ওবায়দুল কাদেরের ফাইল ছবি

দ্বিতীয় ধাপের পৌর নির্বাচনের পর সহিংসতায় বিজয়ী এক কাউন্সিলরের মৃত্যুতে দুঃখ প্রকাশ করেছেন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক এবং সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের।

তিনি বলেছেন, ‘এ ঘটনার সঙ্গে জড়িতদের বিচারের আওতায় আনা হবে। অপরাধীদের রাজনৈতিক পরিচয় থাকলেও কোনো প্রকার ছাড় দেওয়া হবে না।’

সোমবার (১৮ জানুয়ারি) চার দিনব্যাপী ফায়ার সার্ভিসের অগ্নি নিরাপত্তাবিষয়ক প্রশিক্ষণ কর্মসূচির উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে তিনি এ কথা বলেন। ওবায়দুল তাঁর সরকারি বাসভবন থেকে ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে অনুষ্ঠানে যুক্ত হন।

ওবায়দুল কাদের বলেন, ‘দ্বিতীয় ধাপের পৌরসভা নির্বাচনে ব্যাপক সংখ্যক ভোটারের উপস্থিতি হয়েছে। মানুষ উন্নয়ন চায় বলেই আওয়ামী লীগের প্রার্থীরা বিপুল ব্যবধানে বিজয়ী হয়েছেন। বিএনপির প্রার্থীরা যেখানে সক্রিয় এবং জনপ্রিয় ছিল সেখানে তারা বিজয়ী হয়েছেন। এমনকি তাদের দুজন বিদ্রোহী প্রার্থীও বিজয়ী হয়েছে। বিএনপি নেতারা এখন কোনো দোষ খুঁজে না পেয়ে বলে ভোটের ব্যবধান বেশি।’

পরবর্তী ধাপের পৌরসভা নির্বাচনে সংঘাত ও হানাহানি এড়াতে আইন প্রয়োগকারী সংস্থাগুলোকে আরও কঠোর হওয়ার নির্দেশনা দিয়েছেন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক। 

তিনি বলেন, ‘শেখ হাসিনার উন্নয়ন ও অর্জনের কারণেই আওয়ামী লীগের প্রার্থীরা বেশি ভোটে জয়ী হয়েছেন। এটাই স্বাভাবিক। জনগণের কাছে বিএনপি কী বলে ভোট চাইবেন? তাদের তো বলার কিছু নেই। আগুন সন্ত্রাস আর মানুষ পুড়িয়ে মারা এবং দুর্নীতিতে বিশ্ব চ্যাম্পিয়ন হওয়া ছাড়া তাদের জনগণের কাছে আর কী বা বলার আছে? ভোটকেন্দ্রে না এসে, প্রচার না চালিয়ে বিএনপি ভোটারদের আস্থা হারিয়েছে।’

কাদের বলেন, ‘আওয়ামী লীগ প্রার্থীদের বিজয় উন্নয়নের বিজয়। বিপুল ভোটের ব্যবধান বিএনপির নেতিবাচক রাজনীতিকে জনগণের প্রত্যাখ্যান। এ বিজয় উগ্র সাম্প্রদায়িকতা তোষণ এবং পোষণের বিরুদ্ধে জনগণের স্বতঃস্ফূর্ত সমর্থনের বহির্প্রকাশ‌‌। এ ব্যবধান এবং বিজয় থেকে বিএনপি ভবিষ্যতে শিক্ষা নেবে।’

তিনি বলেন, ‘কর্মদক্ষতার পাশাপাশি জীবনদক্ষতাও একটি গুরুত্বপূর্ণ ইস্যু। ফায়ার সেফটিসহ অন্যান্য বিষয়ে দক্ষতা অর্জন জীবনদক্ষতার জন্য সহায়ক হবে। নিজেরা প্রশিক্ষিত হওয়ার পাশাপাশি কর্মপরিবেশে অগ্নি নিরাপত্তা প্রতিরোধ ব্যবস্থা, উদ্ধার তৎপরতা, নিজের সুরক্ষা, প্রাথমিক চিকিৎসাসহ অন্যান্য বিষয়ে প্রশিক্ষণের মাধ্যমে সফল হতে হবে।’

সেতুমন্ত্রী বলেন, ‘আগুন, বন্যা, ঘূর্ণিঝড়সহ বিভিন্ন দুর্যোগে সরকারি কর্মকর্তা হিসেবে সবার মনে রাখতে হবে শুধু নিজে বাঁচার জন্য নয়, নিজের সুরক্ষা নিশ্চিত করে অন্য ক্ষতিগ্রস্তদের সুরক্ষা এবং জীবন রক্ষাই হতে হবে প্রধান লক্ষ্য।’

উল্লেখ্য, শনিবার (১৬ জানুয়ারি) রাতে সিরাজগঞ্জ পৌরসভার নির্বাচনের ভোট গননা শেষে ৬নং ওয়ার্ডের কাউন্সিলর প্রার্থী তরিকুল ইসলাম খানকে বিজয়ী ঘোষণা করা হয়। এরপর পরাজিতপক্ষের সঙ্গে কথা-কাটাকাটির জেরে হামলার ঘটনা ঘটে। এতে ওই কাউন্সিলর প্রার্থী গুরুতর আহত হন।

দ্রুত তাকে উদ্ধার করে সিরাজগঞ্জ শহরের একটি বেসরকারি হাসপাতালে নেওয়া হলে কর্তব্যরত চিকিৎসক মৃত ঘোষণা করেন।

নিহত তারিকুল ইসলাম শহরের নতুন ভাঙ্গাবাড়ি মহল্লার আব্দুল কুদ্দুসের ছেলে। তিনি পৌরসভার ৬নং ওয়ার্ডের সাধারণ কাউন্সিলর পদে ডালিম প্রতীকে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করে ৮৫ ভোটে জয়ী হয়েছিলেন।

এইউএ/এফআর