নকআউট গোলখরা কাটাতে পারবেন মেসি?
লিওনেল মেসি/ফাইল ছবি
দল হেরে গেছে। বিদায় নিয়েছে টুর্নামেন্ট থেকে। লিওনেল মেসি একপাশে অপাঙক্তেয় হয়ে আছেন, চুলকাচ্ছেন গাল। এ দৃশ্যটা ঠিক কতবার দেখেছেন আপনি?
প্রতিবার দল না হারলেও, নকআউটে মেসির বিবর্ণ পারফর্ম্যান্স যেন খুব পরিচিত একটা দৃশ্যই। দেশের জার্সি গায়ে লিওনেল মেসির গোল ৭৫টা। ১৬ বছরের ক্যারিয়ারে এ সংখ্যার মাত্র চারটা এসেছে বড় টুর্নামেন্টের নকআউটে!
বিজ্ঞাপন
২০০৬ থেকে এখন পর্যন্ত মেসি বিশ্বকাপ ও কোপা আমেরিকা মিলিয়ে আন্তর্জাতিক টুর্নামেন্ট খেলেছেন ৯টি। চলতি কোপা আমেরিকা তার দশম আন্তর্জাতিক প্রতিযোগিতা। নয় টুর্নামেন্টে সব মিলিয়ে ছয় বারের ব্যালন ডি’অর বিজয়ী খেলেছেন ২০টি ম্যাচ। তাতে গোল মাত্র ৪ টি!
চারটা গোলের দুটো আবার এসেছে সেই ১৪ বছর আগে। ২০০৭ কোপা আমেরিকায় যেবার হুয়ান রোমান রিকেলমের সঙ্গে তার জুটি জমে গিয়েছিল দারুণভাবেই, সে আসরে। সেবার কোয়ার্টার ফাইনালে পেরুর বিপক্ষে ৪-০ গোলে জেতা ম্যাচে করেছিলেন একটি গোল। পরের ম্যাচে তিনি মেক্সিকোর বিপক্ষে করেছিলেন আরেকটি। ৩-০ গোলে জিতে সেদিন আর্জেন্টিনা চলে গিয়েছিল কোপা আমেরিকার ফাইনালে।
পরবর্তী নকআউট গোলটার জন্য মেসিকে অপেক্ষা করতে হয়েছে প্রায় নয় বছর। ২০১৬ সালে ভেনেজুয়েলার বিপক্ষে। সে ম্যাচটা আর্জেন্টিনা জিতেছিল ৪-১ গোলে। এর পরের ম্যাচে যুক্তরাষ্ট্রের বিপক্ষে গোলটা তাকে এনে বসিয়েছিল আর্জেন্টাইন সর্বোচ্চ গোলদাতার আসনে, দারুণ সে ফ্রি কিকে গ্যাব্রিয়েল বাতিস্তুতাকে ছাড়িয়ে গিয়েছিলেন তিনি।
বিজ্ঞাপন
সেই শেষ। এরপর কেটে গেছে পাঁচ বছর। এ সময়ে আর্জেন্টাইন অধিনায়ক খেলেছেন আরও চার ম্যাচ। গোল করিয়েছেন বটে, কিন্তু গোলের দেখা পাননি মেসি।
এত বেশি কোপা আমেরিকার আলোচনা দেখে ভাবছেন পরিসংখ্যানটা শুধুমাত্র দক্ষিণ আমেরিকার শ্রেষ্ঠত্বে আসরেরই? বিষয়টা মোটেও তেমন নয়, এ পরিসংখ্যানে ধর্তব্যে আনা হয়েছে বিশ্বকাপের পারফর্ম্যান্সও। বিশ্বকাপের কথা আসবে কী করে, মেসি যে এখনো বিশ্বকাপ নকআউটে গোলই করতে পারেননি! ২০২২ বিশ্বকাপে যদি মেসি খেলেন, আর সেখানে যদি আর্জেন্টিনা উঠে যায় নকআউটে তাহলেই কেবল এ খরা কাটানোর সুযোগ পাবেন তিনি। সেটা পাবেন কিনা, পেলেও সেটা কাজে লাগাতে পারবেন কিনা, সে প্রশ্নগুলোর উত্তরের জন্য অপেক্ষা করতে হবে আরও দেড় বছর।
তবে কোপা আমেরিকায় পরিসংখ্যানটাকে ভদ্রস্থ করার সুযোগ পাচ্ছেন রোববার সকালে। প্রতিযোগিতার শেষ আটে যখন তার দল সেমিফাইনালে ওঠার জন্য লড়বে ইকুয়েডরের বিপক্ষে। চার বছর আগে এই ইকুয়েডরের বিপক্ষেই দারুণ এক হ্যাটট্রিকে দলকে শেষ মুহূর্তে নিয়ে গিয়েছিলেন বিশ্বকাপে। তার পুনরাবৃত্তি না হোক, মেসি কাছাকাছি কিছু করলেও তো দল বর্তে যায়, নিজের নকআউট পরিসংখ্যানটাকেও পারেন আরেকটু ভদ্রস্থ করে তুলতে। এবারের সুযোগটা মেসি কাজে লাগাতে পারবেন তো?
এনইউ