ষে সচেতনতা বিকাশে তারা বুদ্ধিবৃত্তিক নানা কাজে জড়িয়েছিলেন।

শুরু থেকেই বেশি মাইনে ও সুযোগ দিয়ে শ্রেষ্ঠ শিক্ষকদের ধরে রাখার চেষ্টা বরাবরই করে এসেছে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়। আর তাই এই বিশ্ববিদ্যালয়ের ডিলিট উপাধিতে ভূষিত হয়েছেন রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর, শরৎচন্দ্র চট্টোপাধ্যায়, স্যার জগদীশ চন্দ্র বসু, অধ্যাপক রমেশচন্দ্র মজুমদারসহ আরও অনেকেই।

পরবর্তীকালে ভাষা আন্দোলনে এই বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষকের নেতৃত্বে ‘তমুদ্দিন মজলিস’ এবং আইন বিভাগের ছাত্র শেখ মুজিবুর রহমানের নেতৃত্বে প্রতিষ্ঠিত পূর্ব পাকিস্তান মুসলিম ছাত্রলীগের বিরাট অবদান অস্বীকার করার কোনো সুযোগ নেই। বিশেষ করে ১৯৪৮ সালের ১১ মার্চ রাষ্ট্রভাষা বাংলার দাবিতে বঙ্গবন্ধুর নেতৃত্বে ধর্মঘট পালনকালে অনেক তরুণ সংগঠকসহ তার গ্রেফতার হওয়া ও মুক্ত হয়ে আন্দোলনকে সচল রাখার ইতিহাস এখন পরিষ্কার। পরবর্তীতে শেখ মুজিব ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের নিম্ন আয়ের কর্মচারীদের আন্দোলনের প্রতি সমর্থন দিতে গিয়ে গ্রেফতার হন। অপরাধ স্বীকার করে মুচলেকা দিতে অস্বীকার করায় তাকে বিশ্ববিদ্যালয় থেকে বহিষ্কার করা হয়।

তৎকালীন পাকিস্তান সরকারের অত্যাচারের বিরোধিতা করায় তিনি ফের গ্রেফতার হন। এক নাগাড়ে ছাব্বিশ মাস কারাগারে থেকে ১৯৫২ সালের ২৭ ফেব্রুয়ারি ফরিদপুর জেল থেকে অনশনে কাহিল অবস্থায় মুক্তি পান। এর আগে কেন্দ্রীয় জেল থেকে তাকে ঢাকা মেডিকেল হাসপাতালে চিকিৎসার জন্য নেওয়া হয়। সেখানে বসেই তিনি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্রনেতাদের সাথে যোগাযোগ রেখে বায়ান্নর আন্দোলনের নেতৃত্ব দেন। এরপরের কাহিনি আমাদের জানা। তার নেতৃত্বে গড়ে ওঠা ছয় দফা আন্দোলনে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্রদের বিপুল ভূমিকা এখন ইতিহাসের অংশ।

রবীন্দ্রসঙ্গীত ও সাহিত্য বর্জনের বিরুদ্ধে এবং অগণতান্ত্রিক শিক্ষা কমিশনের প্রতিবাদে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র-ছাত্রী ও শিক্ষকদের বিরামহীন আন্দোলনের কথা স্বর্ণাক্ষরে লেখা আছে ইতিহাসের পাতায়। এসব আন্দোলনের রেশ শেষ পর্যন্ত ১১ দফা আন্দোলনে গিয়ে যুক্ত হয়।

আগরতলা ষড়যন্ত্র মামলায় শেখ মুজিবকে ফাঁসিতে ঝোলানোর উদ্যোগ নিলে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্রনেতাদের নেতৃত্বে সারাদেশব্যাপী ঊনসত্তরের গণঅভ্যুত্থানের সূচনা হয়। তার শেষ পরিণতিতে শেখ মুজিবের মুক্তি এবং ডাকসুর ভিপি তোফায়েল আহমদের নেতৃত্ব সকল ছাত্রনেতাদের পক্ষ থেকে তাকে ‘বঙ্গবন্ধু’ গণউপাধি দেওয়া হয়। এরপর আইয়ুব সরকারের পতন, ইয়াহিয়া সামরিক সরকারের আগমন ও জাতীয় নির্বাচনের আয়োজনের পরিপ্রেক্ষিতে আসে বাঙালির নিরঙ্কুশ বিজয়। সে বিজয় অস্বীকার করায় শুরু হয় অসহযোগ আন্দোলন, যাতে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী ও শিক্ষকদের অনন্য অবদানের কথা ভুলবার নয়। তাই একাত্তরের পঁচিশে মার্চে রাতে গণহত্যার শিকার হন এই শিক্ষার্থী ও শিক্ষকরা। আমাদের প্রিয় মধুদাকেও (মধুসূদন দে) জীবন দিতে হয় এই আক্রমণে।

ছাব্বিশে মার্চের প্রথম প্রহরেরই আনুষ্ঠানিকভাবে স্বাধীনতার ঘোষণা দেন বঙ্গবন্ধু। তার পরপরই তাকে আটক করা হয়। শুরু হয় মুক্তিযুদ্ধ। এই মুক্তিযুদ্ধে অকাতরে প্রাণ দেন এই বিশ্ববিদ্যালয়ের অসংখ্য ছাত্র-ছাত্রী ও শিক্ষক। অনেক শিক্ষক ও ছাত্রীদের আটক করে নির্মম অত্যাচার করা হয়। অনেকেই যুদ্ধাহত মুক্তিযোদ্ধা হিসেবে আজও বেঁচে আছেন। মুক্ত বাংলাদেশ গড়তে বঙ্গবন্ধুর নেতৃত্ব ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক ও প্রাক্তন ছাত্র-ছাত্রীদের ভূমিকাও উজ্জ্বল।
একথা ঠিক আরও গুণমানের শিক্ষা দেওয়ার সুযোগ আমরা তৈরি করতে পারিনি।

শিক্ষাক্ষেত্রে অতিরিক্ত রাজনীতিকিকরণের বিষয়েও আমাদের সতর্ক হতে হবে। আরও অনেক গবেষণা তহবিল সংগ্রহ করা সম্ভব হয়নি। হল, লাইব্রেরি ও পরীক্ষাগার উন্নয়নের সুযোগ এখনো রয়েছে। সরকার অবশ্যই এখন শিক্ষকদের বঙ্গবন্ধু বৃত্তি দিচ্ছে। বাজেটের পরিমাণও বাড়াচ্ছে। প্রাক্তন ছাত্র-ছাত্রীরাও অ্যালামনাই অ্যাসোসিয়েশনের মাধ্যমে এগিয়ে আসছেন। বিদেশে বসবাসকারী প্রাক্তনদের অনেক কিছুই করার আছে এই বিশ্ববিদ্যালয়ের পাঠক্রম ও গবেষণার মান উন্নয়নে। আগামীতে হয়তো পাঠদানের অনেকটা অংশই হবে অনলাইনে।

সকল শিক্ষক দেশে বিদেশে প্রচুর একাডেমিক লেখা লিখছেন। এসব লেখা বিশ্ববিদ্যালয়ের বিশেষ তথ্যভাণ্ডারে যুক্ত করা গেলে নিশ্চয় এই বিশ্ববিদ্যালয়ের বৈশ্বিক মান বাড়বে। আরও গবেষণা, আন্তর্জাতিক সেমিনারে অংশগ্রহণ এবং প্রকাশনার জন্য সবধরনের সহযোগিতা দেওয়ার প্রচেষ্টা চালিয়ে যেতে হবে। শিল্পের উদ্যোক্তাদের সাথে সংযোগ বাড়িয়ে তাদের চাহিদামতো উন্নতমানের জনশক্তি তৈরির বিশেষ প্রচেষ্টা জোরদার করে আমাদের প্রাণের বিশ্ববিদ্যালয়কে বিশ্বমানের শিক্ষালয় হিসেবে উন্নীত করার প্রতিজ্ঞার দিন আজ।

বাঙালি জাতীয়তাবাদের সূতিকাগার ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের জন্মশতবর্ষে দাঁড়িয়ে উন্নত বাংলাদেশ গড়ার প্রধানতম জ্ঞানচর্চার কেন্দ্র হিসেবে নিজে বেড়ে উঠুক এবং অন্যান্য বিশ্ববিদ্যালয়ের জন্য অনুকরণীয় এক প্রতিষ্ঠানের সুনাম চিরদিন ধরে রাখুক সেই আশাবাদ ব্যক্ত করছি।

ড. আতিউর রহমান ।। বঙ্গবন্ধু চেয়ার অধ্যাপক, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ও সাবেক গভর্নর, বাংলাদেশ ব্যাংক