কাতার প্রবাসী জালাল আহমেদ কাজ করতে চান ফরিদগঞ্জের উন্নয়নে
মধ্যপ্রাচ্যের তেল সমৃদ্ধ সম্ভাবনাময় একটি দেশ কাতার। পারস্য উপসাগরের ছোট একটি দেশ। মাথাপিছু আয়ে বর্তমানে পৃথিবীর সবচেয়ে ধনী দেশ। ২০২২ সালের ফুটবল বিশ্বকাপের আয়োজক দেশ কাতারে ফুটবল বিশ্বকাপ ঘিরে ব্যাপক কর্মযজ্ঞ চলছে।
দেশটিতে বর্তমানে চার লাখের বেশি প্রবাসী বাংলাদেশি কর্মরত আছেন। এদের অনেকেই ব্যবসা-বাণিজ্যসহ বিভিন্ন খাতে সুনামের সঙ্গে গুরুত্বপূর্ণ অবদান রেখে চলেছেন।
বিজ্ঞাপন
কাতারের ব্যবসা-বাণিজ্যে অন্যতম খাত হচ্ছে কনস্ট্রাকশন ওয়ার্ক। কনস্ট্রাকশনে, মেশন, কারপেন্টার, স্টিল ফিক্সার, মার্বেল টাইলসসহ বিভিন্ন নির্মাণ শ্রমিকের পেশায় কাজ করেন বেশিরভাগ বাংলাদেশিরা। কাতারে ব্যবসা বাণিজ্যে এগিয়ে যাচ্ছে বাংলাদেশিরা। পুরুষদের পাশাপাশি বাংলাদেশি নারীরাও কাতারে ব্যবসায় যুক্ত হচ্ছেন। দেশটিতে ১০ হাজারের বেশি প্রবাসী বাংলাদেশি পরিবার নিয়ে বসবাস করছেন।
কাতারে বাংলাদেশিদের মধ্যে একমাত্র কাতারি রেসিডেন্সধারী জালাল আহমেদ। তিনি দীর্ঘদিন কাতারে সুনামের সাথে ব্যবসা করে যাচ্ছেন। তিনি কাতার থেকে বাংলাদেশে সবচেয়ে বেশি রেমিট্যান্স প্রেরণ করে বাংলাদেশ সরকারের কাছ থেকে সিআইপি নির্বাচিত হয়েছেন। চাঁদপুর জেলার ফরিদগঞ্জ উপজেলার এ কৃতী সন্তান কাতারে স্থায়ী বসবাসের রেসিডেন্সি পাওয়া একমাত্র বাংলাদেশি। দেশটির সরকার জালাল আহমেদকে স্থায়ীভাবে বসবাসের অনুমতি দিয়েছে।
জালাল আহমেদ চাঁদপুরের ফরিদগঞ্জ উপজেলার পৌর এলাকার মিয়াজি বাড়ীর হাজী আব্দুর রশিদ মিয়াজির বড় ছেলে। তিনি কাতারে গোল্ডেন মার্বেল কোম্পানির কর্ণধার। জালাল আহমেদ পাঁচ ভাই ও দুই বোনের মধ্যে সবার বড়। তার এক বোন মাজেদা বেগম বর্তমানে ফরিদগঞ্জ উপজেলা পরিষদের মহিলা ভাইস চেয়ারম্যানের দায়িত্বে আছেন। তিন মেয়ে আর এক ছেলের জনক জালাল আহমেদ সপরিবারে কাতারে থাকেন।
কঠোর পরিশ্রম আর মেধা দিয়ে কাতারে গড়ে তুলছেন গোল্ডেন মার্বেল কোম্পানি। নিজ জন্মস্থান চাঁদপুর জেলার ফরিদগঞ্জ থানার মানুষকেও কাতারে এনে স্বাবলম্বী করেছেন। পরিবারের অনেক সদস্য বর্তমানে কাতারে রয়েছেন। বর্তমানে বাংলাদেশ, ভারত, পাকিস্তান, শ্রীলঙ্কা, মিশর, নেপালসহ অনেক দেশের শ্রমিক জালাল আহমেদের গোল্ডেন মার্বেল কোম্পানিতে কর্মরত রয়েছেন।
জানা গেছে, প্রায় ৩২ বছরের কাতারের প্রবাস জীবনে সুনামের সঙ্গে প্রতিষ্ঠিত এ ব্যবসায়ী সফল ভাবে ব্যবসা করে যাচ্ছেন। কাতারে তার মালিকানাধীন চারটি মার্বেল পাথরের কারখানা রয়েছে। এছাড়া বাংলাদেশের খুলনার মোংলায় তার একটি মার্বেল ফ্যাক্টরি রয়েছে। জালাল আহমেদ প্রতি বছর বাংলাদেশে ২০ থেকে ২৫ কোটি টাকা দান করেন। পাশাপাশি এলাকায় নিজস্ব অর্থায়নে এতিমখানা, মসজিদ, মাদ্রাসা তৈরি করেছেন। অসহায় মানুষদের নিজস্ব অর্থায়নে ঘর নির্মাণ করে দিয়েছেন। অসচ্ছল মানুষদের আর্থিকভাবে সহযোগিতা করে যাচ্ছেন। করোনার সময়ে ফরিদগঞ্জসহ দেশের বিভিন্ন জায়গায় মানুষকে সহযোগিতা করেছেন। করোনার কারণে চাকরি হারানো কাতার প্রবাসীদের পাশেও দাঁড়িয়েছেন তিনি।
জালাল আহমেদ বলেন, কাতারে বাংলাদেশিদের ব্যবসায়িক সাফল্যের জন্য বেশি করে পরিশ্রম করতে হবে। এখানে অর্থ অপচয়ের প্রচুর জায়গা রয়েছে। এসব জায়গায় থেকে নিজেদের দূরে রাখতে হবে। কাজকেই বেশি প্রাধান্য দিতে হবে। মনে রাখতে হবে, আমরা এখানে কাজ করতে এসেছি। কাজ করে অর্থ উপার্জন করতে এসেছি।
তিনি বলেন, নিজের যোগ্যতা আর মেধা দিয়ে এগিয়ে যেতে হবে। অর্থ উপার্জন করে নিজেকে প্রতিষ্ঠিত করতে হবে। নিজের ভাগ্য নিজে পরিবর্তন করে নিতে হবে। ভাগ্য পরিবর্তনের জন্য চেষ্টা থাকতে হবে নিজের ভেতর। কেউ আপনার ভাগ্য বদলে দিতে পারবে না। সাময়িক কিছু সহযোগিতা পাবেন মানুষের কাছে।
তিনি আরো বলেন, কাতারে চার লাখের বেশি প্রবাসী বাংলাদেশি রয়েছেন। কাতারে প্রবাসী বাংলাদেশিদের মধ্যে ঐক্যের অনেক অভাব রয়েছে। একজনের ভাল আরেকজন পছন্দ করে না।
জালাল আহমেদ আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচনে চাঁদপুরের ফরিদগঞ্জ আসন থেকে আওয়ামী লীগের মনোনয়ন প্রত্যাশী। মনোনয়ন পেলে নিজের জন্মস্থান ফরিদগঞ্জের মানুষের ভাগ্যের উন্নয়নে কাজ করতে চান। রাজনীতিতে আসার ইচ্ছা না থাকলেও দেশে যখন ছুটিতে যান ফরিদগঞ্জের মানুষের ভালবাসা আর অবহেলিত ফরিদগঞ্জবাসীর কথা চিন্তা করেন। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ও আওয়ামী লীগ যদি মনোনয়ন দেয় আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচনে ফরিদগঞ্জ আসন থেকে নির্বাচন করবেন তিনি। পাশাপাশি সংসদে দাঁড়িয়ে প্রবাসীদের অধিকার আদায়ে ভূমিকা রাখতে চান জালাল আহমেদ।
ওএফ