বাংলাদেশি কৃষিপণ্য বিক্রি হচ্ছে মালয়েশিয়ার বৃহৎ মল লুলুতে
বাংলাদেশের কৃষিপণ্য আলু ও পটল বিক্রি হচ্ছে মালয়েশিয়ার বৃহৎ মল লুলুতে। মলে সাজিয়ে রাখা হয়েছে, এশিয়া ও ইউরোপের বিভিন্ন দেশের সবজি ও ফল। সেখানে সব দেশের পতাকা সম্বলিত সবজি ও দাম টাঙানো রয়েছে। বাংলাদেশি আলুর কেজিপ্রতি দাম লেখা রয়েছে ১.৯৯ রিঙ্গিত এবং পটলের কেজিপ্রতি দাম লেখা রয়েছে ১২.৯৯ রিঙ্গিত।
বুধবার (১৯ মে) সরেজমিনে বৃহৎ মল লুলুতে দেখা গেছে, ক্রেতাদের মধ্যে বাংলাদেশি আলু ও পটলের চাহিদা বেশি। কয়েকজন ক্রেতা বাংলাদেশের স্টিকার সম্বলিত আলু ও পটল ৫ কেজি, ২ কেজি করে কিনে নিচ্ছেন। নাম প্রকাশ না করার শর্তে এক ক্রেতা বলেন, বাংলাদেশি সবজি তার খুব পছন্দ। তাই সবসময় তিনি এখান থেকে পছন্দের সবজি কেনেন।
বিজ্ঞাপন
মালয়েশিয়ার মেলাকার, সিতি নূরাইনি, থাকেন কুয়ালালামপুর শহরে। চলমান বিধিনিষেধের কারণে একসঙ্গে অনেক কেনাকাটা করেছেন। এর মধ্যে তালিকায় তার পছন্দের সবজি আলু ও পটল। অন্যান্য দেশের এ আইটেম থাকলেও দেখা গেল তিনি কিনেছেন বাংলাদেশের আলু ও পটল। জানতে চাইলে সিতি বলেন, বাংলাদেশের আলু তার পছন্দ।
লুলুতে কাজ করেন প্রায় ১৩ থেকে ২০ জন বাংলাদেশি। টাঙ্গাইলের শফিক দুবছর ধরে এখানে কাজ করছেন। তিনি জানান, আমাদের দেশের সবজির ব্যাপক চাহিদা রয়েছে এখানে। দুই বছর ধরেই দেখে আসছি ক্রেতারা কিনে নিচ্ছেন আমাদের দেশের সবজি। দেশের সবজি বিদেশের মাটিতে বিক্রি হচ্ছে এটাই তার আনন্দ। শফিক জানালেন, বাংলাদেশের কৃষিপণ্যের পাশাপাশি বাংলাদেশি কোম্পানির মুড়ি, জুস, বিস্কুটও বিক্রি হচ্ছে লুলুতে।
বিজ্ঞাপন
এদিকে মালয়েশিয়ার বাংলাদেশ হাইকমিশনের প্রত্যক্ষ তত্ত্বাবধানে কৃষি মন্ত্রণালয়ের আওতাধীন বাংলাদেশ কৃষি উন্নয়ন করপোরেশন (বিএডিসি) কর্তৃক উৎপাদিত আলু চলতি বছর মালয়েশিয়ায় রফতানি শুরু হয়েছে। এর আগে গত ২৩ ফেব্রুয়ারি বাংলাদেশের রফতানিকারক প্রতিষ্ঠান ন্যানো গ্রুপ ও বিএডিসির মধ্যে আলু উৎপাদন ও রফতানিবিষয়ক একটি চুক্তি স্বাক্ষরিত হয়।
চুক্তি অনুযায়ী বিএডিসি এপর্যন্ত চারটি কনটেইনারের মাধ্যমে মোট ১১১ টন ডায়মন্ড জাতের আলু মালয়েশিয়ায় রফতানি করেছে। মালয়েশিয়ার আমদানিকারক কোম্পানি মাইডিন মালয়েশিয়া, চিন হুয়াত ট্রেডিং ও টেনবিলি গ্রুপ এ আলু আমদানি করেছে।
বিএডিসির ইতিহাসে এটিই সর্বপ্রথম মালয়েশিয়ায় আলু রফতানি। রফতানি করা এ আলু বগুড়া, পঞ্চগড় ও সিরাজগঞ্জ থেকে সরবরাহ করা হয়েছে।
বিএডিসির মানসম্মত বীজ আলু উৎপাদন, সংরক্ষণ ও কৃষক পর্যায়ে বিতরণ জোরদারকরণ প্রকল্পের আওতায় চুক্তিবদ্ধ চাষ বা কনট্রাক্ট ফার্মিংয়ের মাধ্যমে ডায়মন্ড জাতের উন্নতমানের এ আলু উৎপাদিত হয়েছে।
মালয়েশিয়া প্রতিবছর প্রায় একশ মিলিয়ন মার্কিন ডলার মূল্যের আলু আমদানি করে থাকে। এর মধ্যে অর্ধেকের বেশি আলু আমদানি করে চীন থেকে।
মালয়েশিয়ার অন্যান্য প্রধান আলু আমদানিকারক দেশগুলো হলো- বাংলাদেশ, ভারত, পাকিস্তান, যুক্তরাষ্ট্র ও অস্ট্রেলিয়া।
বাংলাদেশ হাইকমিশনের কাউন্সিলর (বাণিজ্যিক) মো. রাজিবুল আহসান জানান, করোনা মহামারি শুরু হওয়ার পর থেকে মালয়েশিয়ায় খাদ্যপণ্য বিশেষ করে কৃষিপণ্যের আমদানি আগের তুলনায় বেড়ে গেছে। এছাড়া অন্যান্য কৃষিপণ্যের পাশাপাশি সম্প্রতি মালয়েশিয়াতে নতুন করে বাংলাদেশের কাঁচা কলা ও লেবু রফতানির উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে বলে জানিয়েছেন হাইকমিশনের কাউন্সিলর বাণিজ্যিক রাজিবুল আহসান।
এসএসএইচ