আবাহনীকে জিততে দেয়নি মোহামেডান
ছবি : ঢাকা পোস্ট/ আরাফাত জোবায়ের
দশ হাজার দর্শক ধারন ক্ষমতার শহীদ ধীরেন্দ্রনাথ দত্ত স্টেডিয়ামে আবাহনী ও মোহামেডানের খেলা দেখতে উপস্থিত হয়েছিলেন প্রায় হাজার ছয়েক দর্শক। দু’দলের গোলেই উৎসব করেছেন দর্শকরা। দুই দলের সমর্থকরা জয়ের উচ্ছ্বাস নিয়ে ফিরতে না পারলেও চারটি গোল দেখে তৃপ্ত হয়েছেন। বৃহস্পতিবার কুমিল্লায় প্রিমিয়ার লিগের ম্যাচে আকাশী নীল শিবিরকে ২-২ গোলে রুখে দেয় মোহামেডান।
এই ড্রয়ে ঢাকা আবাহনী পয়েন্ট তালিকায় দ্বিতীয় স্থানে নেমে এল। চার ম্যাচে ঢাকা আবাহনীর পয়েন্ট ১০ যেখানে কিংস চার জয়ে ১২। মোহামেডান টেবিলের শীর্ষ থেকে অনেক দূরে। চার ম্যাচে পয়েন্ট মাত্র পাঁচ।
বিজ্ঞাপন
মোহামেডানের ভেন্যু কুমিল্লা নেওয়ার নেপথ্যে নায়ক বাদল রায়ের। তিনি সম্প্রতি মৃত্যুবরণ করেছেন। আবাহনী-মোহামেডান ম্যাচের আগে বাদলকে ভুলেনি তার প্রিয় ক্লাব মোহামেডান। এখানকার মাটি ও মানুষের কাছে আজও অম্লান সাবেক দেশসেরা এই মিডফিল্ডার। তাইতো দেশের দুই ঐতিহ্যবাহী দলের খেলায় অন্যভাবে হাজির ছিলেন বাদল রায়। তার ছবিতে মালা দিয়ে মোহামেডানের সাদা-কালো রংয়ের লুঙ্গি ও জামা পড়ে হাজির জনা দশেক মোহামেডানের সমর্থক। হাতে সাদা কালো পতাকাও ছিল তাদের। নিজেদের কৃতি এই সন্তানকে এই প্রজন্মের কাছে স্মরন করিয়ে দিলেন তারা।
ম্যাচের শুরু থেকেই স্বাগতিকদের চাপে রেখে খেলতে থাকে আবাহনী। যার ফল তারা গোল পেয়ে যায় ম্যাচের ১৩ মিনিটেই। নিজেদের সীমানায় ফ্রি কিক পায় ধানমন্ডির দলটি। আফগান ডিফেন্ডার মাসিহ সাইঘানির নেওয়া ফ্রি কিকে বল মোহামেডানের সীমানায়।
বিজ্ঞাপন
সেখানে অনেকটা ফাঁকায় দাঁড়ানো ছিলেন আবাহনীর হাইতিয়ান ফরোয়ার্ড কারভেন্স বেলফোর্ট। তিনি বলটি হেড করে দেন সতীর্থ ব্রাজিলিয়ান ফরোয়ার্ড ফ্রান্সিসকো তোরেসকে। সুযোগ সন্ধানী তোরেস সেই বলে মাথা ছুঁয়ে বল জালে জড়ান।
মিনিট চারেক পরই সমতায় ফেরে মোহামেডান। একটি সংঘবদ্ধ আক্রমণ করে সাদা কালোরা। বক্সের ভেতরে সতীর্থ আমির হাকিম বাপ্পীর কাছ থেকে বল পেয়ে চমৎকারভাবে গোল করেন মালির ফরোয়ার্ড সুলেমানে দিয়াবাতে। ম্যাচের ৩৩ মিনিটে ফের এগিয়ে যায় আকাশী হলুদ শিবির।
নিজেদের অর্ধে ফ্রি কিক পায় তারা। সাদ উদ্দিন উঁচু করে বল ফেলেন মোহামেডানের বক্সে। জটলা থেকে সেই বল পেয়ে প্রতিপক্ষের গোলপোস্ট লক্ষ্য করে জোরালো শট নেন তোরেস। শটটি মোহামেডানের এক ডিফেন্ডারের শরীরে লেগে ফিরে আসে। বক্সের ভেতরে বল পেয়ে যান আনমার্কে থাকা অ্যাটাকিং মিডফিল্ডার জুয়েল রানা। তার ডান পায়ের শট আর ফেরাতে পারেননি মোহামেডানের গোলকিপার আহসান হাবিব বিপু।
৬৬ মিনিটে বাঁ প্রান্ত থেকে হাবিবুর রহমানের কর্ণার। গোলমুখে জটলা। আবাহনীর ডিফেন্ডার ক্লিয়ার করতে ব্যর্থ হন। বক্সে দাঁড়ানো নাইজেরয়ান মিডফিল্ডার আবিওলা নুরাতের মাইনাস থেকে বলে শট করে গোলে পরিণত করেন মালির সেই ফরোয়ার্ড সুলেমানে দিয়াবাতে। আরও একবার সমতায় ফেরে ম্যাচ।
দ্বিতীয়ার্ধে দুর্দান্ত খেললেও আর গোলের দেখা পায়নি স্বাগতিকরা। ফলে আবাহনীর কাছ থেকে এক পয়েন্ট কেড়ে নিয়েই মাঠ ছাড়ে মোহামেডান। কুমিল্লা শহর থেকে কিছুটা দূরে শহীদ ধীরেন্দ্রনাথ দত্ত স্টেডিয়াম। সবুজ ঘাস দেখলেই প্রাণ জুড়িয়ে যায়। কুমিল্লার এই স্টেডিয়ামটি এক সময় ছিল ক্রিকেটের। গত বছর থেকে ফুটবলের জন্য নির্ধারিত হওয়ায় মাঠের পরিচর্যা করেছিল মোহামেডান ও বসুন্ধরা কিংস।
এজেড/এমএইচ/এটি