টেস্ট চ্যাম্পিয়নশিপের ফাইনাল খেলতে ত্রিমুখী লড়াই চালিয়ে যাচ্ছে ভারত, দক্ষিণ আফ্রিকা ও শ্রীলঙ্কা। তাদের মধ্যে কেবল একটি দলই  ফাইনাল খেলতে পারবে। ইতোমধ্যে তাদের প্রতিপক্ষ নির্ধারণ হয়েছে। আগেই ফাইনালে উত্তীর্ণ হয়েছে বিশ্বচ্যাম্পিয়ন অস্ট্রেলিয়া। শিরোপা নির্ধারণী ম্যাচ খেলার সুযোগ পেতে ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিপক্ষে সিরিজ খেলেছে প্রোটিয়ারা। দুই ম্যাচের ওই সিরিজে তারা উইন্ডিজদের হোয়াইটওয়াশ করেছে।

স্বাগতিক প্রোটিয়ারা সিরিজের দ্বিতীয় ও শেষ টেস্টে উইন্ডিজদের ২৮৪ রানের বড় ব্যবধানে হারিয়েছে। এই ম্যাচ জয়ে বিশ্ব টেস্ট চ্যাম্পিয়নশিপের পয়েন্ট টেবিলে তিন নম্বরে উঠে এসেছে তারা। তিনে থাকা শ্রীলঙ্কা নেমে গেছে চার নম্বরে। তবে সিরিজ শেষ হয়ে যাওয়ায় দক্ষিণ আফ্রিকার ফাইনাল খেলা প্রায় অসম্ভব হয়ে দাঁড়িয়েছে। সেই হিসেবে লড়াই চলবে শ্রীলঙ্কা ও ভারতের মধ্যে।

আজ (১১ মার্চ) ছিল দক্ষিণ আফ্রিকা ও ওয়েস্ট ইন্ডিজের মধ্যকার দ্বিতীয় টেস্টের চতুর্থ দিন। এর আগেরদিন থেকেই অধিনায়ক বাভুমার অনবদ্য ইনিংসে জয়ের সুবাস পাচ্ছিল আফ্রিকানরা। এই ম্যাচে অধিনায়ক হিসেবে বাভুমা প্রথম এবং দ্বিতীয় টেস্ট সেঞ্চুরি পেয়েছেন। তবে এই কীর্তি গড়তে তার লেগে গেছে ৮৮ ইনিংস। তার অনবদ্য ১৭২ রানের ইনিংসে প্রোটিয়ারা ৩৯১ রানের বড় লক্ষ্য দাঁড় করায়।

প্রায় আড়াই হাজার দিন পর সেঞ্চুরি পেয়েছেন বাভুমা

জিততে হলে রান তাড়ার নতুন রেকর্ড গড়তে হতো ওয়েস্ট ইন্ডিজকে। জোহানেসবার্গে টেস্টে তাড়া করে জয়ের রেকর্ড ৩১০ রানের, তা-ও অস্ট্রেলিয়া করেছিল এক যুগ আগে। জবাবে ওয়েস্ট ইন্ডিজের ইনিংস ভেঙে পড়ে তাসের ঘরের মতো। যে ভাঙনের শুরুটা হয়েছে অধিনায়ক ক্রেগ ব্রাফেটকে দিয়ে। পিঠের চোট থেকে সেরে ওঠা রাবাদার সামনে আজও কথা বলেনি ব্রাফেটের ব্যাট। এই নিয়ে চলতি সিরিজে টানা ৪ বার রাবাদার বলে ফিরেছেন তিনি। 

এরপর বাভুমা স্পিনার সাইমন হার্মারের হাতে নতুন বল তুলে দেন। প্রথম বল থেকেই টার্ন পাচ্ছিলেন হার্মার। ডানহাতি এই স্পিনারের সামনে অনেকটা অসহায় লাগছিল তেজনারায়ন চন্দরপলকে। শেষ পর্যন্ত এই স্পিনারের বলেই উইকেট দিয়েছেন শিবনারায়ন চন্দরপলের ছেলে। মাত্র ৫ রানের মধ্যে ৪ উইকেট হারিয়েছে তখনই ম্যাচ থেকে ছিটকে যায় ওয়েস্ট ইন্ডিজ। এমন পরিস্থিতিতে ব্যাটিং করতে এসেও হার্মারের বলে সুইপ শট খেলে মিড উইকেটে ধরা পড়েন জার্মেইন ব্ল্যাকউড। চতুর্থ দিনের মধ্যাহ্নবিরতির আগে ৩৪ রানে ৬ উইকেট হারায় ওয়েস্ট ইন্ডিজ। এরপর ডি সিলভা ও হোল্ডার ৪৮ রানের জুটি গড়েন। 

তাবে শেষ পর্যন্ত ইনিংস বড় করতে পারেননি হোল্ডার। জেরাল্ড কোয়েটজির বলে তিনি ১৯ রান করে আউট হয়েছেন। এরপর কোয়েটজির বলে ফিরেছেন ডি সিলভাও। ফলে মাত্র ১০৬ রানেই গুটিয়ে যায় ওয়েস্ট ইন্ডিজ। ৩টি করে উইকেট নিয়েছেন হার্মার ও কোয়েটজি। 

সংক্ষিপ্ত স্কোর : 
দক্ষিণ আফ্রিকা ১ম ইনিংস : ৩২০ 
ওয়েস্ট ইন্ডিজ ১ম ইনিংস : ২৫১ 

দক্ষিণ আফ্রিকা ২য় ইনিংস : (আগের দিন ২৮৭/৭) ১০০.৪ ওভারে ৩২১ (বাভুমা ১৭২; রোচ ১৪-২-৫৪-১, জোসেফ ১৪-১-৪৯-২, হোল্ডার ১৯.৪-২-৪৮-৩, মায়ার্স ১৭-৫-৪৬-৩, রেফার ১১-০-৩৬-১) 

ওয়েস্ট ইন্ডিজ ২য় ইনিংস : ৩৫.১ ওভারে ১০৬ (ব্র্যাথওয়েট ১৮, ডি সিলভা ৩৪, হোল্ডার ১৯; রাবাদা ৭-১-১৯-২, হার্মার ১৭.১-৮-৪৫-৩, মহারাজ ২.৫-১-৪-২, কোয়েটজি ৮-১-৩৭-৩) 

ফল : দক্ষিণ আফ্রিকা ২৮৪ রানে জয়ী 
সিরিজ : ২ ম্যাচের সিরিজে ২-০’তে জয়ী দক্ষিণ আফ্রিকা 
ম্যান অব দ্য ম্যাচ : টেম্বা বাভুমা 
ম্যান অব দ্য সিরিজ : এইডেন মারক্রাম

এএইচএস