কানাডার সরকার ও বিভিন্ন প্রদেশের কড়া নজরদারি এবং সর্তকতা থাকা সত্ত্বেও দেশটিতে করোনার নতুন নতুন ধরন দিন দিন বেড়েই চলেছে। গত দুই মাসে কানাডায় যে পরিমাণ ফ্লাইট অবতরণ করেছে তার বেশিরভাগই টরোন্টো পিয়ারসন এয়ারপোর্টে। যে কারণে কানাডার অন্টারিও প্রদেশ ও এর আশপাশের এলাকায় প্রচুর পরিমাণে করোনার বিভিন্ন ধরনে আক্রান্ত রোগী শনাক্ত হচ্ছে।

সম্প্রতি দিল্লি থেকে ৬২টি, যুক্তরাষ্ট্রের বিভিন্ন শহর থেকে ৪২টি, সংযুক্ত আরব আমিরাত থেকে ২৬টি, কাতারের দোহা থেকে ১৮টি, প্যারিস থেকে ১৬টি, ইস্তাম্বুল থেকে ১৫টি ও ফ্রাঙ্কফুর্ট থেকে ১২টি ফ্লাইট কানাডায় অবতরণ করেছে। নিষিদ্ধ করার আগে দিল্লি থেকে সর্বশেষ যে চারটি ফ্লাইট কানাডায় অবতরণ করেছে সেগুলোর একাধিক সারিতে করোনা পজিটিভ যাত্রী ছিলেন বলে জানা গেছে।

কানাডা জনস্বাস্থ্য বিভাগের তথ্য উল্লেখ করে এ সপ্তাহের শুরুর দিকে কানাডার স্থানীয় গণমাধ্যম কানাডিয়ান প্রেস জানায়, ২২ ফেব্রুয়ারি থেকে ১১ এপ্রিল পর্যন্ত কানাডার চারটি বিমানবন্দরে অবতরণকারী আন্তর্জাতিক ফ্লাইটগুলোর দুই হাজার যাত্রীর করোনা শনাক্ত হয়েছে। আর ২২ ফেব্রুয়ারি থেকে ২৩ এপ্রিল পর্যন্ত আন্তর্জাতিক ফ্লাইটগুলোর তিন হাজার ১৫৮ জনের করোনা শনাক্ত হয়েছে। অর্থাৎ ভারত ও পাকিস্তান থেকে ফ্লাইট বন্ধ করার আগের ১২ দিনে এক হাজার বেশি যাত্রী করোনা নিয়ে কানাডায় এসেছেন। এর পরিপ্রেক্ষিতে অন্টারিওর প্রিমিয়ার সীমান্তের বিষয়ে পদক্ষেপ গ্রহণের আহ্বান জানালে জাস্টিন ট্রুডো বলেন, আমরা জানি দেশের ভেতরে সংক্রমিতের যে সংখ্যা সীমান্ত দিয়ে আসছে তার চেয়ে খুবই কম।

এদিকে আজ কানাডার আলবার্টা প্রদেশের ক্যালগেরিতে সরজমিনে করোনা শনাক্ত কেন্দ্রে প্রচুর সংখ্যক গাড়ির বহর নিয়ে করোনার ধরন পরীক্ষার জন্য দীর্ঘ লাইনে লোকজনকে অপেক্ষা করতে দেখা গেছে। যদিও আলবার্টার প্রিমিয়ার ও চিফ মেডিকেল অফিসার লাইভ মিটিংয়ে সাধারণ মানুষকে নিয়মিত সতর্ক করে আসছেন।

ক্যালগেরিতে বসবাসরত প্রবাসী বাংলাদেশি আশরাফুর রহমান বলেন, শুধু ভ্যাকসিন নিলেই করোনাভাইরাস থেকে মুক্তি পাওয়া যাবে বা করোনাভাইরাসে আক্রান্তের সংখ্যা কমে যাবে- এ ধারণা থেকে আমাদের বের হয়ে আসতে হবে। তা না হলে নিজেদের ভুলের কারণে বড় ধরনের ক্ষতি হয়ে যেতে পারে। সরকারের পাশাপাশি আমাদেরও সদিচ্ছা থাকতে হবে। সামাজিক দূরত্ব বজায় রাখতে হবে এবং নিয়মিত মাস্ক পরতে হবে।

সর্বশেষ তথ্য অনুযায়ী, কানাডায় করোনাভাইরাসে আক্রান্তের সংখ্যা ১২ লাখ ৭৩ হাজার ১৬৯ জন, মৃত্যুবরণ করেছেন ২৪ হাজার ৫৮৯ জন এবং সুস্থ হয়েছেন ১১ লাখ ৬৭ হাজার ৪২২ জন।

এসএসএইচ