ছাত্রলীগের কেন্দ্রীয় সম্মেলনের দাবি অব্যাহতি প্রাপ্ত নেতাদের
কেন্দ্রীয় সম্মেলনের মাধ্যমে ছাত্রলীগের নতুন নেতৃত্ব বাছাইয়ে দাবি জানিয়েছেন সংগঠনটির অব্যাহতিপ্রাপ্ত নেতারা। বুধবার (৩ ফেব্রুয়ারি) ‘বাংলাদেশ ছাত্রলীগকে বিতর্কমুক্ত ও শুদ্ধিকরণের নামে চলমান অপরাজনীতি ও অপসংস্কৃতির প্রতিবাদ’ আয়োজিত সংবাদ সম্মেলন থেকে এ দাবি জানানো হয়।
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সাংবাদিক সমিতিতে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্য পাঠ করেন সংগঠনটির সাবেক দপ্তর বিষয়ক উপ-সম্পাদক মাহমুদ আবদুল্লাহ বিন মুন্সি। এসময় সেখানে উপস্থিত ছিলেন ছাত্রলীগের অব্যাহতিপ্রাপ্ত অন্যান্য নেতারা।
বিজ্ঞাপন
মাহমুদ আবদুল্লাহ বিন মুন্সি বলেন, ২০২১ সালের ৩১ জানুয়ারি কেন্দ্রীয় সভাপতি আল-নাহিয়ান খান জয় ও সাধারণ সম্পাদক লেখক ভট্টাচার্য স্বাক্ষরিত প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে শূন্যপদে ৬৮ জনকে নতুন করে পদায়ন করা হয়। তবে ১৭ ডিসেম্বর, ২০১৯ প্রকাশিত অব্যাহতির তালিকায় সর্বমোট ৩২ পদ থাকলেও ৬৮ শূন্য পদ তৈরি করা হলো কোন প্রক্রিয়ায় এবং ১৮ জনকে পদায়ন করা হলো কিসের ভিত্তিতে তার কোনো ব্যাখ্যা পাওয়া যায়নি। এরই মধ্যে বিভিন্ন সংবাদমাধ্যম থেকে আমরা জানতে পারি বিতর্কিতদের বাদ দিয়ে তৈরি করা শূন্যপদে আবার অসংখ্য বিতর্কিতদের পদায়ন করা হয়েছে। নতুন করে পদায়নকরা এই ৬৮ জনের মধ্যে বয়স উত্তীর্ণ, মাদকসেবী, চাঁদাবাজির কারণে শাস্তিপ্রাপ্ত, বহিস্কৃত, বিবাহিত, চাকরিজীবী, মামলার আসামিসহ গঠনতন্ত্র বিরোধী অনেকেই রয়েছেন।
তিনি আরও বলেন, কেন্দ্রীয় নির্বাহী সংসদের পদধারী নেতারাই বিভিন্ন সময়ে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে এবং দলীয় ফোরামে বর্তমান সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদকের দায়িত্বে অবহেলার কথা বারবার প্রকাশ করেছে। তৃণমূলের ইউনিটগুলোতে কার্যক্রম গতিশীল না রাখা, সম্মেলন না করে প্রেস বিজ্ঞপ্তি দিয়েই কমিটি দেওয়া, বিভিন্ন ইউনিটে কমিটি করতে গিয়ে আর্থিক লেনদেনের কেলেঙ্কারিতে জড়িয়ে পড়া, মধুর ক্যান্টিন ও পার্টি অফিসে অনিয়মিত হওয়া, কেন্দ্রীয় কমিটির পদধারীদের ফোন না ধরা, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের হলগুলোতে নেতৃত্বের সেশন জট, নির্বাহী সংসদের সমন্বয়হীনতা, সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদক সর্বস্ব কার্যক্রম পরিচালনা, কেন্দ্রীয় নেতাদের সাংগঠনিক দায়িত্ব ভাগ করতে ব্যর্থ হওয়া এবং অদৃশ্য উপরমহলের এজেন্ডা বাস্তবায়ন করাসহ অসংখ্য অভিযোগ রয়েছে তাদের বিরুদ্ধে।
বিজ্ঞাপন
এসময় অব্যাহতিপ্রাপ্ত নেতাদের পক্ষ থেকে বলা হয়, সর্বোপরি আমরা মনে করি ঐতিহ্যবাহী বাংলাদেশ ছাত্রলীগকে সুশৃঙ্খলভাবে পরিচালনা করতে তারা ব্যর্থ হয়েছেন। এমতাবস্থায় সাংগঠনিক গতিশীলতা বাড়ানোর জন্য এবং বাংলাদেশ ছাত্রলীগের ভাবমূর্তি পুনরায় জাগ্রত করতে সংগঠনটির একমাত্র অভিভাবক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার কাছে আমাদের আকুল আবেদন, দ্রুত নতুন সম্মেলনের মাধ্যমে নেতৃত্বে পরিবর্তন এনে ছাত্রলীগকে ঢেলে সাজাতে কার্যকরি পদক্ষেপ গ্রহণ করুন।
সংবাদ সম্মেলনে বর্তমান কমিটিতে থাকা বেশ কিছু নেতার বিরুদ্ধে চাঁদাবাজি, মাদকাসক্ত, বিবাহিত, চাকরিজীবী, মামলার আসামি, বয়স উত্তীর্ণ, জাসদের পদধারী, ছাত্রদল সংশ্লিষ্টতার অভিযোগে কয়েকজন নেতার নামও প্রকাশ করা হয়। যার মধ্যে রয়েছেন, সহ-সভাপতি পদ পাওয়া সাগর হোসেন সোহাগ, রানা হামিদ, আনন্দ সাহা পার্থ, শুভ্রদেব হালদার, জিয়াসমিন শান্তা, শাহরিয়ার সিদ্দিকী শিশিম, মিজানুর রহমান পিকুল, রাকিবুল হাসান নোবেল, মো. মহিন উদ্দিন, দপ্তর সম্পাদক পদে ইন্দ্রনীল দেব শর্মা রনি, উপ-আইন বিষয়ক সম্পাদক পদে শাহেদ খান, উপ-গণশিক্ষা বিষয়ক সম্পাদক ওয়াহিদ খান রাজ, উপ-স্বাস্থ্য ও চিকিৎসা বিষয়ক সম্পাদক পদে রাজেশ বৈশ্য, সহ-সম্পাদক পদে মীর সাব্বির ও জাহিদুল ইসলাম নোমান, সদস্য পদে সাজিদ আহমেদ দীপ্ত, বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয় বিষয়ক সম্পাদক পদে আল-আমিন রহমান, উপ-তথ্য ও গবেষণা পদে মো. আব্দুর রশিদ (রাফি)।
আরবিএস/এসএম