নয়াপল্টন বিএনপির কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে এক সংবাদ সম্মেলনে কথা বলছেন রিজভী

আওয়ামী লীগ সরকারের যুগ পূর্তি উপলক্ষে জাতির উদ্দেশে দেওয়া ভাষণে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা মিথ্যাচার করেছেন বলে অভিযোগ বিএনপি সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভীর।

তিনি বলেন, তার এ বিভ্রান্তিকর ও দুরভিসন্ধিমূলক ভাষণ অন্তঃসারশূন্য কথামালার ফুলঝুরি ছাড়া আর কিছুই নয়। তথাকথিত উন্নয়ন, মানুষের জীবনমান বৃদ্ধি, অর্থনৈতিক অগ্রগতি, স্বাস্থ্য খাতের ইতিবাচক পরিবর্তন, আইনের শাসন, দুর্নীতির বিরুদ্ধে অবস্থানসহ যেসব বক্তব্য দিয়েছেন তা মিথ্যাচারের কালো দলিল। দেশবাসী এই ভাষণ ঘৃনাভরে প্রত্যাখ্যান করেছে।

শুক্রবার (৮ জানুয়ারি) দুপুরে নয়াপল্টন বিএনপির কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে এক সংবাদ সম্মেলনে তিনি এ কথা বলেন।

রিজভী বলেন, প্রকৃতপক্ষে গণতন্ত্র হত্যা, ভোটাধিকার হরণ, খুন, গুম, ধর্ষণ, দুর্নীতি, দুর্বৃত্তায়ন ও দুঃশাসনের একযুগ পার করলো বাংলাদেশ। অবৈধভাবে ক্ষমতা কুক্ষিগত করে রাখতে ক্ষমতাসীনর দুষ্টচক্র মুক্তিযুদ্ধের মূলমন্ত্র সাম্য-মানবাধিকার-ন্যায়বিচারকে নির্বাসনে পাঠিয়ে দিয়ে জনগণকে বোকা বানাতে তথাকথিত উন্নয়নের শ্লোগান তুলেছে। উন্নয়নের নামে গত একযুগের এ দুঃশাসনের সঙ্গে একমাত্র বিতাড়িত তৎকালীন স্বৈরশাসক আইয়ুব খানের কথিত উন্নয়নের এক দশকের তুলনা চলে। গণতন্ত্র হত্যা করে, মানুষের ভোটাধিকার হরণ করে ১৯৫৮ থেকে ১৯৬৮ সালে তথাকথিত উন্নয়নের একদশক যুগ উদযাপন করেছিলেন আইয়ুব খান। আইয়ুব খানের মতো তাদেরও পতন হবে। শুধু সময়ের অপেক্ষা মাত্র।

দেশের মানুষকে না খেয়ে রাত কাটাতে হয় উল্লেখ করে রিজভী বলেন, স্বল্প আয়ের মানুষরা যদি নিত্য প্রয়োজনীয় জিনিস ক্রয় করতে না পারে, শিশুরা যদি স্কুলে যেতে না পারে তাহলে কিসের জিডিপির প্রবৃদ্ধি ? আর কিসের উন্নয়নের গল্প। কয়েকদিনে মোটা চালের কেজি ৫-৭ টাকা, মুসুরের ডাল কেজি প্রতি ২০ টাকা, খোলা সয়াবিন ও পাম ওয়েল কেজি প্রতি ১৫-২০ টাকা বৃদ্ধি পেয়েছে। সাধারণ মানুষকে পেটে পাথর বাঁধতে হচ্ছে, আর প্রধানমন্ত্রী নিরাপদ জোনে থেকে উন্নয়নের গল্প শোনাচ্ছেন। কারণ তিনি জনগণের মুখোমুখি হতে চান না।

বিএনপির এ সিনিয়র নেতা বলেন, এক যুগে মেগা প্রকল্পের কয়েকটি কুমির ছানা যুগব্যাপী দেখিয়ে আর ক্ষমতার নিয়ামক শক্তিগুলোকে অবাধ সুযোগ সুবিধায় তুষ্ট করে তিনটি ভুয়া জাতীয় নির্বাচন করার মধ্যে তারা তাদের সাফল্য খুঁজছে। তাদের এক যুগের সফলতা হলো-দেশের মানুষ এখন মৃত্যু আতঙ্কে ভুগছে এবং জীবিকার চিন্তায় অস্থির হয়ে আছে।

বিএনপির সরকারের আমলের চেয়ে বর্তমানে বেকারত্ব বেড়েছে দাবি করে রিজভী বলেন, তারা বলেছিল-২০২১ সালে দেশের ৮৫ শতাংশ মানুষের কর্মসংস্থানের ব্যবস্থা করবে। ঘরে ঘরে চাকরি দিবে, কিন্তু বাস্তবে ঘটেছে উল্টোটা। কেবল গত ৭ বছরেই বেকারত্ব বেড়েছে দ্বিগুণ। দেশের ৬৬ শতাংশ তরুণ এখনো কর্মহীন। চাকরির বদলে সরকার ঘরে ঘরে মামলা, গুম আর লাশ দিয়েছে।

বাংলাদেশের মহান বিজয় ও স্বাধীনতা দিবসের সুবর্ণজয়ন্তীর ক্ষণ গণনা সময় খালেদা জিয়া মুক্ত নন বলে দাবি করেছেন রিজভী। তিনি বলেন, বেগম খালেদা জিয়া ষড়যন্ত্রের শিকার। বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান মিথ্যাচার ও প্রতিহিংসার শিকার।

এএইচআর/এমএইচএস