ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে গাড়ি এক্সিডেন্টের জেরে ক্যান্সার আক্রান্ত ছেলে ও বাবাকে পিটিয়ে ক্ষতিপূরণের টাকা ছিনিয়ে নেওয়ার অভিযোগ উঠেছে ছাত্রলীগের একদল নেতা-কর্মীর বিরুদ্ধে। এ ঘটনায় শাহবাগ থানায় অভিযোগপত্র দায়ের করেছেন ভুক্তভোগী সেলিম মোল্লা।

মঙ্গলবার রাতের এ ঘটনায় বুধবার বিকালে রাজধানীর শাহবাগ থানায় অভিযোগপত্র জমা দেন ভুক্তভোগী।

অভিযুক্তরা হলেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রলীগের উপ-মানবসম্পদ উন্নয়ন সম্পাদক নাজমুল হাসান রুপু, ফজলুল হক শাখা ছাত্রলীগের কর্মী মো. তারেক। এছাড়া অভিযোগপত্রে অজ্ঞাতনামা আরও ১০/১৫ জনের নাম উল্লেখ করা হয়েছে।

অভিযুক্তরা সবাই ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রলীগের সভাপতি মাজহারুল করিম শয়নের অনুসারী হিসেবে পরিচিত বলে জানা গেছে।

অভিযোগপত্রে ভুক্তভোগী বলেন, মঙ্গলবার রাতে আমি ও আমার স্ত্রী খাদিজা আক্তার এবং ছেলে ক্যানসারের রোগী রুবায়েত হাসান সায়েমসহ আমার প্রাইভেটকারে করে নিজ বাড়িতে ফিরছিলাম। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শহীদুল্ল্যাহ হলের সামনে পৌঁছালে আমি গাড়িটি ব্রেক ফেইল করে। পরে গাড়িটির গতি কমিয়ে রাস্তার পার্শ্বে আইল্যান্ডে ধাক্কা দিয়ে নিয়ন্ত্রণ করি। তখন শহীদুল্ল্যাহ হলের একদল শিক্ষার্থী আমাকে ও আমার স্ত্রী-সন্তানকে গাড়ি থেকে নামিয়ে হত্যার উদ্দেশ্যে রড দিয়ে পেটায় এবং কিলঘুষি মেরে মারাত্মক জখম করে। ১নং আসামি হত্যার উদ্দেশ্যে আমার গলা চেপে ধরে শ্বাসরোধ করার চেষ্টা করে। ২নং আসামি হাতে হেলমেট নিয়ে আমার মাথায় সজোরে আঘাত করে জখম করে। এসময় তারা আমার কাছ থেকে মোট ৩২ হাজার টাকা নিয়ে যায়। এমনকি এই বিষয়ে মামলা করলে আমাকে প্রাণে হত্যার হুমকিও প্রদান করে।'

তবে অভিযোগ অস্বীকার করে নাজমুল হাসান রুপু ঢাকা পোস্টকে বলেন, যে অভিযোগটা দেওয়া হয়েছে সেটা সম্পূর্ণ মিথ্যা। তারা দুইটা রিক্সাকে ধাক্কা দেয়। রিক্সাতে থাকা যাত্রীদের মধ্যে একজনের মাথা ফেটে যায়। দুটি রিক্সায় ক্ষতিগ্রস্থ হয়। এ অবস্থায় তারা চলে যেতে চাইলে হলের ছোট ভাইয়েরা তাদেরকে মারধর করে। তখন আমরা গিয়ে মিমাংসা করে জরিমানা নিয়ে দিয়েছি। এখন শুনছি আমাদের নামে থানায় অভিযোগ দিয়েছে। এভাবে হলে তো মানুষের উপকারও করা যাবে না।

আরেক অভিযুক্ত তারেক ঢাকা পোস্টকে বলেন, গতকাল রাতে প্রাইভেটকারটি দুইটা রিক্সাকে ধাক্কা দেয়। একজনের রিক্সা ভেঙ্গে যায় আরেকজনের পা কেটে গেছে। হলের কিছু ছেলেরা মারতে চাইলে আমরা বাধা দিই। পরে ক্ষতিপূরণ হিসেবে উনারাই টাকাটা দিয়ে গেছে। আর আজ ঘুম থেকে উঠে শুনি, আমাদের নামে অভিযোগ দিয়েছে যে আমরা উনাদের থেকে ছিনতাই করে টাকা পয়সা রেখে দিয়েছি। যা সম্পূর্ণ মিথ্যা।

এ বিষয়ে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রলীগের সভাপতি মাজহারুল করিম শয়ন ঢাকা পোস্টকে বলেন, যারা এসব ছুরি ছিনতাইয়ের সাথে জড়িত তাদের বিরুদ্ধে জিরো টলারেন্স দেখানো হবে। আমরা বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন ও হল প্রশাসনকে বলব যেন দ্রুত সময়ের মধ্যে তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়।

শাহবাগ থানার ওসি (তদন্ত) মাহফুজুর রহমান ভুঁইয়া বলেন, আমরা অভিযোগপত্র পেয়েছি। তদন্ত সাপেক্ষে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে। তারা যেই হোক না কেন আইনের ঊর্ধ্বে কেউ নয়। বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর এবং ওসি মহোদয়ের সাথে কথা বলার পর আমরা মামলা নেব।

এইচআর/এমজে