এএফসি কাপ খেলা হচ্ছে না কিংসলের
এলিটা কিংসলে/ফাইল ছবি
বসুন্ধরা কিংসের সঙ্গে মালদ্বীপ গেলেও এএফসি কাপের গ্রুপ পর্ব খেলা হচ্ছে না নাইজেরিয়ান থেকে বাংলাদেশি বনে যাওয়া এলিটা কিংসলের। এএফসি কাপে রেজিষ্ট্রেশন সময়সীমা অতিক্রম হয়ে যাওয়ায় কিংসলেকে এএফসি কাপের গ্রুপ পর্বে খেলার অনুমতি দেয়নি এএফসির লিগ্যাল বিভাগ। নাইজেরিয়ান থেকে বাংলাদেশি হওয়ায় কিংসলের বাংলাদেশের ক্লাব বসুন্ধরা কিংসের হয়ে আন্তর্জাতিক ম্যাচে বাংলাদেশি হয়ে খেলতে প্রয়োজন ছিল ফিফা-এএফসির অনুমতি।
বাফুফে ও বসুন্ধরা কিংস কিংসলের ফিফার অনুমতি নিয়ে কাজ করছিল প্রায় এক মাস । বিভিন্ন চিঠি চালাচালির পর ফিফার সর্বশেষ অবস্থান ছিল গত পাঁচ বছর কিংসলের বাংলাদেশের অবস্থান ও গমনাগমন নিয়ে ইমিগ্রেশনের রিপোর্ট। সরকারের সংস্থার এই রিপোর্ট সংগ্রহের কাজও চলছে। বসুন্ধরা কিংসের এএফসি কাপের প্রথম ম্যাচ ১৮ আগস্ট। এএফসির কম্পিটিশন বিভাগ বসুন্ধরা কিংসকে আশ্বস্ত করেছিল ১৭ আগস্টের মধ্যে ফিফার স্বীকৃতি পেলে কিংসলে এএফসি কাপে খেলতে পারবে। হঠাৎ ১২ আগস্ট এএফসি লিগ্যাল বিভাগ কিংসলের বিষয়টি আপাতত নাকচ করে দেয়।
বিজ্ঞাপন
১১ আগস্ট ছিল এএফসি কাপের রেজিষ্ট্রেশনের সময়সীমা। ১২ আগস্ট এএফসির লিগ্যাল বিভাগ বসুন্ধরা কিংসকে জানিয়ে দেয় এএফসি কাপের গ্রুপ পর্বে এলিটা কিংসলে খেলতে পারবেন না। বসুন্ধরা কিংস যদি এই পর্বে চ্যাম্পিয়ন হয়ে জোনাল সেমিফাইনালে উঠে সেক্ষেত্রে ফিফার অনুমতি পত্র থাকলে সেই পর্বে খেলতে পারবেন কিংসলে।
বসুন্ধরা কিংসের মিডিয়া ম্যানেজার আহমেদ শায়েক মালে থেকে জানান, 'আমরা আশাবাদী ছিলাম এই পর্বে কিংসলে খেলতে পারবে। কার্যক্রম সেই গতিতে এগুচ্ছিল। লিগ্যাল বিভাগ আকস্মিকভাবে জানায় এই পর্বে কিংসলে খেলতে পারবে না। লিগ্যাল বিভাগে বিষয়টি যাওয়ায় এখন পরের পর্বের রেজিষ্ট্রেশনের জন্য অপেক্ষা করতে হবে।'
বিজ্ঞাপন
বাংলাদেশ জাতীয় ফুটবল দলে খেলার স্বপ্নে নিজ দেশের নাগরিকত্ব ত্যাগ করে বৈবাহিক সূত্রে বাংলাদেশি হয়েছেন এলিটা কিংসলে। বাংলাদেশের নাগরিকত্ব সনদ পাওয়ার পর থেকে কিংসলের বিড়ম্বনা শুরু। লকডাউনের জন্য জাতীয় পরিচয় করতে বিলম্ব হয়। জাতীয় পরিচয় না থাকায় প্রিমিয়ার ফুটবল লিগের দ্বিতীয় লেগে শুরুতে খেলতে পারেননি। জাতীয় পরিচয়পত্র না থাকায় পাসপোর্টও হচ্ছিল না। লকডাউন শিথিল অবস্থায় জরুরি ভিত্তিতে পাসপোর্ট ও জাতীয় পরিচয়পত্র হয়। বাংলাদেশ প্রিমিয়ার লিগে কিংসের হয়ে খেলা শুরু করেন।
ঘরোয়া লিগ খেললেও আন্তর্জাতিক ম্যাচ খেলার জন্য প্রয়োজন ফিফা-এএফসির অনুমতি। ত্রিশ উধ্ব বয়স হওয়ায় ফিফা সর্বশেষ পাঁচ বছর কিংসলের অবস্থানকে সর্বোচ্চ গুরুত্ব দিয়ে দেখছে। বৈবাহিক সুত্রে কিংসলে বাংলাদেশের নাগরিকত্ব পেলেও ফিফার কাছে এটি তেমন গুরুত্ব বহন করছে না। কিংসলের বাবা-মা, দাদার পুর্বপুরুষের কারো বাংলাদেশের সাথে কোনো সম্পৃক্ততা নেই। এজন্য ফিফা সর্বশেষ পাঁচ বছরের অবস্থান এবং গমনাগমনকে বিবেচনা করবে। পাঁচ বছরের মধ্যে কতবার সে বাংলাদেশের বাইরে গেছে, কোন দেশে কত দিন কি কারণে ছিল এ সব কিছুর ব্যাখ্যা সরকারের ইমিগ্রেশন বিভাগের চিঠির সঙ্গে ফুটবল ফেডারেশনকে উল্লেখ করতে হবে।
পাশাপাশি বাংলাদেশ গত পাঁচ বছরের মৌসুমের মেয়াদকাল ও ফিক্সচার সংযুক্ত করতে হবে। এই কাগজপত্র দেয়ার পর বাফুফেকে ঘোষণা দিতে হবে সকল তথ্যাদি সঠিক ও ভুল থাকলে দায়ভার বহন করতে হবে। তখন ফিফা সব কিছু পর্যালোচনা করে স্বীকৃতি দেবে।
১২ আগস্ট সন্ধ্যায় এএফসির লিগ্যাল বিভাগের ভাষ্য জেনেছিল বসুন্ধরা কিংস। এরপরও মধ্যরাতে ফ্লাইটে কিংসলেকে নিয়ে রওনা হয়েছে কিংস। যাতে কিংসলে মানসিকভাবে ভেঙে না পড়েন। এক দুই সপ্তাহের মধ্যে বাফুফে ফিফার অনুমতি সংগ্রহ করতে পারলে তখন জাতীয় দলের হয়েও খেলার সম্ভাবনা থাকবে কিংসলের। সামনে কিরগিজস্তান সফর,সাফ চ্যাম্পিয়নশিপে জাতীয় দলের ব্রিটিশ কোচ কিংসলেকে ডাকতেও পারেন জাতীয় দলে গোলখরা দূর করার জন্য।
এজেড/এটি/এনইউ