রোজা রাখার নিয়তে সাহরি খাওয়া সুন্নত। সাহরি বরকতময় খাবারও বটে। হাদিসে সাহরি খাওয়ার অনেক ফজিলত ও সওয়াবের কথা বর্ণিত হয়েছে। রাসুল (সা.) সাহরি খেতে উৎসাহ দিয়েছেন ও গুরুত্বারোপ করেছেন।

সাহরি মূলত আরবি শব্দ। এর অর্থ শেষ রাতের বা ভোরের খাবার। সুবহে সাদিকের কাছাকাছি সময়ে যে আহার করা হয়, ইসলামের পরিভাষায় সে খাবারকে সাহরি বলে।

আল্লাহ তাআলা পবিত্র কোরআনে সাহরি খাওয়ার সময় সম্পর্কে বলেন— 

...তোমরা পানাহার করো— যতক্ষণ রাতের কালো রেখা থেকে প্রভাতের শুভ্র রেখা তোমাদের কাছে প্রতিভাত না হয়...।

(সুরা বাকারা, আয়াত : ১৮৭)

অত্যন্ত বরকতময় খাবার সাহরি
রাসুল (সা.) বলেছেন, ‘তোমরা সাহরি খাও, কারণ সাহরিতে বরকত আছে।’ (বুখারি শরিফ, হাদিস : ১৯২৩)

হাদিসে রাসুল (সা.) বলেছেন— 

আহলে কিতাব তথা ইহুদি-খ্রিস্টান আর মুসলমানদের রোজার মধ্যে শুধু সাহরি খাওয়াই পার্থক্য। অর্থাৎ তারা সাহরি খায় না আর আমরা সাহরি খাই।

(মুসলিম, হাদিস : ১৮৪৩; তিরমিজি, হাদিস : ৬৪২)

সাহরি একটু দেরি করে খাওয়া সুন্নত। আল্লাহর রাসুল (সা.) শেষ সময়েই সাহরি খেতেন। ফজরের ওয়াক্ত হওয়ার পূর্বক্ষণে সাহরি খেলে— রোজা রাখতে বেশি সহজ হয়। পাশাপাশি ফজরের নামাজও সহজে আদায় করা যায়। দীর্ঘ সময় অপেক্ষা করতে হয় না।

সাহরির গুরুত্বপূর্ণ মাসাআলা
♦ সাহরি খাওয়া সুন্নত। পেটে ক্ষুধা না থাকলে দুই-একটি খেজুর খেয়ে নেওয়া উত্তম। অথবা অন্য কোনো জিনিস খেয়ে নেওয়া যায়। (হেদায়া : খণ্ড : ১, পৃষ্ঠা : ১৮৬)

♦ বিলম্বে সাহরি খাওয়া উত্তম। আগে খাওয়া হয়ে গেলে; শেষ সময়ে কিছু চা, পানি, পান ইত্যাদি খেলেও সাহরির ফজিলত অর্জিত হবে। (হেদায়া : খণ্ড : ১, পৃষ্ঠা : ১৮৬)

♦ সন্দেহ হয়, এমন সময় সাহরি খাওয়া মাকরুহ। (আলমগীরী : খণ্ড : ১, পৃষ্ঠা : ২০১)

♦ নিদ্রার কারণে সাহরি না খেতে পারলেও রোজা রাখতে হবে। সাহরি না খেতে পারায় রোজা না রাখা অত্যন্ত পাপ। (বেহেশতি জেওর, পৃষ্ঠা : ৩৫৩)

♦ সঠিক ক্যালেন্ডারে সুবহে সাদিকের যে সময় দেওয়া থাকে, তার দু-চার মিনিট আগে খানা বন্ধ করে দেবে। এক-দুই মিনিট আগে-পিছে হলে রোজা হয়ে যাবে। তবে ১০ মিনিট পর খাওয়ার দ্বারা রোজা হবে না। (আপকে মাসায়েল : খণ্ড : ৩, পৃষ্ঠা : ২০১) কিন্তু মনে রাখতে হবে, শুধু ক্যালেন্ডারের ওপর নির্ভর করা উচিত নয়, কেননা অনেক সময় তাতে ভুলও হয়ে থাকে, তাই এ ব্যাপারে সতর্ক হওয়া দরকার।