কয়েক ঘণ্টা পরই কাতারে আফগাননিস্তানের বিপক্ষে লড়বেন জামাল ভূঁইয়ারা। আফগানদের একবারই হারানোর রেকর্ড রয়েছে বাংলাদেশের। সেই ১৯৭৯ সালে এশিয়ান কাপ বাছাইয়ে। আফগানিস্তানকে হারিয়ে বাংলাদেশ প্রথম এবং একবারের মতোই ১৯৮০ কুয়েত এশিয়া কাপে জায়গা করে নেয়। ৪-১ গোলে জয় পাওয়া সেই ম্যাচের অন্যতম জয়ের নায়ক ছিলেন আশরাফ উদ্দিন আহমেদ চুন্নু। 

চার দশক পেরিয়ে গেলেও এখনো সেই ম্যাচের স্মৃতি জলজলে চুন্নুর মধ্যে, ‘এশিয়া কাপ খেলার স্বপ্ন আমাদের সকলের মধ্যে। তাই ওই ম্যাচটি ছিল অনেকটা বাচা মরার মতো। আগের ম্যাচ ড্র হয়েছিল। তাই আমরা মরিয়া ছিলাম ম্যাচ জেতার জন্য। আমরা আক্রমণাত্মক ফুটবল খেলেছিলাম।’

এত গুরুত্বপূর্ণ ম্যাচে দুই গোল করেছিলেন চুন্নু। নিজের সেই গোল ও ম্যাচের কিছু মুহূর্ত সম্পর্কে ফুটবলের এই কিংবদন্তী বলেন, ‘আমি সাধারণত লেফটে খেলি। ওই ম্যাচে কিছু সময় রাইটে ছিলাম। মাঝমাঠ থেকে ভালো একটা বল পেয়েছিলাম। একজন কাটিয়ে দূরপাল্লার শট করে গোল করি।’ ওই ম্যাচে চুন্নুর পাশাপাশি গোল করেছিলেন আব্দুল হালিম। বাংলাদেশের জয়ের পেছনে হালিমকেও অবদান দিলেন চুন্নু, ‘হালিম ময়মনসিংহের ছেলে । গোল করার দারুণ ক্ষমতা ছিল ওর। ওই ম্যাচে ও দুর্দান্ত খেলেছিল। বক্সের মধ্যে বেশ জটলার মধ্যে থেকে ও একটা দারুণ গোল করেছিল। আমাদের ইচ্ছে ছিল পরের মৌসুমে ওকে আবাহনীতে নেব। কিন্তু ইনজুরিতে পড়ে যায়।’ 

আন্তর্জাতিক ফুটবলে বাংলাদেশের জয় খুবই কম। আশির দশকের একটি ৪ গোল দেয়াকে অত্যন্ত তাৎপর্যপূর্ণ মনে করেন চুন্নু,‘ চার গোল দিয়েছি মানে আমরা অত্যন্ত আক্রমণাত্মক ফুটবল খেলেছিলাম সেদিন। আফগানরা দৈহিকভাবে এগিয়ে থাকলেও আমরা কোয়ালিটি দিয়ে তাদের পরাজিত করেছিলাম। আবাহনী-মোহামেডান ম্যাচে হাজার হাজার দর্শক থাকতো। জাতীয় দলের ম্যাচের জয়ের পর সেদিন কি পরিস্থিতি হয়েছিল বলার অপেক্ষা রাখে না’। 

সেই ম্যাচের পর আর বাংলাদেশ  আফগানিস্তানকে হারাতে পারেনি। আজ ৪২ বছর পর চুন্নু চান তাদের সেই রেকর্ড ভাঙুক,‘ খেলাধূলায় রেকর্ড গড়বে ভাঙবে এটাই মজা। বিশেষ করে ফুটবলে গোলের রেকর্ড হবে। আমি চাই আমার পরবর্তী প্রজন্মরা আজ গোল করে আফগানিস্তানের বিরুদ্ধে জিতে দেশবাসীকে আনন্দের উপলক্ষ্য এনে দিক’। সেটা মনে কামনা করলেও বাস্তবতা কঠিন সেটাও জানেন, ‘আমাদের সময় অনেক ফুটবলার ছিলেন যারা দক্ষিণ এশিয়ান মানের তো বটেই। এশিয়ান মানেরও কাছাকাছি। এখনকার ফুটবলারদের সম্মান ও শ্রদ্ধা রেখেই বলব, কোয়ালিটি ও স্কিলফুল ফুটবলারের সংখ্যা কম। ফুটবলে জিততে বা ভালো ফলাফল করতে স্কিলফুল ফুটবলারের বিকল্প নেই।’

আশরাফ উদ্দিন আহমেদ চুন্নু জাতীয় দলের সর্বোচ্চ গোল (১৭) করেছেন। বাংলাদেশের হয়ে প্রথম আন্তর্জাতিক হ্যাটট্রিক সহ অনেক রেকর্ডের অধিকারী। দেশের ফুটবলের এই জীবন্ত কিংবদন্তি শুভেচ্ছা জানিয়েছেন জামাল ভূঁইয়াদের।

এজেড/এটি