বিএনপি লোগো

বিএনপির প্রতিষ্ঠাতা ও মুক্তিযুদ্ধের সেক্টর কমান্ডার জিয়াউর রহমানের রাষ্ট্রীয় পদক বাতিলের সিদ্ধান্ত রাজনৈতিক প্রতিহিংসা থেকে নেওয়া হচ্ছে বলে দাবি করেছে বিএনপি। দলটির নেতারা বলছেন, আওয়ামী লীগ সরকার গত ১২ বছরে জিয়াউর রহমানকে বিভিন্নভাবে খাটো করার ষড়যন্ত্র চালিয়ে যাচ্ছে।

বিএনপি নেতারা বলেন, এটা জিয়াউর রহমানকে ছোট করার নতুন ষড়যন্ত্র। সরকার জিয়াউর রহমানকে ছোট করতে গিয়ে মুক্তিযুদ্ধ এবং মুক্তিযোদ্ধাদের প্রতি চরম অবমাননা করছে। কিন্তু এসব ষড়যন্ত্র করে তারা মানুষের অন্তর থেকে জিয়াউর রহমানকে মুছতে পারবে না। বুধবার (১০ ফেব্রুয়ারি) সকালে জিয়াউর রহমানের রাষ্ট্রীয় পদক বাতিল নিয়ে জাতীয় মুক্তিযোদ্ধা কাউন্সিলের সিদ্ধান্তের বিষয়ে জানতে চাইলে দলটির নেতারা এসব কথা বলেন।

এ বিষয়ে জানতে চাইলে বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য ড. খন্দকার মোশাররফ হোসেন ঢাকা পোস্টকে বলেন, জিয়াউর রহমানের মুক্তিযুদ্ধের খেতাব বাতিল করলে রাজনৈতিক প্রতিহিংসার শামিল হবে। জনগণ তাদের এ সিদ্ধান্ত মেনে নেবে না। আসলে গত ১২ বছর ধরে তাকে বিভিন্নভাবে খাটো করার ষড়যন্ত্র চালিয়ে আসছে। বিভিন্ন স্থাপনা থেকে তার নাম মুছে দেওয়া হয়েছে। কিন্তু তারা মানুষের অন্তরে থেকে কিভাবে জিয়াউর রহমানের নাম মুছবে?

জিয়াউর রহমানের খেতাব বাতিলের সিদ্ধান্ত মুক্তিযুদ্ধ এবং মুক্তিযোদ্ধাদের অবমাননা করা উল্লেখ করে খন্দকার মোশাররফ বলেন, দেশের স্বাধীনতার ঘোষকের খেতাব বাতিল করা মানেই পুরো মুক্তিযুদ্ধকে অবমাননা করা।

খন্দকার মোশাররফ বলেন, বঙ্গবন্ধুর নামেই জিয়াউর রহমান স্বাধীনতার ঘোষণা দিয়েছিলেন। তিনিই প্রথম সশস্ত্র যুদ্ধ শুরু করেন এবং কালুরঘাট থেকে প্রথম বিদ্রোহ করেন। মুক্তিযুদ্ধের সেক্টর কমান্ডার, জেড ফোর্সের কমান্ডার ছিলেন তিনি। আর এ আওয়ামী লীগ সরকারই জীবিত মুক্তিযোদ্ধাদের মধ্যে জিয়াউর রহমানকে সর্বোচ্চ খেতাব বীর উত্তম উপাধি দিয়েছিল। এখন তারাই যখন তা আবার বাতিলের সিদ্ধান্ত নেয়, তখন আর বুঝতে বাকি থাকে না যে এটা রাজনৈতিক প্রতিহিংসা ও নতুন ষড়যন্ত্র।

দলটির আরেক স্থায়ী কমিটির সদস্য সেলিমা রহমান ঢাকা পোস্টকে বলেন, আওয়ামী লীগ মনে করে তারা একাই মুক্তিযুদ্ধ করেছে, স্বাধীনতার ঘোষণা দিয়েছে। তারাই সব কিছু করেছে। এটা জিয়াউর রহমানকে ছোট করার সরকারের নতুন এক চাল, নতুন ষড়যন্ত্র। আওয়ামী লীগের লজ্জা-শরম নেই দাবি করে সেলিম রহমান বলেন, আমি তাদেরকে এ ধরনের রাজনৈতিক প্রতিহিংসামূলক সিদ্ধান্ত থেকে সরে আসার আহ্বান জানাবো।

বিএনপির একটি সূত্রে জানা গেছে, আনুষ্ঠানিকভাবে জিয়াউর রহমানের খেতাব বাতিলের সিদ্ধান্ত আসলে তার প্রতিবাদে কর্মসূচি দেওয়া হতে পারে। সূত্রটি জানায়, আজ (বুধবার) বিকেলে বিএনপির স্থায়ী কমিটির সংবাদ সম্মেলনে আছে। সেখানে হয়তো এ বিষয়ে বিএনপির পক্ষে থেকে আনুষ্ঠানিক প্রতিক্রিয়া জানানো হতে পারে।

এর আগে রাষ্ট্রীয় খেতাবপ্রাপ্ত বীর মুক্তিযোদ্ধার গেজেট থেকে জিয়াউর রহমানের নাম বাতিলের সিদ্ধান্ত নেয় জাতীয় মুক্তিযোদ্ধা কাউন্সিল (জামুকা)। এছাড়াও বঙ্গবন্ধুর আত্মস্বীকৃত চার খুনিকেও খেতাবপ্রাপ্ত বীর মুক্তিযোদ্ধার গেজেট থেকে বাদ দেওয়ার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। পাশাপাশি মুক্তিযুদ্ধে গুরুত্বপূর্ণ অবদান রাখায় স্মরণীয়-বরণীয় ব্যক্তিদের তালিকা থেকে খন্দকার মোশতাকের নামও কাটা হবে।

মঙ্গলবার (৯ ফেব্রুয়ারি) জামুকার ৭২তম সভায় এসব সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। আরো বৈঠক করে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে। এরপর তা বাস্তবায়নের জন্য মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক মন্ত্রণালয়কে সুপারিশ করবে জামুকা।

এএইচআর/এমএইচএস