৭০তম জন্মদিনের কেক কাটছেন খালেদা জিয়া /ছবি- সংগৃহীত

বিএনপি চেয়ারপারসন ও সাবেক প্রধানমন্ত্রী বেগম খালেদা জিয়ার জন্ম তারিখ নিয়ে নতুন করে আলোচনা তৈরি হয়েছে। হাসপাতালে চিকিৎসাধীন বেগম খালেদা জিয়ার করোনা পরীক্ষার রিপোর্টের একটি কপি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়েছে। আর তাতেই আলোচনার সূত্রপাত। সেই রিপোর্টের কপিতে দেখা যায় বেগম খালেদা জিয়ার জন্ম তারিখ ১৯৪৬ সালের ৮ মে। 

আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক আ ফ ম বাহাউদ্দিন নাছিম বলেন, তারা (বিএনপি) দীর্ঘদিন রাজনৈতিক উদ্দেশ্যে ১৫ আগস্ট খালেদা জিয়ার জন্মদিন পালন করেছে। আমরা দীর্ঘদিন ধরে বলে আসছি, এটা মিথ্যা, বানোয়াট। শুধু বঙ্গবন্ধু হত্যাকারীদের খুশি করতে ও খুনিদের উৎসাহিত করতে ১৫ আগস্টে জাতীয় শোক দিবসে খালেদা জিয়া জন্মদিন পালন করেছেন। এখন সত্য প্রকাশিত হয়েছে। সত্য কখনো চাপা থাকে না।

এ বিষয়ে জানতে চাইলে বিএনপির সাংগঠনিক সম্পাদক ইমরান সালেহ প্রিন্স ঢাকা পোস্টকে বলেন, বিষয়টি আমি দেখিনি। তাই এ বিষয়ে কোনো মন্তব্য করতে পারছি না।

এদিকে নিজ ফেসবুক অ্যাকাউন্ট থেকে দেওয়া এক স্ট্যাটাসে পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী শাহরিয়ার আলম লিখেছেন, ‘আমি আওয়ামী লীগ করি। বিষয়টা আমার কাছে যেকোনো সময় যেকোনো পরিস্থিতিতেই প্রাসঙ্গিক। এখন আপনি বলছেন ৮ মে তে আপনি জন্মেছেন। তাহলে আমাদের রক্তক্ষরণ করিয়ে ১৫ আগস্ট যে জন্মদিন নিজে পালন করে এসেছেন, আপনার দলের নেতাকর্মীরা যে পালন করেছে আমাদের শোককে বৃদ্ধাঙ্গুলি দেখিয়ে তার জন্য ন্যূনতম ক্ষমা মানুষ হিসেবে আপনার এবং আপনার দলের নেতাদের চাওয়া উচিত।’

খালেদা জিয়ার জন্মদিন নিয়ে মিথ্যা এবং বিভ্রান্তিকর তথ্য প্রকাশ করা হচ্ছে বলে দাবি করেছেন বিএনপির চেয়ারপারসনের মিডিয়া উইংয়ের সদস্য শায়রুল কবির খান। তিনি বলেন, একটি মহল উদ্দেশ্যপ্রণোদিতভাবে দেশনেত্রীর করোনা পরীক্ষার রিপোর্টের ভুয়া কপি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছড়িয়ে দিয়েছে। তার রিপোর্টের মূল কপির সঙ্গে মেডামের জন্ম তারিখ আর তৈরি করা জন্ম তারিখ দেখুন। তাহলে আপনারা বিষয়টি বুঝতে পারবেন।

শায়রুল বলেন, আমাদের অনুরোধ একজন জাতীয় নেত্রীকে নিয়ে বিশেষ করে যখন তিনি অসুস্থ, হাসপাতালে চিকিৎসাধীন সেই সময়ে মিথ্যা এবং বিভ্রান্তিকর মত প্রকাশ করা সত্যি দুঃখজনক। সবার কাছে অনুরোধ আরও বেশি দ্বায়িত্বশীল আচরণের জন্য।

বিএনপির একাধিক দায়িত্বশীল সূত্র জানান, ১৫ আগস্ট বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের শাহাদাত বার্ষিকীর দিনটি জাতীয় শোক দিবস হিসেবে সর্বজনবিদিত। তবে নব্বইয়ের দশকে বিএনপিপন্থী এক সাংবাদিক ও স্থায়ী কমিটির এক সদস্যের উৎসাহে ১৫ আগস্ট আড়ম্বরপূর্ণভাবে খালেদা জিয়ার জন্মদিন পালন শুরু হয়। তখন থেকেই বিষয়টি নিয়ে রাজনৈতিক মহলসহ সর্বসাধারণের মধ্যে সমালোচনা শুরু হয়।

বিএনপি সূত্রে জানা গেছে, ২০১৪ সালের ১৫ আগস্ট ৫০ পাউন্ডের কেক কেটে জন্মদিন পালন করেন খালেদা জিয়া। ২০১৫ সালের ১৫ আগস্ট প্রথম প্রহরে তিনি কেক না কাটলেও সন্ধ্যার পর কেক কেটে জন্মদিন উদযাপন করেছিলেন। তবে ২০১৬ সালে বন্যা ও গুম-খুনের কারণ দেখিয়ে কেক কাটার কর্মসূচি বাতিল করেন খালেদা জিয়া। পরের বছরগুলোতেও ১৫ আগস্ট কেক কাটেননি তিনি।

এইউএ/এএইচআর/ওএফ