বিএনপি আর ক্ষমতায় যাওয়ার সুযোগ নেই: হানিফ
মাহবুবউল-আলম হানিফ- ফাইল ছবি
‘প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে উন্নয়ন ও অর্জনে ভীত হয়ে ধর্ম ব্যবসায়ীদের দিয়ে বিএনপি দেশের ধর্মপ্রাণ মানুষদের বিভ্রান্তি করার চেষ্টা করছ’ বলে অভিযোগ করেছেন আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মাহবুবউল-আলম হানিফ।
শনিবার (১২ ডিসেম্বর) রাজধানীর বঙ্গবন্ধু অ্যাভিনিউয়ে আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে জাতীয় শ্রমিক লীগের বৈঠকে তিনি এ অভিযোগ করেন।
বিজ্ঞাপন
হানিফ বলেন, ‘শেখ হাসিনার নেতৃত্বে দেশের উন্নয়ন ও সফলতায় ভবিষ্যতে বিএনপি আর কখনও ক্ষমতায় যাওয়ার সুযোগ নেই। সে কারণে তারা এখন ধর্ম ব্যবসায়ীদের দিয়ে সরকারের বিরুদ্ধে অপপ্রচার চালিয়ে, অপব্যাখ্যা দিয়ে দেশের সহজ-সরল ধর্মপ্রাণ মানুষকে বিভ্রান্ত করার চেষ্টা করছে।’
বিএনপির উদ্দেশে আওয়ামী লীগের এ নেতা বলেন, ‘ধ্বংসাত্মক কার্যক্রম নিয়ে কোনোদিন ক্ষমতায় আসতে পারবে না। বঙ্গবন্ধুকন্যা শেখ হাসিনা যে দক্ষতা, মেধা ও প্রাজ্ঞতা দিয়ে রাষ্ট্র পরিচালনা করছেন, সেই জায়গায় আপনাদের যদি ক্ষমতায় আসার চিন্তা-ভাবনা করতে হয় তাহলে জনগণের কাছে যান। ২০২৩ নয়, ২০২৮ সালের পরে জনগণ আপনাদের গ্রহণ করবে নাকি সেটা নিয়ে ভাবেন। তার আগে আপনাদের ক্ষমতায় আসার ভাবনার কোনো প্রয়োজন নেই। সেটা ভেবে কোনো লাভও হবে না। বঙ্গবন্ধুকন্যার যতদিন শারীরিক সক্ষমতা থাকবে, ততদিন এই বাংলাদেশের জনগণের ভালোবাসা ও রায় নিয়ে রাষ্ট্রক্ষমতায় থাকবে। কোনো অপশক্তি নেই তাকে পরাস্ত করে নির্বাচনে জয়লাভ করার।’
বিজ্ঞাপন
তিনি বলেন, ‘আমাদের এখন লক্ষ্য একটাই হবে। প্রতিটি সংগঠনকে শক্তিশালী করতে হবে। সংগঠনের সকলকে ঐক্যবদ্ধ থাকতে হবে। স্বাধীনতাবিরোধী অপশক্তি বিএনপি-জামায়াত বা ধর্ম ব্যবসায়ীদের অপচেষ্টা রুখে দিতে হবে। বঙ্গবন্ধুর বাংলাদেশ চলবে তার হাতে গড়া সংবিধান অনুযায়ী। এই বাংলাদেশ কীভাবে চলবে সেই ফয়সালা একাত্তর সালে হয়ে গেছে। এতে যারা বাধা দেবে তাদের বাংলাদেশে থাকার নৈতিক অধিকার থাকতে পারে না।’
হানিফ বলেন, ‘কট্টর মুসলিম রাষ্ট্র ইরানের এমন কোনো শহর নেই, যেখানে ভাস্কর্য নেই। সেখানে আয়াতুল্লাহ আলী খামেনির ভাস্কর্য আছে, বড় বড় কবি সাধকদের ভাস্কর্য রয়েছে। এমনকি ইরানের কয়েকটি শহরে মসজিদের গেটেও ভাস্কর্য রয়েছে। এতেতো কারো কোন অসুবিধা হচ্ছে না। অসুবিধা হচ্ছে আমাদের দেশের ধর্ম ব্যবসায়ী কাঠ মোল্লাদের। তারা আমাদের নবী করিম (সা.) ইসলামকে শিখে ধর্ম অনুসরণ করে না। এরা অনুসরণ করে ১৯৪৭ সালে পাকিস্তানে যে ইসলাম হয়েছে, মওদুদীদের সেই ইসলাম তারা পালন করে। যদি নবী করিমের ইসলাম পালন করতেন তাহলেতো কোনো কথা আসতো না। কারণ ওনার দেশসহ সমগ্র মুসলিম বিশ্বে ভাস্কর্য রয়েছে। এরা ধর্মটা নিয়ে এসেছে ব্যবসা হিসেবে। কারণ তাদের অন্তরে কোনো ধর্ম নেই। ধর্মটা পোশাকি তাদের কাছে।’
তিনি বলেন, ‘ইসলাম ধর্মের দর্শন হলো সৎ পথে চলা, সৎ কাজ করা, অন্যায় কাজ থেকে বিরত থাকা। এটাইতো আমাদের ধর্ম। আমি যদি ভালো কাজ করি তাহলে আমার ইহকালেও ভালো হবে, আর পরকালেও বেহশতে যেতে পারব। আমাদের মোল্লাদের নীতিনৈতিকতার বালাই নেই। আপনারা কোন নীতি-নৈতিকতা শেখান? আপনাদের নিজেদের মধ্যে তা আছে কি? কারণ মাঝে মাঝে পত্রিকায় আসে মাদরাসায় শিশু বলত্কার হয়, এটা কারা করে? শিক্ষকদের বিরুদ্ধে অভিযোগ আসে। কোনো ওয়াজ-মাহফিলে বলত্কার নিয়ে আলোচনা হয়েছে বলে শুনেছেন? এরা বলে না।’
তিনি আরও আরও বলেন, ‘ভাস্কর্য নিয়ে স্বাধীনতাবিরোধী অপশক্তি, যারা এখন অন্য নাম ব্যবহার করছে তারা হঠাৎ করে মাথাচাড়া দিয়ে উঠলো কেন? ভাস্কর্য যদি এতোই ধর্মবিরোধী হয় তাহলে যখন জিয়াউর রহমানের ভাস্কর্য বানানো হয়েছিল তখন বলেননি কেন? এখনতো চট্টগ্রাম সার্কিট হাউজের সামনে জিয়াউর রহমানের ভাস্কর্য রয়েছে। সেটা নিয়ে বলেননি কেন? বঙ্গবন্ধুর ভাস্কর্য নিয়ে এত গাত্রদাহ কেন? কারণ তারা এখনও স্বাধীনতাকেই মেনে নিতে পারেনি। তারা একাত্তরেরও রাজাকার ছিল, এখনও রাজাকার আছে। তারা দেশের সংবিধান মানে না। জাতীয় সঙ্গীত মানে না। এখন জাতীয় সঙ্গীত নিয়ে ফতোয়া দেন।’
এইউএ/এফআর